মুসলিম, দলিত মন পেতে মরিয়া কংগ্রেস
ত্তরপ্রদেশ ভোটের অনেক আগে থেকেই সংখ্যালঘু সংরক্ষণের দাওয়াই দিয়ে মুলায়ম সিংহের মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কে থাবা বসাতে তৎপর হয়েছিল কংগ্রেস। আর আজ নির্বাচনী ইস্তেহারের হাত ধরে মায়াবতীর দলিত দুর্গেও হানা দিতে সক্রিয় হল কংগ্রেস। জানিয়ে দিল, ক্ষমতায় এলে অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষণ তথা ‘কোটার’ আওতায় ‘অতি দলিত’-দের সংরক্ষণ দেওয়া হবে। দেওয়া হল দলিত ও সংখ্যালঘুদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের স্বার্থে গুচ্ছ প্রতিশ্রুতিও।
একেবারে পিছিয়ে পড়া অংশের জন্য সংরক্ষণের দাওয়াই অবশ্য হিন্দিবলয়ে নতুন নয়। ‘অতি দলিতদের’ জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে বিহারে গত বিধানসভা ভোটে সোনা ফলিয়েছেন নীতিশ কুমার। যদিও ‘বিহার মডেল’ অনুকরণের কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করতে আপত্তি রয়েছে কংগ্রেসের। বরং দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য, একেবারে পিছিয়ে পড়া অংশের ক্ষমতায়নের জন্য সংরক্ষণের কথা রাহুল গাঁধী অনেক আগেই থেকেই বলছেন। তা ছাড়া, মায়া-মুলায়মের ভোট ব্যাঙ্কে থাবা বসানোর যে কথা বলা হয়চ্ছে, তা-ও ঠিক নয়। দলের বক্তব্য, অতীতে উত্তরপ্রদেশের সংখ্যালঘু ও দলিত সমাজে কংগ্রেসের মজবুত জনভিত্তি ছিল। নব্বইয়ের দশক থেকে তা ক্ষয় পেতে শুরু করে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বার্তা দিয়ে এ বার এই অংশকে ফের ‘ঘরে ফেরাতে’ চাইছে কংগ্রেস। সে দিকে লক্ষ্য রেখেই ইস্তেহারে সংখ্যালঘু ও দলিতদের জন্য একাধিক প্রতিশ্রুতি রয়েছে। যার মধ্যে বাবরি মসজিদের মতো বিষয়ও রয়েছে।
সংখ্যালঘু ও দলিতদের মন জয়ের লক্ষ্যে কংগ্রেসের এই পদক্ষেপ ইস্তেহারের একটি দিক মাত্র। পুরো ইস্তেহারের ছত্রে ছত্রে স্পষ্ট, সপা বা বিজেপির সঙ্গে কতটা ফারাক রাখতে চাইছে দল। মায়াবতী ইস্তেহার প্রকাশ করেন না। আর সপা ও বিজেপি ইতিমধ্যেই ইস্তেহার প্রকাশ করে ‘পপুলিজমে’ গা ভাসিয়েছে। ক্ষমতায় এলে বিনামূল্যে সাইকেল, ল্যাপটপ বণ্টনের মতো ঘোষণা করেছে এই দুই বিরোধী দল। সে পথে না হেঁটে উত্তরপ্রদেশের মৌলিক সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কংগ্রেস। তাই ইস্তেহারে গুরুত্ব পেয়েছে অপরাধ দমন, মহিলাদের সুরক্ষার মতো বিষয়।
তবে অনেকেই বলছেন, ইস্তাহারে কংগ্রেস যে ‘পপুলিজমের’ রাজনীতি একেবারে করেনি, তা নয়। তা কৌশলে মুড়ে রাখা হয়েছে। কন্যা সশক্তিকরণ যোজনার মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর মেয়েদের দেড় লক্ষ টাকা অনুদান, কুড়ি লক্ষ কর্মসংস্থান, কৃষি ঋণ বাড়ানো, সার্বজনীন বার্ধক্য পেনশনের মতো প্রতিশ্রুতি রয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, অকংগ্রেসি এবং কংগ্রেস শাসিত বিভিন্ন রাজ্যের কিছু সফল যোজনা তুলে আনা হয়েছে ইস্তেহারে। যেমন, কন্যা সশক্তিকরণ যোজনা অনেক আগে থেকেই মধ্যপ্রদেশে ভিন্ন নামে চলছে। একই ভাবে অন্ধ্রপ্রদেশের স্বাস্থ্য যোজনাকে অবিকল অনুকরণ করা হয়েছে।
অতি দলিতদের জন্য সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতির বিষয়টি নিয়েই দিনের শেষে রাজনীতি সরগরম। এ নিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে সপা ও বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, সমাজকে আরও ভাগ করতে চাইছে কংগ্রেস। অন্য দিকে কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, এ নিয়ে যে দলই কংগ্রেসের সমালোচনা করবে, ততই দলিত সমাজ তাদের ওপর চটবে। আরও একটি বিষয় নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন কংগ্রেস নেতারা। তা হল, বিনামূল্যে ল্যাপটপ বা সাইকেল বিতরণের মতো কোনও ঘোষণা নেই কেন? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলের জবাব, “মানুষ কংগ্রেসকে আগে ক্ষমতায় ফেরাক। তার পর সব পাবে!”
প্রতিশ্রুতির সাতকাহন
অতি দলিতদের জন্য সংরক্ষণ।
মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলার জন্য রাজ্য মহিলা ব্যাঙ্কের গঠন।
দলিত ছাত্রাবাস গঠন।
চল্লিশটি শিল্পতালুক নির্মাণ।
লখনউ, কানপুরের মতো শহরে মেট্রো রেল।
আইনি পথে বাবরি মসজিদ সমস্যার সমাধান।
৫০০ মডেল স্কুল নির্মাণ ও কুড়ি লক্ষ বেকারের কর্মসংস্থান।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.