জোড়া জাতীয় খেতাব বাংলার
গোল পার্থক্যে বি সি রায় ট্রফি জিতল বাংলা
মূলপর্ব রাউন্ড রবিন লিগের শেষ ম্যাচ হারলেও বি সি রায় ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হল বাংলা। মাঠে উপস্থিত উচ্ছ্বসিত বাংলার কর্মকর্তারা জানান। ৫ বছর পর তারা ওই ট্রফি জিতলেন। রবিবার শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে ২-১ গোলে হেরে মাঠ ছাড়ার মুহূর্তে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ঘোষণা তাদের আনন্দে ভাসাল। মূলপর্বে ৪ টি দলের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন খেতাবের লড়াইতে এগিয়েছিল বাংলা এবং মিজোরাম। এ দিন রানিডাঙায় এসএসবি মাঠে মিজোরাম ৩-২ গোলে হেরে যায় কর্ণাটকের কাছে। যা বাংলার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বড় কারণ। এ দিন বাংলা হারলেও মূলপর্বের ৩টি ম্যাচে গোলের নিরিখে এগিয়ে থেকে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। গত বুধবার কর্ণাটককে ৫-১ ব্যবধানে হারিয়ে দেওয়াই বাংলাকে এ ক্ষেত্রে বাধা টপকাতে সাহায্য করে। চ্যাম্পিয়ন হলেও মাঠে বাংলার ফুটবলারদের অনিয়ম, রেফারির দিকে তেড়ে যাওয়া, তর্কে জড়িয়ে পড়া দেখে অসন্তুষ্ট জুনিয়র জাতীয় দলের কোচ কলিন টোল। চ্যাম্পিয়ন হতে পারলেও তাই কপাল পোড়ার আশঙ্কা রয়েছে বাংলার উঠতি ফুটবলারদের অনেকের।
রবিবারের নিজস্ব চিত্র।
সম্ভাবনা থাকলেও জুনিয়র জাতীয় দলে তাদের অনেকের সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে তা বড় বাধা হয়ে উঠতে পারে বলে জানান জাতীয় কোচ। ফুটবলারদের সুশৃঙ্খল ভাবে এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারার বিষয়টি যে তিনি মোটেই ভাল ভাবে নিচ্ছেন না তা বাংলার কোচকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কলিন টোল। মূলপর্বে ৪ টি দলকে নিয়ে রাউন্ড রবিন লিগ হয়। প্রতিটি দল ৩টি করে ম্যাচ খেলে। তারা প্রত্যেকেই ১ টি করে ম্যাচ জেতে, ১টি করে হারে এবং ১ টি করে ড্র করে। খেতাবের লড়াইতে তাই কে বেশি গোল করতে পেরেছে সেই বিচার এসে পড়ে। তিনটি ম্যাচে বাংলা গোল করেছে ৬ টি। গোল খেয়েছে ৩টি। মিজোরাম গোল করেছে ৩টি, গোল খেয়েছে ৩টি। ঝাড়খণ্ড ২ টি গোল করেছে, তারা গোল খেয়েছেও ২টি। মিজোরাম বেশি গোল দিতে পারায়, তারা রানার্স। কর্ণাটক ৪ টি গোল দিতে পেরেছে। তারা গোল খেয়েছে ৭টি। এ দিন প্রথমার্ধে ১৫ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল পায় ঝাড়খণ্ড। ১৯ মিনিটের মাথায় বাংলার হয়ে তন্ময় দাস গোল করে সমতা ফেরান। রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলার ফুটবলারদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা যায়। দ্বিতীয়ার্ধে তা চরমে ওঠে। বল ছাড়াই বিপক্ষকে আক্রমণ, রেফারির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তেড়ে যাওয়া, তর্কাতর্কি কিছুই বাদ যায়নি। দু’ বার হলুদ কার্ড দেখে ৮৭ মিনিটের মাথায় মাঠ ছাড়েন রাজীব ঘড়ুই। হলুদ কার্ড দেখেন গোপাল, সুমিত, তন্ময়রাও। ৪৮ মিনিটের মাথায় বক্সের কাছে ফ্রি কিক পায় ঝাড়খণ্ড। কমলদীপের অসাধারণ ফ্রি কিকে দ্বিতীয় গোল করে তারা। এর পর ম্যাচ বাঁচাতে উঠে পড়ে লাগে রাজীব ঘড়ুই, সুমিত ঘোষ, সায়ন দত্তরা। একাধিক সুযোগ তারা অবশ্য কাজে লাগাতে পারেনি। গোপালের পাস গোলের সামনে পেয়েও ব্যর্থ হয় সুমিত। গোলের সামনে ফৈয়াজ বল এগিয়ে দিলেও সুযোগ নষ্ট করে সায়ন। সুমিতের হেড বারে লেগে ফিরে আসে। তন্ময় দাসের একটি ফ্রি কিকও পোস্টে লেগে ফিরে যায়। বাংলার খেলা চলার ফাঁকেই কর্মকর্তাদের তাই দেখা গিয়েছে রানিডাঙা মাঠের ফল নিয়ে মোবাইল ফোনে খবর নিতে। এক সময় কর্ণাটক ২-০ এগিয়ে থাকে। তক্রমে ২-১, ৩-১ এগিয়ে শেষ পর্যন্ত ৩-২ জেতে তারা। হাফ ছাড়ে বাংলা। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খুশিতে কেঁদে ফেলেন কোচ প্রশান্ত চক্রবর্তী। গত বৃহস্পতিবার মা মারা যাওয়ার খবর পেয়ে দুপুরেই কলকাতায় চলে যান তিনি। শুক্রবার বাংলার খেলা থাকায় সৎকার সেরে বৃহস্পতিবার রাতে ট্রেনে শিলিগুড়ি রওনা হন। খেলার শেষে বাংলার কোচ প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, “ফুটবলাররা ট্রফির ম্যাচগুলিতে ভাল খেলেছে। তবে এ দিন ভাগ্য আমাদের সহায় ছিল না। আজকের ম্যাচে ফুটবলারদের ভুল নিয়ে প্রশ্ন অবশ্যই থাকবে। তবে সার্বিকভাবে ওদের খেলা নিয়ে আমি খুশি।” খেলোয়াড়দের অনিয়ম নিয়ে কলিন টোল তাঁকে প্রশ্ন করলে বাংলার কোচ জানিয়ে দেন, পরিস্থিতি অনেক সময় এমন হয় যখন কোচের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। খেলার শেষে ফুটবলাররা রেফারির দিকে ফের তেড়ে গেলে তিনিই মাঠে ঢুকে ফুটবলারদের ডেনে নেন। সংযত থাকতে বলেন। জাতীয় কোচ অবশ্য সাফ বলেন, “মাঠে বাংলার ফুটবলাররা যে ধরনের আচরণ করছিলেন তাতে আন্তর্জাতিকস্তরে খেলায় এ সব বেমানান। সবার আগে তাদের নিয়মানুবর্তিতা শেখা জরুরি।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.