নিজস্ব সংবাদদাতা • চুঁচুড়া |
জামিন পেয়ে মঙ্গলবার হুগলির চুঁচুড়া জেলা সংশোধনাগার থেকে বেরোলেই এক বন্দির উপরে হামলা হতে পারে বলে আগাম খবর ছিল পুলিশের কাছে। এ দিন বিকেল ৫টা নাগাদ সংশোধনাগার চত্বরের সামনে একটি গাড়ির গতিবিধি ‘সন্দেহজনক’ মনে হওয়ায়, সেটিকে ‘সাইড’ করতে বলেন এক কনস্টেবল। আচমকাই গাড়ির ভিতর থেকে চলল গুলি। উড়ে এল বোমা। গুলি এবং বোমায় জখম হয়েও বিশ্বজিৎ দাস নামে চুঁচুড়া থানার ওই কনস্টেবল গাড়ির ভিতর থেকে এক জনকে টেনে নামান। কেড়ে নেন গাড়ির চাবি। পুলিশের তাড়া খেয়ে পালায় গাড়ির বাকি আরোহীরা। পরে ধাওয়া করে আরও তিন জনকে ধরেছে পুলিশ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশেষ বিশ্বাসের নেতৃত্বে পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স রাতেই বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই সংশোধনাগারেই রয়েছে বিচারাধীন বন্দি হিড্ডা। তার বিরুদ্ধে খুন-জখম-তোলাবাজির বহু অভিযোগ আছে। |
আহত কনস্টেবল বিশ্বজিৎ দাস। নিজস্ব চিত্র |
এ দিন সে জামিনে ছাড়া পেতে পারে বলে অনুমান করেছিল, হিড্ডা-বিরোধী দুষ্কৃতীদের একটি গোষ্ঠী। আর সে জন্যই লালা নামে ব্যান্ডেলের আর এক দুষ্কৃতীর দলবল হিড্ডাকে খতম করতে এসেছিল বলে অনুমান পুলিশের। এ দিন অবশ্য হিড্ডার জামিন হয়নি। জেলার পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “জেলের এক বন্দির উপরে হামলা চালাতেই দুষ্কৃতীরা জড়ো হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। এক জন কনস্টেবল ওদের গুলি, বোমায় জখম হয়েও এক জন দুষ্কৃতীকে ধরেছেন। চার জন গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” দুষ্কৃতীদের গাড়ি তিনটি আটক করেছে পুলিশ। সেখান থেকে একটি রিভলভার এবং তিন রাউন্ড কার্তুজ মিলেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ব্যান্ডেল এবং উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর এলাকা থেকে দুষ্কৃতীরা ‘অপারেশন’ চালাতে এসেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। আটক হওয়া গাড়ি তিনটিও ব্যারাকপুরের মোটর ভেহিকলস অফিসে নথিভুক্ত।
চুঁচুড়া শহরের এক প্রান্তে কিছুটা ফাঁকা এলাকায় সংশোধনাগার। সেখানে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা দুপুরের দিকে খেয়াল করেন, তিনটি গাড়িতে করে বেশ কয়েকজন যুবক অনেক ক্ষণ ধরে লাগোয়া এলাকায় ঘোরাফেরা করছে। সতর্ক-বার্তা যায় চুঁচুড়া থানায়। সেখান থেকে তিন জন সাদা পোশাকের পুলিশকর্মী আসেন সংশোধনাগারের সামনে। পুলিশের পোশাকে তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন বিশ্বজিৎবাবু। সন্ধ্যায় তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে ইমামবাড়া হাসপাতালে। এ দিকে, বিশ্বজিতের উপরে হামলা চালিয়ে জনা আটেক দুষ্কৃতী ঊর্ধ্বশ্বাসে পালাতে থাকে। বিশ্বজিতের সঙ্গী পুলিশকর্মীরা তাদের পিছু ধাওয়া করেন। দুষ্কৃতীরা ওলাইচণ্ডীতলার রাস্তা ধরে পালায়। চকবাজারের কাছে এক যুবককে মারধর করে বাইক ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতী দলের দু’জন। ওই যুবকের চিৎকারে ছুটে আসেন বাসিন্দারা। পুলিশও পৌঁছয়। গ্রেফতার করা হয় ওই দু’জনকে। কয়েকজন দুষ্কৃতী ঢুকে পড়ে একটি পাড়ায়। তাদের এক জনকেও পরে ধরেছে পুলিশ। |