রাস্তা সারাই ও সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছিল দুর্গাপুর পুরসভা। পরে এডিডিএ সেই কাজের পরিকল্পনা নিয়েছে শুনে তারা সরে যায়। বিধাননগরের সেক্টর ২-সি এলাকার সেই ইমন কল্যাণ সরণির সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ আপাতত বিশ বাঁও জলে।
ঘটনাচক্রে, এই রাস্তার ধারেই বছর তিনেক আগে গড়ে উঠেছে পূর্ব ভারতের অন্যতম উল্লেখযোগ্য সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। বেহাল রাস্তার কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি বিপাকে পড়ছেন এই হাসপাতালে ভর্তি হতে আসা রোগী এবং তাঁদের পরিজনেরাও।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তাটি শুধু মেরামত নয়, চওড়া করার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছিল। সেই মতো কাজও শুরু হয়। কিন্তু দু’পাশে প্রয়োজনীয় জায়গা না মেলায় কাজ এগোচ্ছিল না। মেয়র পারিষদ (পূর্ত) প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাস্তা চওড়া করার জন্য জায়গার অভাব হওয়ায় কাজ চলছিল ঢিমেতালে।” তাঁর মতে, পুরসভার পক্ষে ওই বাড়তি জায়গা জোগাড় করার অসুবিধা ছিল। তাই এডিডিএ কাজটি করার পরিকল্পনা নিয়েছে জেনেই তাঁরা সরে আসেন। প্রভাতবাবু জানান, সম্প্রসারণের কাজ করার জন্য রাস্তার একপাশ যে ভাবে কাটা হয়েছিল, তা দ্রুত ভরাট করে দেওয়া হবে। তার পরে এডিডিএ কাজ করবে। |
সুরাহা হবে কবে? মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
বিধাননগর ওই রাস্তাটি বস্তুত দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল হয়ে পড়েছিল। এ বার টানা বর্ষণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। রাস্তা জুড়ে তৈরি হয় বড়-বড় খন্দ। তা দিয়েই মিনিবাস চলে। আগে যানবাহনের সংখ্যা কম থাকলেও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে ওঠার পরে গাড়ি ও অ্যাম্বুল্যান্সের দৌলতে ভিড় বেড়ে গিয়েছে বহু গুণ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা সত্ত্বেও রাস্তাটি সারাইয়ে উদ্যোগী হচ্ছে না পুরসভা। যে কোনও সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দা তপন শ্যাম, মীনাক্ষি দেওয়াসিরা। তাঁদের আক্ষেপ, “বহু দিন পরে রাস্তাটির সংস্কার কাজ শুরু হওয়ায় আশা করেছিলাম, এ বারে সমস্যা মিটবে। ঝাঁ চকচকে হয়ে যাবে। কিন্তু হঠাৎই কাজ বন্ধ হয়ে গেল।”
২০০৮ সালে ওই রাস্তার পাশে ‘দ্য মিশন হাসপাতাল’ নামে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালটি গড়ে ওঠে। শুধু এই রাজ্য নয়, ভিন রাজ্য এমনকী পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, নাইজিরিয়া প্রভৃতি দেশ থেকেও রোগীরা এই হাসপাতালে আসেন চিকিৎসার জন্য। হৃদরোগের চিকিৎসা করাতে হুগলির ব্যান্ডেল থেকে মা-কে নিয়ে এসেছেন মনোজ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “মা হার্টের রোগী। হাসপাতালে ঢোকার মুখে বেহাল রাস্তার ঝাঁকুনিতে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।” হাসপাতালের চেয়ারম্যান সত্যজিৎ বসু বলেন, “রাস্তাটির আমূল সংস্কার করা দরকার। তা হলে শুধু সাধারণ মানুষ নয়, হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা রোগী ও তাঁদের আত্মীয় পরিজনেরাও উপকৃত হবেন।” এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস, ওই রাস্তার সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
|