রাজ্য সরকারের সঙ্গে সব রকম ‘সহযোগিতা’ করার জন্য এ বার ‘সমগ্র মুসলিম সম্প্রদায়ে’র প্রতি বার্তা দিল জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে সম্প্রতি জমিয়তের রাজ্য সম্পাদক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী রাজ্য সরকারের পাশে থাকারই ‘আশ্বাস’ দিয়েছিলেন। মেদিনীপুরে মঙ্গলবার এক সমাবেশে গোটা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিই সিদ্দিকুল্লার আবেদন, তাঁরা যেন রাজ্য সরকারের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। জমিয়তের সর্বভারতীয় সভাপতি কারি ওসমানও এ দিনের সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। মমতার সরকার প্রতিশ্রুতি পালন করছে না বলে সংখ্যালঘুদের একাংশ যখন অভিযোগে সরব, সেই সময়েই এ দিনের সমাবেশের ওই ‘বার্তা’ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক শিবিরে।
সমাবেশে সিদ্দিকুল্লার বক্তব্য, “১০ দফা দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। উনি আমাদের কথা মন দিয়ে শুনেছেন। আশ্বাসও দিয়েছেন। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার সংখ্যালঘুদের জন্য যে সব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা সে সবের সঙ্গেই রয়েছি। আপনারাও সঙ্গে থাকুন। ৩৪ বছর ধরে অনেক চোখ রাঙানি সহ্য করেছি! এ বার নতুনদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করতে দিন।” দীর্ঘ দিন ধরেই এ রাজ্যে সংখ্যালঘুরা নানা ভাবে বঞ্চনার শিকার বলে জমিয়তের অভিযোগ। বঞ্চনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সিদ্দিকুল্লা বলেন, “এ দেশে আর কত দিন ভাড়াটিয়া সেজে থাকব? এ বার সরকার দায়িত্ব পরায়ণ হয়েছে। আপনারা সাহায্য করুন, নিশ্চয়ই আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম উন্নতির পথে যাবে।” মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁদের ১০ দফা দাবির কথা উল্লেখ করার পাশাপাশিই কোনও রকম সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িয়ে না-পড়ার জন্য সংখ্যালঘুদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন সিদ্দিকুল্লা। তাঁর বক্তব্য, “নিজেদের স্বার্থে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক দলগুলি আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষকে লেঠেল হিসাবে ব্যবহার করেছে। আমরা আর লেঠেল হব না! ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হব। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই আলোচনা করব। শান্তি ও আলোচনার মাধ্যমেই উন্নয়ন সম্ভব।”
রাজ্যে ৬৫০টি ইউনিটে ১৪ লক্ষ, সারা দেশে তাঁদের এক কোটি সমর্থক রয়েছেন বলে জানান সিদ্দিকুল্লাই। সংখ্যালঘুদের মধ্যে ‘ভিত্তিসম্পন্ন’ এমন একটি সংগঠনের রাজ্যের প্রতি ‘সমর্থন-বার্তা’কে স্বাগত জানাচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্বও। পশ্চিম মেদিনীপুরের এক তৃণমূল নেতার মন্তব্য, “আমাদের ৮ মাসের সরকারের বিরুদ্ধে এর মধ্যেই নানা মহল থেকে কুৎসা শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই জমিয়তের সমর্থন অবশ্যই উৎসাহব্যঞ্জক।” প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহেই আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রিত হয়ে একটি কনভেনশনে যোগ দিতে যাওয়ার কথা সিদ্দিকুল্লার। |