|
|
|
|
বিদ্যুৎ-বিভ্রাটেই বিপত্তি, যুক্তি বদল গিল্ড-কর্তার |
মিলন দত্ত |
বইমেলার প্রেক্ষাগৃহে পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার ইমরান খানের কথা চলাকালীন আলো নিভে যাওয়ার কারণ নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মত পাল্টালেন পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। সোমবার, ঘটনার পরে ত্রিদিববাবু বলেছিলেন বিদ্যুৎ-বিভ্রাট নয়, ইমরান খানের সভা শেষ করে তাঁকে তাড়াতাড়ি মঞ্চ থেকে বার করে আনার জন্য তাঁর নির্দেশেই আলো নেভানো হয়েছে। মঙ্গলবার সেই বক্তব্য থেকে পুরোপুরি সরে এসে তিনি বলেন, “কাল মেলায় অল্প সময়ের জন্য বিদ্যুৎ-বিভ্রাট হয়ছিল। যে ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য আমরা লজ্জিত। সকলের কাছে ক্ষমা চাইছি।” মত বদলে ফেলার কারণ জানতে চাওয়া হলে ত্রিদিববাবু বলেন, “কাল যা হয়ে গিয়েছে, ভুলে যান। আর যে ক’দিন বইমেলা আছে, যাতে কোনও গণ্ডগোল না হয়, দেখব।”
গিল্ডের যুগ্ম সম্পাদক সুধাংশু দে অবশ্য গোড়া থেকেই বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের কথা বলছিলেন। ত্রিদিববাবু ও সুধাংশুবাবু এ দিন সকালে হোটেলে গিয়ে ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করে এই বিপত্তির জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন। পরে সুধাংশুবাবু জানান, গোটা ঘটনাটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে। এ দিনই মিলন মেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে মেলায় যান বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত। |
 |
রাস্তা পেরিয়ে বইমেলার দিকে। মঙ্গলবার বিকেলে। —নিজস্ব চিত্র |
এ দিকে, বইমেলায় ভিড় যত বাড়ছে, মেলা থেকে ফেরার অসুবিধাও ততই বাড়ছে। মেলার উত্তর-পূর্ব কোণে বাইপাসের ধারে বাস রাখার জায়গা করা হয়েছে। কিন্তু রাত বাড়তেই বাস উধাও হয়ে যায়। প্রায়ই বাস পাওয়া যায় না। অন্যান্য বার রাজ্য সরকার গোড়া থেকেই বাসের ব্যবস্থা করে। এ বার তা হয়নি। সরকারি বাস কয়েকটি আছে, তা নিতান্তই অপ্রতুল। আর গিল্ড বেসরকারি বাসের যে ব্যবস্থা করেছে, তার সংখ্যাও খুবই কম। অগত্যা ভিড়ের মধ্যে দীর্ঘ সময় অনিশ্চিত অপেক্ষা ছাড়া উপায় থাকে না।
এই দুর্ভোগের দায় নিতে অবশ্য রাজি নয় উদ্যোক্তা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড। বইমেলা করলে তার সম্পূর্ণ পরিকাঠামো উদ্যোক্তাদেরই করতে হবে, তা মানতে নারাজ গিল্ড-কর্তারা। যুগ্ম সম্পাদক সুধাংশুবাবু স্বীকার করেন, তাঁরা যে বেসরকারি বাসের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তারা যথেষ্ট বাস চালাতে পারছে না। তবে তাঁর বক্তব্য, “সরকারি বাস ছাড়া এই ভিড় সামলানো সম্ভব নয়। মহাকরণে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকের সময়ে পরিবহণসচিবের সঙ্গেও কথা হয়েছিল। কিন্তু যথেষ্ট সরকারি বাস আসেনি।”
এই সমস্যার কথা সুধাংশুবাবু জানিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রকেও। মদনবাবু এ দিন বলেন, “কিছু সরকারি বাস সব সময়েই চলছে। শনিবার আর রবিবার মেলায় অত্যধিক ভিড় হওয়ায় একটু অসুবিধা হয়েছিল। আমি পরিবহণসচিবকে জানিয়েছি। আজই বাড়তি বাসের ব্যবস্থা হবে। আশা করছি, বইমেলার যাত্রীদের আর অসুবিধা হবে না।”
এ দিন বইমেলায় প্রকাশিত হয় সঞ্জয় সিংহের ছোট-বড় চারটি নাটকের সঙ্কলন ‘বিজয়িনী’। বেরোলো গৌতম ঘোষদস্তিদার সম্পাদিত ‘গীতাঞ্জলি আমার আপন গান’, তাতে এখনকার কবিরা গীতাঞ্জলির গান নতুন করে পড়ে লিখেছেন তাঁদের প্রাপ্তির কথা। গৌতমবাবুরই সম্পাদিত কবিতাপত্র ‘রক্তমাংস’ বেরিয়েছে বইমেলায়। বেরিয়েছে নীহারুল ইসলামের নতুন উপন্যাস ‘জনম দৌড়’, বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য সম্পাদিত ‘পুরবৈয়াঁ’ পত্রিকার জাহিরুল হাসান বিশেষ সংখ্যা। সমীর পুততুণ্ডের প্রবন্ধ-সঙ্কলন ‘সময়ের কথা’ও বেরিয়েছে মেলায়। |
|
|
 |
|
|