|
|
|
|
মহেন্দ্রর মৃত্যুদণ্ড বহাল, ফাঁসি দিতে আসবেন বাবু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
যাবজ্জীবনের আবেদন নাকচ করে মহেন্দ্রনাথ দাশের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রাখল গৌহাটি হাইকোর্ট। তাই, ২১ বছর পরে ফের অসমে আসছেন উত্তরপ্রদেশের ফাঁসুড়ে বাবু আহমেদ।
১৯৯৬ সালের ২৪ এপ্রিল প্রকাশ্য দিবালোকে ফ্যান্সি বাজারে হরকান্ত দাস নামে এক ব্যক্তির গলা কেটে ফেলেন মহেন্দ্র দাশ। তারপর রক্তমাখা দা ও হরকান্তবাবুর ছিন্ন মুণ্ড হাতে নিয়ে তিনি থানায় হাজির হন। এ ঘটনায় শিহরিত হয়ে ওঠেন গুয়াহাটির বাসিন্দারা। ১৯৯৭ সালে দায়রা আদালত হত্যাপরাধে মহেন্দ্রকে ফাঁসির আদেশ দেয়। ওই আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে যায় মহেন্দ্রর পরিবার। কিন্তু ১৯৯৮ সালে গৌহাটি হাইকোর্ট ও ১৯৯৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের রায়ই বহাল রাখে।
এর পর মহেন্দ্রর পরিবার রাষ্ট্রপতির শরণাপন্ন হন। ২০০৫ সালে রাষ্ট্রপতির কাছে ছেলের প্রাণভিক্ষার আবেদন জানান মা কুসুমবালা দেবী। ২০১১ সালের ২৭ মে রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল মহেন্দ্রনাথের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেন।
প্রাণভিক্ষার আবেদনে সাড়া দিতে কেন দেরি হল তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করে মহেন্দ্রনাথের পরিবার। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই গৌহাটি হাইকোর্ট রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কাছে জানতে চায়, কেন মহেন্দ্রনাথের প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে রাষ্ট্রপতি আট বছর সময় নিয়েছেন? সেই পর্ব মেটার পরে ফের মহেন্দ্রবাবুর পরিবার হাইকোর্টের রিট আবেদন দাখিল করে জানান, ইতিমধ্যেই যাবজ্জীবনের মেয়াদ জেলে কাটিয়ে ফেলেছেন তিনি। মহেন্দ্রবাবুর আইনজীরী দাবি করেন, একই অপরাধে, দুইবার সাজা হয় না। তাই, মহেন্দ্রকে মুক্তি দেওয়া হোক। ২৪ জানুয়ারি অবধি শুনানি চলে। আজ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ফাঁসির পক্ষেই রায় দেয়।
অসমে শেষবার ফাঁসি হয়েছিল যোরহাট কেন্দ্রীয় কারাগারে। ১৯৮৯ সালের ২০ নভেম্বর তিনসুকিয়ার এক ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তানকে হত্যার অপরাধে ফাঁসি হয় হেনরি রবার্টের। এরপর, ১৯৯০ সালের জুলাই মাসে ছয়জনের হত্যার দায়ে দণ্ডিত কানপাই বুঢ়াগোহাঁইয়ের ফাঁসি হয়। দু’বারই উত্তরপ্রদেশ থেকে ফাঁসুড়ে বাবু আহমেদকে ফাঁসি দেওয়ানোর জন্য আনা হয়েছিল। মহেন্দ্রনাথের ফাঁসির জন্য গত বছরই ফের বাবুর খোঁজে কারা বিভাগের অফিসারেরা উত্তরপ্রদেশ যান। জানা গিয়েছে, ফাঁসি দিতে বাবুও আসতে রাজি।
মেরঠের কাল্লু ও তাঁর ছেলে মামু এবং পশ্চিমবঙ্গের নাটা মল্লিক মারা যাওয়ার পরে বর্ষীয়ান বাবুই আপাতত দেশের একমাত্র ফাঁসুড়ে। ইন্দিরা গাঁধীর হত্যাকারী সতবন্ত সিংহ ও কেহর সিংহের ফাঁসিও দিয়েছিলেন বাবু ও কাল্লু। নাটা মল্লিক শেষবার ২০০৪ সালে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে ফাঁসি দেন। তবে, বাবু অসমে ফের ফাঁসি দিতে আসতে রাজি হলেও বাবুর দুই ছেলে বাবার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। তাঁরা ফাঁসুড়ের বৃত্তি গ্রহণে রাজি নন। |
|
|
|
|
|