মুখ্যমন্ত্রী যা ঘোষণা করেছেন তার উল্টো পথে হাঁটছে শিলিগুড়ি পুরসভা, এই অভিযোগে পুরসভার মাসিক অধিবেশনে সরব হলেন বিরোধী দলনেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম। মঙ্গলবার দুপুরে পুর ভবনে ওই অধিবেশনে নুরুলবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বাসিন্দাদের উপর নতুন করে কর না-চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন। মহানগরীর বাসিন্দাদের জলকর মকুব করেছেন। অথচ শিলিগুড়ি পুরসভা জলকর নিচ্ছে। শুধু তাই নয় বাড়ি বাড়ানোর ক্ষেত্রে আরও ৩ ধরনের ফি বাড়ানো হয়েছে। এতে গরিব মানুষ তো বটেই মধ্যবিত্ত বাসিন্দারা এত টাকা কোথা থেকে দেবেন?” তাঁর দাবি, জলকর এবং বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে নতুন চালু করা ফি প্রত্যাহার করতে হবে।
জলকরের ব্যাপারে মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত অবশ্য নীরব। তবে বাড়ির বানানোর ক্ষেত্রে নতুন ফি প্রত্যাহারের সম্ভাবনা যে নেই তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “রাস্তাঘাট, নর্দমা, পরিকাঠামো তৈরির জন্য বাড়তি ফি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাণিজ্যিক এবং অবাণিজ্যিক নির্মাণ সকলকেই তা দিতে হবে।” পুরসভা সূত্রে খবর, বর্তমানে বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে ৩ ধরনের ফি নেওয়া হয়। এলইউসিসি, সাইট প্ল্যান এবং নকশা অনুমোদনের ফি। এ বার ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেপলমেন্ট’, ১ শতাংশ ‘সেস’, পুরনো ভবন ভাঙা বা নতুন নির্মাণের ক্ষেত্রে আবর্জনা সাফ করতে ফি সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন করে ওই ৩ ধরনের ফি সংগ্রহের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই সরব হন নুরুলবাবুরা। তিনি বলেন, “বসবাসের বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে ৬ দফায় ফি দিলে সাধারণ মানুষ বাড়ি তৈরি করবেন কী ভাবে? গরিব, মধ্যবিত্তদের বিপাকে ফেলার অধিকার পুরবোর্ডের নেই। শিলিগুড়ির মানুষ এটা মেনে নেবেন না।” পাশাপাশি কলকাতায় শিলিগুড়ি পুরসভার অতিথি নিবাসের ভাড়া বৃদ্ধি, সেচপুলের গাড়ি জন্য ফি বৃদ্ধি নিয়ে সরব হয়েছেন তাঁরা। বাম কাউন্সিলর মুকুল সেনগুপ্ত, জয় চক্রবর্তীরা জানান, কলকাতায় নানা কাজে যান শহরের বাসিন্দারা। অল্প খরচে তাঁদের থাকার জন্য ওই ভবন তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে ফি বাড়ানো হবে কেন? গত বছর বাজেট বৈঠকে মেয়র জানিয়েছিলেন কোনও কর চাপানো হবে না। অথচ নতুন ফি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছেন। বাসিন্দারা সবই দেখছেন।” পুর কর্তৃপক্ষ জানান, কলকাতায় যে শিলিগুড়ি ভবন রয়েছে তা নির্মাণের সময় খরচের ৪০ লক্ষ টাকা বকেয়া ফেলে রেখে গিয়েছেন নুরুলবাবুদের বিগত পুর বোর্ড। সেই বকেয়া বিল না মেটানোয় অতিথি নিবাস দেখভালের কাজ সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে না। সেচপুলের গাড়ি কেউ বছরে এক বার, কারও ৩ বছরে একবার দরকার হয়। |