দুই মদ্যপ যুবকের অশালীন আচরণের প্রতিবাদ করেছিলেন রাজ্য পুলিশের এক কর্মী। তার জেরে তাঁর বাবাকে রড-বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটানো ওই বাজারে হামলার অভিযোগ উঠল স্থানীয় এক দুষ্কৃতী ও তার দলবলের বিরুদ্ধে। রবিবার দুপুরে গাইঘাটার পাঁচপোতা বাজার এলাকায় এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রায় তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করেন। বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট। পরে পুলিশ চার দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
অশ্বিনীকুমার ঘোষ নামে প্রহৃত ওই ব্যক্তিকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর মাথায় ৫টি এবং ডান পায়ে দু’টি সেলাই পড়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই মদ্যপ যুবক স্থানীয় এক দুষ্কৃতীর ঘনিষ্ঠ। নেশাগ্রস্তঅবস্থায় তারা এ দিন দুপুরে ওই বাজারে আসা লোকজনের উদ্দেশে কটূক্তি করতে থাকে এবং ধাক্কাও দেয় বলে অভিযোগ। সেই সময়ে ওই বাজার এলাকারই বাসিন্দা, রাজ্য পুলিশের কর্মী রাজীব ঘোষ সেখানে ছিলেন। দুই যুবকের ওই আচরণের প্রতিবাদ করেন তিনি। তাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। পাশে পেয়ে যান আরও কয়েক জনকে। তা দেখে ওই দুই যুবক পালায়। তারা গিয়ে মহিষকাঠির ওই দুষ্কৃতীকে খবর দেয়। তার পরেই ওই দুষ্কৃতী দলবল নিয়ে এসে বাজারে হামলা চালায়। কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর করে এবং কয়েক জন ব্যবসায়ীকে মারধর করে। তার পরে তারা রাজীবের বাড়িতে চড়াও হয়। রাজীব বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর বাবা অশ্বিনীবাবুকে ডেকে নিয়ে এসে রাস্তায় মারধর করে দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় লোকজন চলে এলে দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। বিধান সরকার নামে এক দুষ্কৃতী-সহ ১০ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
অশ্বিনীবাবুর বাড়িতে হামলার পরেই পাঁচপোতা মোড়ে বেঞ্চ পেতে অবরোধ করা হয়। রামনগর এবং গোবরডাঙার মধ্যে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে আসেন গাইঘাটার ওসি অরিন্দম ভট্টাচার্য। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরে পুলিশ চার দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করলে অবরোধ ওঠে।
হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে অশ্বিনীবাবু বলেন, “রাজীব অশালীন আচরণের প্রতিবাদ করেছিল বলে দুষ্কৃতীরা আমাকে মারল। ওদের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র থাকায় প্রথমে কেউ ঠেকাতে সাহস করেননি।” পাঁচপোতা বাজার কমিটির সম্পাদক বিষ্ণু ঘোষ বলেন, “বিধান সরকার নামে এক দুষ্কৃতীর নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে। ওদের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। এ বিষয়ে পুলিশকে সব জানানো হয়েছে। আমরা চাই, সব দুষ্কৃতীকে দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।” |