|
|
|
|
পরপর দু’দিনের সভায় শহর অচল হওয়ার আশঙ্কা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
যুযুধান দুই রাজনৈতিক দলের পিঠোপিঠি সমাবেশ ঘিরে পর পর দু’দিন মেদিনীপুর শহর অচল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শহরবাসীর এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশও। তবে তাদের দাবি, শহরে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকেরা যে সব বাস-লরিতে আসবেন, সেই সব বাস-লরি শহরে ঢুকবে না বলেও আশ্বাস পুলিশের। ধর্মা, আবাসের মতো এলাকায় ওই সব গাড়ি দাঁড় করানো হবে। ইতিমধ্যে সিপিএম ও তৃণমূল, দুই দলের জেলা নেতাদের সঙ্গে এ নিয়ে কথাও বলেছেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দু’দিনই শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা যাতে সচল থাকে সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। পথচারীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে দিকেও নজর রাখা হবে।” পুলিশ সূত্রে খবর, এ জন্য বেশ কয়েক জন পুলিশ অফিসারকে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা সার্বিক ভাবে দেখভাল করবেন একজন ডিএসপি। |
|
মেদিনীপুর শহরে আজ সমাবেশ সিপিএমের। চলছে তারই প্রস্তুতি। |
দলের জেলা সম্মেলন উপলক্ষে আজ, বুধবার দুপুরে মেদিনীপুর শহরের কলেজ-মাঠে প্রকাশ্য সভার আয়োজন করেছে সিপিএম। উপস্থিত থাকবেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু, বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র প্রমুখ। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা বুধবারের সভায় যোগ দেবেন। একই মাঠে কাল, বৃহস্পতিবার প্রকাশ্য সভা করবে তৃণমূল। বিভিন্ন মামলায় জড়িত সিপিএম নেতা-কর্মীদের শাস্তির দাবিতেই এই সভা। সভা থেকে সর্বত্র শান্তি ও উন্নয়ন তরান্বিত করারও ডাক দেওয়া হবে। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, সিপিএম নেতৃত্বকে ‘চাপে’ রাখতেই বুদ্ধদেববাবুর সভার পরের দিনই সভা ডেকেছে তৃণমূল। বুধবারের সভায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ তুলবেন সিপিএম নেতৃত্ব, বৃহস্পতিবারের সভা থেকে সেই সব অভিযোগের জবাব দেওয়া হবে। ওই সভায় উপস্থিত থাকার কথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মুকুল রায়, সাংসদ সুব্রত বক্সী, মন্ত্রী মদন মিত্র, সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীদের। ইতিমধ্যে দু’দলই নিজ নিজ সভার সমর্থনে প্রচার করেছে। কলেজ মাঠে সিপিএমের সভামঞ্চ যেখানে তৈরি হয়েছে, তার কিছু দূরেই তৃণমূলের সভামঞ্চ তৈরি হচ্ছে। মঙ্গলবার সভাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা তৃণমূল সভাপতি দীনেন রায়, কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ, আশিস চক্রবর্তীরা। |
|
পরদিন সভা তৃণমূলের। প্রচারে মঙ্গলবার মিছিল মেদিনীপুর শহরে। |
মেদিনীপুর শহরে এমনিতেই যানজট লেগে থাকে। ট্রাফিক ব্যবস্থা তেমন উন্নত নয় বলেও অভিযোগ। শহরের কেরানিতলা, এলআইসি চক, গোলকুঁয়াচক এলাকায় মাঝেমধ্যেই যানজট দেখা দেয়। তাই, দু’দিন দু’দলের পিঠোপিঠি সমাবেশে শহর অচল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকও মানছেন, “পর পর দু’দিন সমাবেশ রয়েছে। তাই দুর্ভোগ বাড়বেই। এ ক্ষেত্রে আমাদেরও করণীয় কিছু নেই। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দু’দলের কর্মী-সমর্থকেরা আসবেন। এই পরিস্থিতিতে শহরের সর্বত্র যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা অসম্ভব।” তবে পুলিশের দাবি, শহর সচল রাখার চেষ্টা চলছে। কোনও এলাকাতেই যাতে দীর্ঘক্ষণ যানজট না হয়, সে দিকে নজর রাখা হবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণবাবু বলেন, “দু’দিনই শহরে বাড়তি নজরদারি থাকবে। ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজা হচ্ছে।” সিপিএম, তৃণমূল—দু’দলের জেলা নেতৃত্বও এ ক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসনকে ‘সহযোগিতা’র আশ্বাস দিয়েছেন।
|
ছবি দু’টি তুলেছেন সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
|
|
|
|
|