‘ফতোয়া’ ছত্তীসগঢ়ে
নির্বীজকরণ করালে তবেই বিয়ে মাওবাদীর
যোদ্ধারা প্রেমে পড়তে পারে। বিয়েও করতে পারে। কিন্তু সন্তান? কিছুতেই নয়। তাই নির্বীজকরণ প্রক্রিয়া সেরেই মালাবদল করতে হবে পুরুষকে!
ছত্তীসগঢ়ের মাওবাদীদের নাকি এমনই ফতোয়া মেনে চলতে বাধ্য করছে তাদের নেতৃত্ব। সোমবার কাঁকের জেলা প্রশাসনের সদর দফতরে আত্মসমর্পণ করার পর এ কথা জানিয়েছেন তিন মাওবাদী দম্পতি। অস্ত্র ছেড়ে মূল স্রোতে ফিরতে চাওয়া ওই তিন দম্পতিসুনীল কুমার মাতলাম ও জয়ন্তী, রামদাস ও পানিদোবির এবং জয়লাল ও আসমানি মাওবাদীদের বাস্তার ডিভিশনাল কমিটির সদস্য। আপাতত পুলিশের হেফাজতে থাকা ওই ছ’জনের দাবি, মূলত অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা মাওবাদী নেতাদের থেকে বিয়ে করার অনুমতি মিলেছিল নির্বীজকরণের শর্তেই। যাতে আন্দোলনের পথে সন্তান এসে কোনও অন্তরায় না হয়। অভিযোগ, প্রেমে পড়ার ‘শাস্তি’ হিসেবে মাওবাদী নেতাদের যথেষ্ট অত্যাচারও হজম করতে হয়েছে ওই ছ’জনকে! কাঁকের জেলা পুলিশ সুপার রাহুল ভগতও জানিয়েছেন, মাওবাদী নেতাদের এমন ফতোয়ার কথা তিনি কিছু দিন ধরেই শুনছিলেন।
আত্মসমর্পণকারীদের অন্যতম সুনীল সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, তিনি কাঁকের জেলার ফুফগাঁওয়ের বাসিন্দা। সুনীলের দাবি, মাত্র ১৭ বছর বয়েসে তাঁকে গ্রাম থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল মাওবাদীরা। বাধ্য করেছিল তাদের ‘আন্দোলনে’ শরিক হতে। সেই পথে চলতে গিয়েই দেখা হয়ে যায় মাওবাদী কমান্ডার জয়ন্তীর সঙ্গে। কিছু দিন পরেই সেই পরিচিতি বদলে যায় প্রণয়ে। তখনই সুনীল-জয়ন্তী তাঁদের নেতাদের জানান, তাঁরা বিয়ে করতে চাইছেন। নেতারা প্রথমে মানতে না চাইলেও পরে বিয়েতে রাজি হয়ে যান। কিন্তু অনুমতির সঙ্গেই ঝুলিয়ে দেওয়া হয় নির্বীজকরণের শর্ত। সুনীল ওই অস্ত্রোপচার করানোর পরেই তাঁর সঙ্গে জয়ন্তীর বিয়ে হয়। ওই দম্পতির দাবি, এই কাজের জন্য নেতারা পশ্চিমবঙ্গ থেকে ডাক্তার নিয়ে গিয়েছিল ছত্তীসগঢ়ের জঙ্গলে। একই অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন আত্মসমর্পণকারী আরও দুই দম্পতিও।
তবে এমন ফতোয়া শুধু বিয়ের ক্ষেত্রেই নয়। আত্মসমর্পণকারীদের দাবি, ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী নেতৃত্বের কথা না শুনলেও শাস্তি হিসেবে নির্বীজকরণ করানো হত। কাঁকের প্রশাসনিক সদর দফতরে বসে জয়ন্তী এমনও অভিযোগ করেছেন, কোনও অপরাধ না করেই আন্দোলনের ‘অগ্রজ’দের হাতে একাধিক বার লাঞ্ছিত হতে হয়েছে তাঁকে। অবশেষে তিন দম্পতি সিদ্ধান্ত নেন, জঙ্গলে লুকিয়ে আন্দোলনের ওই পথ ছাড়তে হবে। জয়ন্তীর দাবি, তাঁরা অস্ত্র ছেড়ে মূল স্রোতে ফিরতে চান বলেই সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। এ বার সরকারের দায়িত্ব তাঁদের রক্ষা করা এবং পুনর্বাসন দেওয়া। রাস্তা আগেও মসৃণ ছিল না। আজও নয়। তবু আসমানিরা চাইছেন নতুন করে গা ভাসাতে! এ বার মূল স্রোতে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.