আবেদন পত্র জমা হয়ে যাওয়ার পরে শংসাপত্র পেতে প্রাপকের যাতে অযথা হয়রানি না হয়, তাঁরা যাতে তা দ্রুত হাতে পান সে ব্যাপারে সচেষ্ট হলেন রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি-কল্যাণ মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস। সব কিছু ঠিকঠাক চললে ভবিষ্যতে আবেদনপত্র জনা দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই আবেদনকারীর হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া যাবে। অন্তত এমনটাই দাবি করেছেন উপেনবাবু।
মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা ব্লকের হেলেঞ্চা হাইস্কুলের মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপেনবাবু ১০ জনের হাতে তপসিলি জাতি-উপজাতি এবং ওবিসি-র শংসাপত্র তুলে দেন। ব্লক প্রসাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ১০ জন প্রাপক গত ৩০ জানুয়ারি ওই সংক্রান্ত আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলেন। উপেনবাবু বলেন, “তপসিলি জাতি-উপজাতি এবং ওবিসি শংসাপত্রের জন্য আবেদনকারী নির্দিষ্ট আবেদনপত্র বিডিও অফিসে জমা দেওয়ার দু’দিনের মধ্যে যাতে হাতে পান সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাগদা ব্লকে বিষয়টি পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করা হচ্ছে। শংসাপত্র দিতে গিয়ে কী ধরনের সমস্যা হচ্ছে তা দেখা হবে। সব ঠিকঠাক চললে অন্য ব্লকগুলিতেও তা চালু করা হবে।” |
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে বিডিও অফিস থেকে আবেদন পত্র তুলে তা পূরণ করে জমা দিতে হয়। বিডিও অফিস থেকে বিনামূল্যেই এই আবেদন পত্র দেওয়া হয়। আবেদন পত্র জমা দেওয়ার এক মাস বা দু’মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিতে হয়। তার পর শুনানি হয়। নথিপত্রে ত্রুটি থাকলে তা ফের ঠিক করে আনার জন্য আবেদনকারীকে বলা হয়। বিডিও অফিসে নথিপত্র পরীক্ষার পরে তা মহকুমাশাসকের কাছে পাঠানো হয়। তিনি তা পরীক্ষা করে স্বাক্ষর করে দেন। এর পরে বিডিও অপিস থেকে নির্দিষ্ট দিনে আবেদনকারীকে শংসাপত্র সংগ্রেহ করতে হয়। গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হতে মাস তিনেকেরও বেশি সময় লেগে যায়। তার উপর মহকুমাশাসক অন্য কোনও কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লে দীর্ঘসূত্রীতা আরও বেড়ে যায়।
উপেনবাবু জানান, নতুন ব্যবস্থায় আবেদনকারী আবেদন করতে গেলেই তাঁর নথিপত্র খতিয়ে দেখা হবে। তা সঠিক থাকলে তবেই আবেদন পত্র জমা নেওয়া হবে। এর পর ওই কাগজপত্র মহকুমাশাসকের কাছে স্বাক্ষরের জন্য পাঠানো হবে। তাঁর স্বাক্ষরের পরে দু’দিনের মধ্যেই আবেদনকারীর হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হবে। তাঁর অভিযোগ, এই কাজের জন্য বাম সরকারের আমলে প্রচুর সময় লাগত। অনেকের শংসাপত্র পেতে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হত। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, “গত আট মাসে বাগদা ব্লকে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ৫০৩ জনকে। যেখানে তার আগের এক বছরে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছিল মাত্র ৫২৭ জনকে। তবে একই সঙ্গে তিনি জানান, বিডিও অফিসগুলিতে কর্মীর অভাব রয়েছে। শংসাপত্র দেওয়ার কাজ শীঘ্র করতে হলে আরও কর্মীর প্রয়োজন। এই অবস্থায় অবসর নিয়ে ফেলেছেন এমন ৬০০ জনকে রাজ্যের ৩৪১টি ব্লকে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়েছে। |