রাস্তা খারাপ। তাই চিত্তরঞ্জন-রূপনারায়ণপুর রুটে মঙ্গলবার থেকে বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধ করে দিলেন মালিকেরা। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন কয়েক হাজার যাত্রী ও স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা। আসানসোলের মহকুমাশাসক সন্দীপ দত্ত বলেন, “বাস মালিকদের সঙ্গে কথা বলছি। সমস্যা মেটাতে বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করা যায় কি না দেখছি।”
জুলাই থেকে ওই রাস্তা সংস্কারের দাবি করছিলেন বাস-মিনিবাস চালকেরা। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা হয়নি। দিন পনেরো আগে বাস মালিক সংগঠনগুলি ৩১ জানুয়ারি থেকে এই রুটে বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধে নোটিস দেন। কিন্তু তাতেও প্রশাসনের তরফে কোনও উদ্যোগ হয়নি। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার থেকে এই রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা।
|
বাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায়ের অভিযোগ, “রাস্তা খারাপের জন্য প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। ক্ষুব্ধ যাত্রীদের হাতে আমাদের কর্মীরা প্রহৃত হচ্ছেন। রাস্তার হাল না ফিরলে আমরা বাস চালাব না।” তাঁদের সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাস ও মিনিবাস মিলিয়ে এই রুটে প্রতি দিন ৮০টি বাস চলে। প্রশাসনকে দেওয়া দাবিপত্রে তাঁরা আরও উল্লেখ করেছেন, চিত্তরঞ্জনের ৩ নম্বর রেলগেট থেকে নিয়ামতপুরের পুরনো জিটি রোড পর্যন্ত রাস্তা, কল্যাণেশ্বরী থেকে নিয়ামতপুর ও দেন্দুয়া রোড, চিত্তরঞ্জন থেকে রূপনারায়ণপুর হয়ে সামডি রোডের অবস্থা খুবই খারাপ। বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। গাড়ির যন্ত্রাংশ ভেঙে যাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাঝে-মধ্যেই দুর্ঘটনায় পড়ছে বাস।
আসানসোল মহকুমার এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলি সংস্কার হচ্ছে না কেন? আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক বিশ্বজিৎ দত্ত বলেন, “পূর্ত দফতরের বাস্তুকারদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছি। প্রয়োজন অনুযায়ী টাকা আসছে না বলেই রাস্তা সংস্কারে সমস্যা হচ্ছে।” পূর্ত দফতরের এক বাস্তুকার জানান, রাস্তাটি সংস্কারের জন্য সামগ্রিক খরচের হিসেব ধরা হয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। টাকা এলেই কাজ হবে। বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে বিকল্প ব্যবস্থার উদ্যোগ চলছে বলে জানান মহকুমাশাসক সন্দীপ দত্ত।
এ দিন চিত্তরঞ্জন, রূপনারায়ণপুর, সামডি এলাকার নিত্যযাত্রীরা অটো, ট্যাক্সি বা গাড়ি ভাড়া করে যাতায়াত করতে বাধ্য হয়েছেন। বেশি সমস্যা হয়েছে পড়ুয়াদের। আসানসোলের একটি কলেজের ছাত্রী মহুয়া ভট্টাচার্য বলেন, “বাস নেই। ট্যাক্সি ভাড়া করে যাওয়া সম্ভব নয়। অটোরও অনেক ভাড়া। তার উপরে আবার মাঝে দু’বার পাল্টাতে হয়। তাই কলেজে যেতে পারলাম না।” সামডি থেকে আসানসোলে আসা নিত্যযাত্রী সাধন চট্টোরাজের কথায়, “কাজে তো আসতেই হবে। একটি লরিতে বাদুড়ঝোলা হয়ে এলাম। জানি না কী ভাবে ফিরব?” |