মাওবাদী প্রশিক্ষণ শিবির ভাঙল গ্রামবাসীরাই
শেষ পর্যন্ত পুলিশের জন্য অপেক্ষা না করে, স্থানীয় বাসিন্দারাই জ্বালিয়ে দিলেন মাওবাদী প্রশিক্ষণ শিবির। পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করল নকল রাইফেল। নাগাল্যান্ডের রালান এলাকায় আদিবাসী জঙ্গিদের শিবিরে চলা মাওবাদীদের সামরিক মহড়ার খবর মিললেও, শ’তিনেক জঙ্গির একজনেরও সন্ধান পেল না পুলিশ। সন্দেহ করা হচ্ছে, আদিবাসী জঙ্গি সংগঠন ‘আনলা’ অসম সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি করার আগেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মাওবাহিনী নানা এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।
অসমের গোলাঘাট ও নাগাল্যান্ডের ওখা জেলার সীমানায় আদিবাসী ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (আনলা)-র সহায়তায় মাওবাদীরা শিবির গড়েছিল বলে গত বছর অক্টোবর মাসেই গ্রামবাসীরা সেনাবাহিনীকে খবর দেয়। সেনাবাহিনীও তা নিয়ে গোপন রিপোর্ট পাঠায় কেন্দ্রের কাছে। জানা যায়, শিবিরটিতে অন্তত তিনশো মাও-জঙ্গি রয়েছে। প্রতিদিন রাত ২টো থেকে সকাল ৮টা অবধি তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। দিনের বেলা চাষবাষ করে প্রশিক্ষণরত জঙ্গির দল। পুলিশও সব জানত। কিন্তু তার পরেও এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সেনা বা পুলিশ অভিযান চালায়নি। সপ্তাহখানেক আগে স্থানীয় গ্রামবাসীরা পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁরাই ঘাঁটি ভাঙতে যাবেন। অসম সরকারের সঙ্গে আনলা সংঘর্ষবিরতি চুক্তি সই করে অস্ত্র জমা দেওয়ায় সরকারিভাবে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ, সিআরপি বা সেনার পক্ষে অভিযান চালানো সম্ভব ছিল না। ফলে গত কাল রালানের গ্রামবাসীরাই আনলা ঘাঁটিগুলিতে অভিযান চালান।
শিবির থেকে আটক নকল ও আসল বন্দুক। ছবি: উজ্জ্বল দেব
পুলিশ জানায়, অভিযানের সময় শিবিরগুলিতে কোনও জঙ্গি ছিল না। গ্রামবাসীরা সব শিবির পুড়িয়ে দেন। সেখানে ২০০টি নকল রাইফেল ও আনলার ব্যবহার করা কিছু অস্ত্র মিলেছে। এ ছাড়া সামরিক প্রশিক্ষণ ও শারীরিক কসরৎ শেখাবার জন্য কাদার খাত, কাঁটাতারের নালা, দড়ির মই, ছোট ইটের ও মাটির দেওয়াল মিলেছে। পুলিশের অনুমান ২০০ থেকে ৩০০ জঙ্গির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছিল এখানে। গ্রামবাসীদের অভিযান শেষে নাগাল্যান্ডের স্বরাষ্ট্রসচিব চুম্বেম মুরি, বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার রালানথাং য়ানথান, ওখার এসপি, জেলাশাসক, সিআরপিএফ ও আসাম রাইফেল্স-এর বড়কর্তারা ঘটনাস্থলে যান।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ জানিয়েছেন, আদিবাসী জঙ্গিরা কেবল মাওবাদীদের আশ্রয় ও প্রশিক্ষণই দেয়নি, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৫০০০ টাকা ও বাসিন্দাদের থেকে ২০০ টাকা করে চাঁদাও আদায় করছিল। সরকারি কর্তারা এলাকায় একটি জনসভাও করেন। তাঁদের বক্তব্য, অসমের আদিবাসীরা নাগা এলাকায় জঙ্গি ঘাঁটি গড়তে বা এলাকা বিস্তার করতে চাইলে স্থানীয় বাসিন্দারাই যোগ্য জবাব দেবেন। অসম সরকারকে এ নিয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। নিরাপত্তাবাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও তাঁরা অভিযোগ তোলেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.