|
|
|
|
জোড়া খুনে গ্রেফতার ২ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ব্যাঙ্ক ডাকাতির উদ্দেশ্যেই দার্জিলিং জেলার গাঁধী রোডের এক হোটেলের ম্যানেজার ও ওয়েটারকে কুপিয়ে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। রবিবার সকালে মাটিগাড়া থানার কাওয়াখালি থেকে ২ অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পরই পুলিশ সেই তথ্য হাতে পেয়েছে। ধৃতদের নাম শক্তি মণ্ডল এবং সঞ্জু রায়। তাদের বাড়ি কাওয়াখালিতে। শক্তি অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত। সম্প্রতি সে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। সঞ্জু কাঠ মিস্ত্রির কাজ করে। ২০ জানুয়ারি রাতে ওই ২ জন সহ ৪ জন হোটেলে যায়। তাদের মধ্যে হোটেলের এক কর্মীও ছিলেন। ২১ জানুয়ারি সকালে হোটেলের বন্ধ ঘর থেকে ম্যানেজার সন্দীপ রাই (২৫) ও ওয়েটার মহম্মদ মুস্তাকের (৩৫) দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এদিন দার্জিলিং সদর থানায় সাংবাদিক বৈঠক করে দার্জিলিং সদরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুনাল অগ্রবাল বলেন, “হোটেল চত্বরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা রয়েছে। তার চাবি মুস্তাকের কাছে থাকত। তা ছিনিয়ে নিতেই দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করে। তা দেখে ফেলতেই সন্দীপকে খুন করা হয়। ঘটনায় ৪ জন যুক্ত রয়েছে। ২ জনকে গ্রেফতার করেই প্রচুর তথ্য আমরা হাতে পেয়েছি। তারা খুনের কথা স্বীকারও করেছে। সিআইডির সদস্যরা হাতের ছাপ ও পায়ের ছাপ পরীক্ষার জন্য নিয়ে গিয়েছেন। তাঁদের রিপোর্টও আমরা হাতে পেয়ে যাব। অভিযুক্ত আরও ২ জনকে খোঁজা হচ্ছে।” তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মুস্তাকের কাছে ব্যাঙ্কের চাবি রয়েছে, তা জানার পরই হোটেলের এক কর্মী ডাকাতির ছক কষে। জানুয়ারি মাসে হোটেল একরকম বন্ধ ছিল। ম্যানেজার ও ওয়েটার ছাড়া হোটেলের অপর কর্মীদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। সেই সুযোগেই অভিযুক্ত কর্মী ৪ জনকে নিয়ে ২০ জানুয়ারি রাতে ওই হোটেলে যায়। হোটেল কর্মী হওয়ার সুবাদে নাম নথিভুক্ত না করে তাদের থাকতে দেন ম্যানেজার। গভীর রাতে মুস্তাকের কাছ থেকে ব্যাঙ্কের চাবি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। তিনি বাধা দিলে ভোজালি দিয়ে কুপিয়ে তাঁকে খুন করা হয়। সন্দীপ বিষয়টি দেখে ফেলতেই তাঁকে কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা। খুনের পর দেহ দুটিকে একটি ঘরে আটকে রেখে চাবি নিয়ে তারা ব্যাঙ্কে যায়। ব্যাঙ্কের সদর দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে লকার খোলার চেষ্টা করে। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা করার পরেও লকার খুলতে না পেয়ে ফের ৪ জন হোটেলে ফেরে। চাবি মুস্তাকের পকেটে রেখে ভোর হওয়ার ঠিক আগে তারা হোটেল থেকে বেরিয়ে গাড়ি ধরে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর শনিবার সকালে তদন্তে গিয়ে পুলিশ ব্যাঙ্কের অফিস ঘরের তালা খোলা দেখতে পায়। ভেতরে ঢুকে তল্লাশি করে তদন্তকারী অফিসাররা নিশ্চিত হন, ব্যাঙ্কের লকার খোলার চেষ্টা করেছিল দুষ্কৃতীরা। তার পরেই প্রাথমিক ধারণা থেকে হোটেল কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। আশেপাশের ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ২ জনের নাম জানতে পারে পুলিশ। হোটেল কর্মী ছাড়াও ধৃত সঞ্জু দীর্ঘ দিন পাইপ লাইনের কাজে পাহাড়ে ছিল। সে সময় অভিযুক্ত হোটেল কর্মীর সঙ্গে তাকে দেখা গিয়েছে। সে সূত্র ধরেই পুলিশ কাওয়াখালিতে হানা দিয়ে সঞ্জুকে গ্রেফতার করে। পরে শক্তিকে গ্রেফতার করে। |
|
|
|
|
|