পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে চার জন কংগ্রেস কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার তাদের পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে জামিন মঞ্জুর হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের কাছে কারও নামে অভিযোগ না জানালেও পুরুলিয়া পুরসভার ‘৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপিতা’ ওই ঘটনায় মদত জুগিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। তবে পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপিতাকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি। পুলিশ জানিয়েছে, তাকে পাওয়া যায়নি। আর ওই পুরপিতা তথা জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বিভাসরঞ্জন দাস দাবি করেন, “আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঠিক নয়। আমাদের কর্মীরাও ওই ঘটনার সঙ্গে আদৌ যুক্ত নন। বহিরাগত কিছু লোকজনই ওই ঘটনা ঘটিয়েছে।”
বিনোদ বাউরি নামে এক কিশোরের মৃত্যুকে ঘিরে সোমবার পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর ও চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা ঘটে। পেটে ব্যাথা থাকায় ওই কিশোরকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়েছিল। জরুরি বিভাগে থাকা চিকিৎসক মদন কিস্কু কিশোরটিকে দেখে জানান হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। বিনোদকে নিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন বাড়ির লোকজন। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, বাড়ি নিয়ে আসার পরে বিনোদের হাত নড়েছে। এই দাবি করে ফের হাসপাতালে এসে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালান ওই কিশোরের কিছু আত্মীয় এবং নিমটাঁড় এলাকার কিছু বাসিন্দা। সেই সঙ্গে তাঁরা চিকিৎসক মদন কিস্কুকে শারীরিক নিগ্রহও করেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতেই হাসপাতাল থেকে ধরা হয়েছিল দীনেশ বাউরি, লালু সিংহ, প্রশান্ত জীবন, চৈতন্য গোস্বামী নামে চারজনকে। তাঁরা সকলেই নিমটাঁড় এলাকার বাসিন্দা। দীনেশ মৃত কিশোরের দাদা, লালু তাঁরই আত্মীয় তথা কংগ্রেসের ৫ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্য। বাকি দুজন এলাকায় কংগ্রেসকর্মী হিসেবেই পরিচিত। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের সুপার স্বপন সরকার জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে প্রণীত চিকিৎসাকেন্দ্রে হিংসা ও সম্পত্তি ধ্বংস প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বিভাসরঞ্জনবাবুর দাবি, “আমরা প্রতিরোধ না করলে সোমবার হাসপাতালে আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারত। অথচ চক্রান্ত করে ঘটনার সঙ্গে আমাদের নাম জড়ানো হচ্ছে।” কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতো ওই ঘটনার নিন্দা করে বলেন, “যারাই এই ধরনের কাজ করে থাকুন, অন্যায় করেছেন।” ঘটনার বিষয়ে দলীয় স্তরে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। যদিও তাঁরও দাবি, “বিভাসবাবু ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তাঁর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে।”
|