|
|
|
|
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে টু-জি নিয়ে অস্বস্তিতে কেন্দ্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ভোটের মরসুমের মধ্যেই টু-জি মামলা নিয়ে অস্বস্তি বাড়ল মনমোহন সরকারের। টু-জি কেলেঙ্কারিতে প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজার বিচারের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখার জন্য সুপ্রিম কোর্ট আজ কড়া সমালোচনা করেছে সরকারের। যদিও এ ব্যাপারে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের দিকে আঙুল তোলার বদলে মূলত তাঁর দফতরের ভূমিকা নিয়েই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের মতে, দুর্নীতি দমন আইনে অভিযোগ দায়ের করা যে কোনও নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। সরকারকেও মন্ত্রী-আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমতি দেওয়া হবে কি না তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জানাতে হবে। এমন ব্যবস্থা করতে হবে যে চার মাসেও সরকার সিদ্ধান্ত না নিলে ধরে নেওয়া যাবে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে নীতি তৈরির দায়িত্ব অবশ্য সংসদের উপরেই ছেড়ে দিয়েছে বিচারপতি জি এস সিঙ্ঘভি ও বিচারপতি অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্যে স্বাভাবিক ভাবেই উল্লসিত বিজেপি। তাদের মতে, কংগ্রেসের গালে এটা একটা চড় ছাড়া কিছু নয়।
টু-জি কেলেঙ্কারিতে প্রাক্তন টেলিকমমন্ত্রী রাজার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন জনতা পার্টির নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। কিন্তু ১৬ মাসেও প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় কোর্টে যান স্বামী। শুরুতে প্রধানমন্ত্রীকে রাজার বিরুদ্ধে মামলা শুরুর নির্দেশ দিতে কোর্টে আর্জি জানান তিনি। রাজা পদত্যাগ করার পরে সেই আর্জি খারিজ হয়ে যায়। তখন মামলা চালানোর অনুমতি নিয়ে নির্দিষ্ট নীতি তৈরির জন্য আবেদন জানান স্বামী। সেই আবেদনের উপরে রায় দিতে গিয়েই সুপ্রিম কোর্ট আজ বলেছে, প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর দফতরই বিষয়টি ঠিকমতো জানায়নি।
বিজেপি-র অবশ্য দাবি, আসলে রাজাকে আড়াল করতেই সরকার সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রেখেছিল। শীর্ষ আদালতের মন্তব্যে কংগ্রেস অস্বস্তিতে পড়লেও, দলীয় মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি এ দিন বলেন, “কোর্ট সরকারি প্রক্রিয়াগত দিক নিয়ে মন্তব্য করেছে মাত্র। বিজেপি বিষয়টি নিয়ে খোমোখা রাজনীতি করছে।” কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমও প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শুধু এটুকুই বলেছেন যে, “রায় পড়া হয়নি। তবে যত দূর জেনেছি, আদালত এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন দিয়েছে।” কিন্তু রাজার বিচার শুরুর আর্জি দীর্ঘ ১৬ মাস ঝুলিয়ে রাখা নিয়ে কী বলছে সরকার? স্বামীর আবেদন নিয়ে শুনানির সময় কেন্দ্রের আইনজীবীরা যুক্তি দিয়েছিলেন, আবেদনটি প্রধানমন্ত্রী বিবেচনা করেছিলেন। কিন্তু রাজার বিরুদ্ধে তখন সিবিআই তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছিল। মামলা চালানোর অনুমতি দেওয়ার আগে সিবিআইয়ের সাক্ষ্য-প্রমাণ জোগাড়ের কাজ শেষ হওয়া প্রয়োজন বলে তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন আইনজীবীরা। তবে এই বক্তব্য মানেনি সুপ্রিম কোর্ট। স্বামীর দাবি, এই রায়ে জয় হয়েছে সংবিধানের। এ বার দুর্নীতি দমন করা সম্ভব হবে। শীর্ষ আদালতের এই রায়ের পরেও প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী কিন্তু মনে করছেন না, সরকারের অস্বস্তি বাড়ল। তাঁর বক্তব্য, “কেন্দ্র দুর্নীতি দমনে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে মামলা চালাতে অনুমতি নেওয়ার প্রথা আমরা তুলে দিতে চাই।” প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, লোকপাল ও লোকায়ুক্ত বিলে এই বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে। |
|
|
|
|
|