বিমান ঝাড়পোঁছ, মালপত্র ওঠানো-নামানোর মতো ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং’-এর কাজ কারা করবে, সমস্যা মূলত তা নিয়েই। আর তার জেরে আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থার উড়ান চলবে কি না, সেটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ওই তিনটি বিমান সংস্থা হল জিএমজি, ইউনাইটেড এবং ড্রুক। তারা কলকাতা থেকে যথাক্রমে ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং ভুটানের পারোয় নিয়মিত উড়ান চালায়। এত দিন বাইরের যে-সব সংস্থা তাদের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ করছিল, কেন্দ্রের নতুন নিয়ম অনুযায়ী বুধবারের পর থেকে তারা আর তা করতে পারবে না। অথচ নতুন যে-সংস্থার গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ করার কথা, তাদের সঙ্গে ওই তিনটি বিমান সংস্থা এখনও কোনও চুক্তি করেনি। জট তা নিয়েই। ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং’ বলতে প্রধানত বিমান পরিষ্কার করা, বিমানে সিঁড়ি লাগানো, যাত্রীদের মালপত্র নামানো-ওঠানোর কাজ বোঝায়। এয়ার ইন্ডিয়ার মাধ্যমে ওই কাজ করা যায়। তা ছাড়া কেন্দ্রের নিয়ম অনুযায়ী এ বার কোনও বিমানবন্দরে সব বিমান সংস্থাকেই গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ করাতে হবে একটি সংস্থাকে দিয়েই। কলকাতার ক্ষেত্রে সেই বরাত পেয়েছে ‘ভদ্র ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি সংস্থা। কিন্তু অভ্যন্তরীণ উড়ানের ক্ষেত্রে ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং’-এর কাজ ভদ্র ইন্টারন্যাশনাল করবে কি না, তা এখন আদালতের বিচারাধীন। কারণ, অভ্যন্তরীণ বিমান সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেছে।
কলকাতার বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ করায় এয়ার ইন্ডিয়াকে দিয়ে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী ভদ্র ইন্টারন্যাশনাল ছাড়া একমাত্র এয়ার ইন্ডিয়াই পারবে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ করতে। এত দিন যে-তিনটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বাইরের সংস্থাকে দিয়ে ওই কাজ করিয়ে আসছে, বুধবার থেকে তাদের বলা হয়েছে, কাজটা করাতে হবে ভদ্র ইন্টারন্যাশনালকে দিয়েই। কিন্তু বুধবার পর্যন্ত ওই তিন সংস্থার সঙ্গে তাদের কোনও চুক্তি হয়নি বলে ভদ্র ইন্টারন্যাশনালের তরফে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থাগুলির বক্তব্য, সিদ্ধান্ত যা নেওয়ার, সদর দফতর থেকেই তা নেওয়া হবে।
কলকাতা বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড ওয়ার্কসমেন ইউনিয়নের সম্পাদক স্বপন গুপ্তের অভিযোগ, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে বহু কর্মী বেকার হয়ে পড়বেন। তিনি বলেন, “যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে কলকাতায় গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ করছেন, তাঁদের চাকরি দেবে বলে ভদ্র ইন্টারন্যাশনাল কথা দিয়েছিল। কিন্তু এখন এই কর্মীদের নিতে চাইছে না। এই অবস্থায় এঁরা যাবেন কোথায়?”
কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা বি পি শর্মা এ দিন বলেন, “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করতে বলা হয়েছে ওই তিন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে। তত দিন পর্যন্ত পুরনো কর্মীদের দিয়েই যাতে কাজ করানো যায়, সেই চেষ্টা চালানো হচ্ছে।” |