ডাক্তার নেই দীর্ঘদিন, বেহাল পড়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র
চিকিৎসক নেই কয়েক বছর ধরেই। নেই পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী। দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল পড়ে থাকা স্বাস্থ্যকেন্দ্র অসামাজিক কাজকর্মের আখড়া হয়ে উঠছে বলেও অভিযোগ বাসিন্দাদের। কুলটির কুমারডিহাতে এমনই হাল স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। পরিষেবা না পেয়ে এলাকার মানুষ বরাকর স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা আসানসোল হাসপাতালে যেতে বাধ্য হন। কবে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সমস্যা মিটবে, জানাতে পারেননি মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিকও।
কুলটি পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কুমারডিহায় এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তৈরি হয় আশির দশকে। সে সময় কাছাকাছি চিকিৎসার সুযোগ মিলত একমাত্র বরাকরের রানিবাংলার সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। রাতবিরেতে চিকিৎসার জন্য প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে সমস্যায় পড়তেন নিয়ামতপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষজনের। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি মেনে স্বাস্থ্য দফতর নিয়ামতপুরে একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় জায়গা নিয়ে। সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে নিয়ামতপুরের রায় পরিবার। নিঃশর্তে জমি দান করেন তাঁরা। পরিবারের সদস্য, বর্তমানে কুলটি পুরসভার উপপ্রধান বাচ্চু রায় জানান, প্রায় তিন একর জায়গা দিয়েছিলেন তাঁরা।
প্রথম কয়েক বছর ভালই চলেছিল স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। এলাকার গরিব মানুষজন চিকিৎসার জন্য আসতেন। পরিষেবাও মিলত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। বর্তমানে ধ্বংসাবশেষের হাল হয়েছে ভবনটির। ভবনের মূল গেটে তালা ঝুলছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য তৈরি আবাসনগুলি দখলদারদের কব্জায় চলে গিয়েছে।
তালাবন্ধ কুলটির কুমারডিহা স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ছবি: শৈলেন সরকার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগেও এখানে এক জন চিকিৎসক ছিলেন। তিনি বরাকর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বদলি হওয়ার পরে তাঁর জায়গায় আর কেউ আসেননি। এলাকার বাসিন্দা বিভা বাউড়ি বলেন, “যখন ডাক্তারবাবু ছিলেন, নিয়মিত চিকিৎসা পেয়েছি। এখন আর পাই না।” স্বাস্থ্যকেন্দ্র সংলগ্ন অঞ্চলের বাসিন্দা ক্ষীরোদ রায় বলেন, “চোখের সামনে থেকেও নেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। অসুখ হলে সেই পাঁচ কিলোমিটার দূরে বরাকরে যেতে হয়, অথবা পকেটের পয়সা খরচ করে চিকিৎসা করাতে হয়।” গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসনগুলি দখল করে বাস করছেন বহিরাগতরা। এমনই এক বাসিন্দা, নিয়ামতপুরের অটোচালক হিরা চৌহান বলেন, “আবাসনগুলি খালি পড়েছিল। চোরেরা দরজা জানালা ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা বাস করায় তবু তো সেগুলি রক্ষা পেয়েছে।”
স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে সব সময়ের জন্য এক জন চিকিৎসক পাঠানোর দাবি তুলেছেন কুলটির উপপ্রধান বাচ্চুবাবু। তিনি বলেন, “রাতবিরেতে প্রসূতিদের নিয়ে ছুটতে হয় বরাকর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা আসানসোল হাসপাতালে। এখানে চিকিৎসক এলে, কয়েকটি শয্যা পাতা হলে সেই অসুবিধা দূর হবে। আমি স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি লিখেছি।”
মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক অরিতা সেন চট্টোরাজ বলেন, “সমস্যার কথা আমি জানি। দফতরের উচ্চ পদস্থদের বিষয়টি জানিয়েছি।” তবে কবে নাগাদ ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সমস্যাগুলির সমাধান হবে, তা নিশ্চিত করে তিনি কিছু জানাতে পারেননি। আসানসোলের মহকুমাশাসক তথা মহকুমা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সন্দীপ দত্তও জানান, স্বাস্থ্য দফতরের কাছে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.