তিন দিন আগেই শিশু চুরির অভিযোগ উঠেছিল। সেই শিশুর এখনও হদিস মেলেনি। তারই মধ্যে ফের এক সদ্যোজাতের মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক তৈরি হল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
মঙ্গলবার বর্ধমানের মেমারির কেন্না গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস সরকার অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়ে রাকিবা বিবির কন্যাসন্তান প্রসব নিয়ে তাঁদের তিন বার নানা রকম তথ্য দেওয়া হয়েছে। শেষে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়। কিন্তু মৃতদেহ দেওয়ার ব্যাপারে ঝামেলা করা হয়। কয়েকটি মৃত সদ্যোজাতের মধ্যে তাঁদের শিশুর দেহ খুঁজে নিতে বলা হয়। প্রসূতির হাতে সাঁটানো কাগজের নম্বরের সঙ্গে শিশুর নম্বর মিলিয়ে দেখতে গেলে আবার কয়েক জন জুনিয়র ডাক্তার বাধা দেন বলে অভিযোগ। আব্দুল কুদ্দুস জানান, সোমবার সকালে রাকিবাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন তাঁরা। সেই রাতেই তাঁকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর অভিযোগ, “মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকেরাই মেয়েকে জানিয়েছিলেন, ৩১ জানুয়ারি প্রসব হবে। কিন্তু এখানে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়ার সময়ে প্রসূতি বিভাগ থেকে জানানো হয়, প্রসবের এখনও সময় হয়নি। তাই শিশুর কিছু হলে হাসপাতাল দায়ী থাকবে না বলে আমাদের থেকে লিখিয়ে নেওয়া হয়।”
অভিযোগে কুদ্দুসের আরও দাবি, মেয়েকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়ার ঘণ্টা দু’য়েক পরে বাসন্তী নামে এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী তাঁদের জানান, প্রসব হয়ে গিয়েছে। বকশিস হিসেবে একশো টাকাও নিয়ে যান। কিন্তু কিছু ক্ষণ পরেই ফের ওই কর্মী, এক নার্স ও জুনিয়র ডাক্তার এসে জানান, প্রসূতির গর্ভ থেকে শুধু শিশুটির মাথা বের হয়েছে। তাঁকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। ঘণ্টাখানেক পরে ওই তিন জনই এসে জানান, শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। তবে কখন ও কী ভাবে মৃত্যু হল, তা জানানো হয়নি। কুদ্দুসের অভিযোগ, “আমরা এর পরে লেবার রুমে যাই। সেখানে জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, ‘জন্মের সময়ে কয়েকটি শিশু মারা গিয়েছে। ওখানে আপনাদের বাচ্চাও রয়েছে। খুঁজে নিয়ে চলে যান।’ আমরা মেয়ের হাতে থাকা নম্বর মিলিয়ে শিশু চেনার চেষ্টা করলে ওই জুনিয়র ডাক্তারেরা তাতে বাধা দেন। পরে আবার তাঁরাই শিশুর মৃতদেহ নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু আমরা রাজি হইনি।”
গত শনিবারই এই হাসপাতালে শিশু চুরির অভিযোগের তদন্তে তিন সদস্যের দল গড়েছিলেন সুপার। আজ, বুধবার সে ব্যাপারে রিপোর্ট দেওয়ার কথা। বারবার প্রসূতি বিভাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে কেন? সুপার অসিতবরণ সামন্ত বলেন, “স্বাস্থ্য ভবন থেকে আমাকে মুখ খুলতে বারণ করা হয়েছে। তবে এ দিনের অভিযোগটি গুরুতর। আমরা তদন্ত করব। তবে এই ঘটনায় চিকিৎসক বা নার্সেরা জড়িত নন বলে জেনেছি। অভিযোগ এক জন আয়ার বিরুদ্ধে।” |