বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে রোগী মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে সোমবার চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের মারধর করে বহিরাগতেরা। হাসপাতালে ভাঙচুর করা হয়। ওই ঘটনার প্রতিবাদে নিরাপত্তার দাবি তুলে মঙ্গলবার সকাল থেকে কয়েক ঘণ্টার জন্য কর্মবিরতি পালন করলেন চিকিৎসক ও হাসপাতালের অন্য কর্মীরা। পরে হাসপাতালের সুপার ও পুলিশ আধিকারিকদের ‘আশ্বাসে’ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কর্মবিরতির জেরে সকাল ১১টা পর্যন্ত বহির্বিভাগে রোগী দেখা হয়নি। দূর দূরান্ত থেকে যে সব রোগী এসেছিলেন, তাঁদের হেনস্থা হতে হয়। তবে জরুরি বিভাগের পরিষেবা স্বাভাবিকই ছিল।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, সোমবার সরস্বতী পুজোর প্রতিমা বিসর্জন দিতে যাচ্ছিলেন বসিরহাটের ময়লাখোলার গোডাউনপাড়ার বাসিন্দা কার্তিক মণ্ডল। রেললাইন পেরোনোর সময়ে ট্রেন ধাক্কা মারে তাঁকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বছর বাইশের যুবক কার্তিককে আনা হয় বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই মারা যান ওই যুবক। এর পরেই হাসপাতালে তাণ্ডব চালায় মৃতের আত্মীয়-প্রতিবেশীরা। ওই ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যেই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁদের এ দিন বসিরহাট মহকুমা আদালতের বিচারক ১৪ দিন জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
|
হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, “চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। সেই দাবিই জানিয়েছেন তাঁরা। আমরা বিষয়টি দেখছি।” নিগ্রহের ঘটনায় দোষীদের ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’র দাবি জানিয়েছেন তিনি। কার্তিকের মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেন। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা কর্মবিরতি পালন করেছেন বলেও মানতে চাননি তিনি। হাসপাতালের চিকিৎসক অসীমকৃষ্ণ দাস বলেন, “এত বড় হাসপাতালে দু’জন মাত্র পুলিশ কর্মী মোতায়েন থাকেন। তা-ও সাদা পোশাকে। ওঁদের আলাদা করে চেনাও যায় না। আমরা চাই পুলিশ কর্মীর সংখ্যা বাড়ুক।” হাসপাতালে গেট সময় মতো খোলা-বন্ধ করা দরকার বলেও মনে করেন তিনি। হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট দীপ্তনাথ পাল বলেন, “আমরা সমস্ত সংগঠন মিলিত ভাবে প্রতিবাদে সামিল হয়েছি। পোস্টারও সাঁটানো হয়। বেলা ১১টার পর থেকে ওষুধপত্র দেওয়া শুরু হয়।” কারণে-অকারণে হাসপাতালে যে ভাবে হামলা হচ্ছে, তা কী ভাবে সামাল দেওয়া যা, তার সমাধান সূত্র খুঁজতে আজ, বুধবার হাসপাতালে বৈঠকে বসছেন পুলিশ, রোগী কল্যাণ সমিতি ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ দিন যুব কংগ্রেসের বসিরহাট মহকুমা সভাপতি তরুণ ভৌমিকের নেতৃত্বে সংগঠনের কয়েক জন সুপারের সঙ্গে দেখা করেন। তৃণমূলের বক্তব্য, হাসপাতালের কাজকর্ম ভালই চলছে। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীকে হেনস্থা করতে কিছু লোক এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। সুপারের ‘পাশে থাকার’ আশ্বাস দেন তাঁরা। |