|
|
|
|
গভীর উদ্বেগে কাছাড়ে বন্ধ চা বাগানের কর্মীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলচর |
অক্টোবর মাস থেকে লক আউট চলছে কাছাড়ের ভুবনভ্যালি চা বাগানে। বেশ কয়েক দফা বৈঠকের পরেও চালু হয়নি বাগানের কাজকর্ম। অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে শ্রমিকদের। ইতিমধ্যেই ৯ জনের মৃত্যু ঘটেছে বলে অভিযোগ। ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের কাছে সময় চেয়ে নিয়েছেন মালিকপক্ষ। কিন্তু হতাশ শ্রমিকরা আর মালিকদের উপর ভরসা রাখতে পারছেন না। আপাতত তাঁরা গভীর উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন।
গত মাসের তৃতীয় সপ্তাহে জেলা প্রশাসন আয়োজিত ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বাগান পঞ্চায়েতের সভাপতি-সম্পাদক অভিযোগ করেছিলেন, না খেতে পেয়ে বাগানে মোট ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা প্রশাসন এবং মালিকপক্ষ এই অভিযোগ মানতে চাননি। ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা এবং অখিল ভারতীয় চা মজদুর সঙ্ঘের নেতারা পৃথক ভাবে বাগান পরিদর্শন করে এসে জানান, অবস্থা খুবই খারাপ। অপুষ্টিজনিত রোগে পক্ষকালের মধ্যে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে কার্যত বিনা চিকিৎসায়।
ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে স্থির হয়েছিল, ৩০ জানুয়ারির মধ্যে বাগান খোলা হবে। তার আগে বকেয়া মজুরির ৫০ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়া হবে। দেওয়া হবে প্রভিডেন্ট ফান্ডের বকেয়া অর্থের পঞ্চাশ শতাংশও। শ্রমিক নেতাদের অভিযোগ, এর কোনওটি বাস্তবায়িত না করেই মালিক-প্রতিনিধি এস কৃষ্ণন চলতি মাসের ৭ তারিখ অবধি সময় চেয়ে নেন।
বরাক চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহকারী সাধারণ সম্পাদক দীননাথ বারই জানান, তাঁরা পরিচালন সমিতি গঠন করে বাগান চালানোর পক্ষে। রাজ্য শ্রম কমিশনারও এ প্রস্তাবে অনুমোদন জানিয়েছেন। তবু ৫ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য ইউনিয়নের বৈঠক ডাকা হয়েছে। মালিকপক্ষ আদৌ কতটা আন্তরিক, তা খতিয়ে দেখা হবে। কিন্তু বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন অখিল ভারতীয় চা মজদুর সংঘের রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক দীনেশ নায়েক ও কোষাধ্যক্ষ রুহেল চরাই বাগান ঘুরে এসে বলেন, মালিক পক্ষকে কাজ শুরু করতে বাধ্য করা উচিত জেলা প্রশাসনের। পরিচালন সমিতি গঠন করলে বকেয়া অর্থ আর পাওয়ার আশা থাকবে না। প্রভিডেন্ট ফান্ড নিয়েও অনিশ্চয়তা বাড়বে।
দীনেশবাবুরা জানান, ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পর বাগানের ডিসপেন্সারিটি খোলা হয়েছে বটে, কিন্তু সেখানে না আছে ডাক্তার, না ওষুধ। তাঁদের কথায়, এতদিন কাছাকাছি এলাকায় খেতের কাজ কিছুটা মিলছিল বলে বহু শ্রমিক পরিবার টিকে যায়। কিন্তু এখন ফসল তোলা শেষ। ফলে শীঘ্রই বাগান খোলা না হলে ভুবনভ্যালি চা বাগানের আরও অনেকেই না খেয়ে মারা যাবেন। জেলাশাসক হরেন্দ্রকুমার দেবমহন্ত অবশ্য আশাবাদী, ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাগান খোলা হবে আর তখন সব সমস্যা মিটে যাবে। |
|
|
|
|
|