|
|
|
|
প্রতিরক্ষায় বৃহত্তম অঙ্কের চুক্তি,জিত ফরাসি বিমানের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ভারতের আকাশ রক্ষার দায়িত্ব পেতে চলেছে ‘রাফাল’। ফ্রান্সের দাসো সংস্থার থেকেই ১২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বায়ুসেনা। চার বছর আগের হিসেব অনুযায়ী যার দাম অন্তত ১০৪০ কোটি ডলার। বর্তমান হিসেবে দাম আরও কিছুটা বাড়বে। ভারতের ইতিহাসে এত বড় অঙ্কের প্রতিরক্ষা চুক্তি এর আগে হয়নি।
’৭১-এ পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে ভারতীয় বায়ুসেনার তুরুপের তাস ছিল মিগ যুদ্ধবিমান। ক্রমশ তার আয়ু ফুরিয়ে আসছে। তার বদলে এসেছে রাশিয়ার সুখোই যুদ্ধবিমান। কিন্তু সুখোই-এর থেকেও অত্যাধুনিক বিমান হল সব থেকে হাল্কা, ‘লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট’ (এলসিএ)। ভারতে এলসিএ ‘তেজস’ তৈরি হচ্ছে। তবে তা হাতে পেতে যথেষ্ট দেরি আছে। তাই সুখোই থেকে এলসিএ-এর পথে যাওয়ার মাঝের ধাপ হিসেবেই মাঝারি ওজনের ‘মিডিয়াম মাল্টি-রোল কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট’ কেনার পরিকল্পনা নিয়েছিল ভারত। আবার বায়ুসেনায় থাকার কথা ৩৯.৫ স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান। আছে অনেক কম। ২০০৭ সালে প্রণব মুখোপাধ্যায় যখন প্রতিরক্ষামন্ত্রী, তখন থেকেই মাঝারি ওজনের যুদ্ধবিমান কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। আমেরিকা, রাশিয়া, সুইডেনের মোট ছ’টি বিমান সংস্থা প্রতিযোগিতায় নেমেছিল। লকহিড মার্টিনের এফ-১৬ ফ্যালকন, বোয়িংয়ের এফ-১৮ হর্নেট, সাব গ্রিপেন, মিগ-৩৫-কে বাদ দিয়ে শেষে প্রতিযোগিতা এসে দাঁড়ায় ইউরোফাইটার সংস্থার টাইফুন এবং রাফালের মধ্যে। কিন্তু ইউরোফাইটার-এর তুলনায় কম দর হেঁকে বাজি ছিনিয়ে নিয়েছে দাসো। |
|
যুদ্ধবিমান রাফাল। ছবি: এএফপি |
শুধু কম দর নয়, টাইফুনের তুলনায় রাফাল অনেক বেশি কার্যকর বলেও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মত। কার্গিলের যুদ্ধে ফ্রান্স থেকে আমদানি করা মিরাজ যুদ্ধবিমান যে ভাবে কার্যকর হয়ে উঠেছিল, তাতে বায়ুসেনার পাইলটদের মধ্যেও ফ্রান্সের বিমানের উপর দুর্বলতা তৈরি হয়েছে। যার ফলে অন্যান্য যুদ্ধবিমানের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় রাফাল এগিয়ে থেকেছে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের পাশাপাশি কূটনৈতিক স্তরেও এই প্রতিরক্ষা চুক্তি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকা, রাশিয়া ও ইউরোপের সংস্থাগুলির হয়ে কূটনৈতিক স্তরেও ভারতের উপর চাপ ছিল। শেষ পর্যন্ত ভারত ফ্রান্সের সংস্থাকেই বেছে নেওয়ায় দু’দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ব্রিটেন, জার্মানি, স্পেন ও ইতালি এর ফলে কিছুটা অসন্তুষ্ট হতে পারে। কারণ এই চারটি দেশেরই পুঁজি রয়েছে ইউরোফাইটার সংস্থায়। সম্প্রতি মিরাজ যুদ্ধবিমানকে আরও আধুনিক করতেও ১০ হাজার কোটি টাকার চুক্তি হয়েছে ফ্রান্স ও ভারতের মধ্যে। |
বিমান বৃত্তান্ত |
কী ভাবে কেনা হল রাফাল?
• বেঙ্গালুরু, জৈসলমের ও লেহ্-তে ছ’টি যুদ্ধবিমানের প্রতিযোগিতা।
• ৬৪৩টি মাপকাঠিতে যাচাই।
কোথায় দেখা গিয়েছে রাফালকে?
• আফগানিস্তান ও লিবিয়ায়, ফরাসি বিমানবাহিনীর হয়ে। |
|
রাফাল চুক্তির ফলে আরও এক বার অস্ত্র আমদানিকারী দেশ হিসেবে সারা বিশ্বে শীর্ষস্থানে চলে আসছে ভারত। ২০০৮ সালের হিসেবে এই ১২৬টি বিমান কেনার খরচ ধরা হয়েছিল ১০৪০ কোটি ডলার। প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি জানিয়েছেন, মার্চ শেষে আগামী অর্থবর্ষেই চুক্তি হবে। বর্তমান হিসেবে খরচ
আরও বাড়বে। যুদ্ধবিমানের অভাব মেটাতে, ১২৬টি
বিমান কেনার পরবর্তী ধাপে আরও ৬৩টি রাফাল কেনার প্রক্রিয়া শুরু করতে চায় বায়ুসেনা। সব মিলিয়ে মোট চুক্তির পরিমাণ তাই ২০০০ কোটি ডলারে চলে যাবে। টাকার অঙ্কে যার মূল্য প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা। প্রাথমিক ভাবে ১৮টি যুদ্ধবিমান সরাসরি দাসো সংস্থার থেকে কিনে নেওয়া হবে। বাকি ১০৮টি যৌথ ভাবে তৈরি করবে ভারতের হ্যাল। |
|
|
|
|
|