গুজরাত দাঙ্গা
তদন্ত কমিশনকে নির্দেশ নয়, রায়ে আশ্বস্ত মোদী
গুজরাত দাঙ্গার তদন্তের ক্ষেত্রে আরও এক বার ‘স্বস্তি’ পেলেন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার গুজরাত হাইকোর্ট জানিয়েছে, মোদীকে জেরা করার জন্য সমন পাঠাতে নানাবতী কমিশনকে তারা কোনও নির্দেশ দেবে না। দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে কংগ্রেস যখন কোণঠাসা, তখন পাঁচ রাজ্যে নির্বাচনের আগে হাইকোর্টের এই রায় বিজেপিকে অনেকটাই চিন্তামুক্ত রাখছে। গুজরাতের বিজেপি নেতারা ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করে দিয়েছেন, দাঙ্গা-মামলায় মোদীকে জড়িয়ে তাঁর সুশাসনের উপর থেকে লোকের দৃষ্টি সরানোর চেষ্টা হচ্ছিল। তা ব্যর্থ হয়েছে।
এর আগে গুলবার্গ সোসাইটি হত্যাকাণ্ড মামলাতেও সুপ্রিম কোর্টের রায় আশ্বস্ত করেছিল গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীকে। ওই ঘটনায় মোদীর বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার যে অভিযোগ উঠেছিল, সে সম্পর্কে কোনও রায় দিতে চায়নি সুপ্রিম কোর্ট।
এ দিনের রায়ের পরে গোটা বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন বলে সরাসরি বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণের রাস্তায় হাঁটতে চায়নি কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেন, “এত সহজে গুজরাত দাঙ্গার ছাপ মোদীর গা থেকে মুছে যাবে না। বিজেপির এতে উল্লাসিত হওয়ার কিছু নেই।” কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, এই সিদ্ধান্তের অর্থ এই নয় যে গুজরাত দাঙ্গার ব্যাপারে মোদী সম্পূর্ণ ছাড় পেয়ে গেলেন। আর পরোক্ষে কংগ্রেসের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিজেপি। দলের নেতা বলবীর পুঞ্জ বলেন, “বিভিন্ন মহল থেকে ভুূয়ো প্রমাণ আদালতের সামনে পেশ করে নরেন্দ্র মোদীর ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তা ব্যর্থ হয়েছে।” সাত পর্বের উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী প্রচারে যাবেন কি না, তা নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে। দলীয় সূত্রের খবর, আজকের রায়কে হাতিয়ার করে এখন বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ মোদীকে ওই রাজ্যে প্রচারে পাঠাতে সক্রিয় হয়েছে।
গুজরাত দাঙ্গার তদন্তকারী নানাবতী কমিশন যাতে মোদীকে জেরা করে, সে জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জন সংঘর্ষ মঞ্চ। সংস্থাটি দাঙ্গায় দুর্গতদের হয়ে কাজ করে। এ দিন হাইকোর্টের বিচারপতি আকিল কুরেশি এবং সোনিয়া গোকানির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, দাঙ্গার তদন্তে মুখ্যমন্ত্রী বা অন্য কাউকে সমন পাঠানোর বিশেষ এক্তিয়ার নানাবতী কমিশনেরই রয়েছে। তা ছাড়া ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আবেদনে দাঙ্গা সংক্রান্ত এমন কোনও বিশেষ তথ্যও নেই, যার ভিত্তিতে এখনই নরেন্দ্র মোদীকে জেরা করা দরকার। গুজরাত সরকারের হয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল কমল ত্রিবেদী সওয়াল করেছিলেন, তদন্ত কমিশনই ঠিক করুক, কাকে জেরা করা হবে। এ ব্যাপারে তৃতীয় কোনও পক্ষ আইনত কোনও দাবি জানাতে পারে না। বিচারপতিরা সেই বক্তব্য মেনে নেন।
এর আগে নানাবতী কমিশনের কাছেই মোদীকে জেরা করার আবেদন জানিয়েছিল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে কমিশন ওই আবেদন খারিজ করে দিয়ে জানায়, গোধরা-দাঙ্গার পিছনে ষড়যন্ত্র থাকলেও তাতে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ মেলেনি। যদিও জন সংঘর্ষ মঞ্চের দাবি, ২০০২-এর দাঙ্গা নিয়ে এমন অনেক প্রশ্ন রয়েছে যার উত্তর একমাত্র মোদীই দিতে পারেন। এ দিনও মঞ্চের তরফে আইনজীবী মুকুল সিংহ জানান, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানানো হবে। ২০১০ সালে মঞ্চের আবেদনের প্রেক্ষিতে গুজরাত হাইকোর্ট জানতে চায়, মোদীকে সমন পাঠানোর ব্যাপারে নানাবতী কমিশন কী ভাবছে। ওই বছরেরই অগস্টে কমিশন হাইকোর্টকে জানায়, তাদের কাছে দাঙ্গা সংক্রান্ত যা তথ্য রয়েছে তার উপর ভিত্তি করে মোদীকে সমন পাঠানো সম্ভব নয়। তবে পরবর্তী কালে যদি নতুন কোনও নথি দেখে কমিশনের মনে হয়, মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষ্য প্রয়োজন, সে ক্ষেত্রে মোদীকেও সমন পাঠানো হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.