কাজিরাঙার জঙ্গল থেকে স্ত্রী গন্ডার দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে অসম সরকার। তাতেই উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে স্ত্রী-পুরুষ গন্ডারের আনুপাতিক ভারসাম্য ফেরানো নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে রাজ্য বন দফতর। পরিস্থিতি সামলাতে বন দফতর কেন্দ্রীয় বন মন্ত্রকের দ্বারস্থ হয়েছে। রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে পুরুষের তুলনায় স্ত্রী গন্ডারের আনুপাতিক হার কম। ওই সমস্যা মেটাতে অসমের কাজিরাঙা থেকে স্ত্রী গন্ডারের এনে পরিবর্ত হিসাবে পুরুষ গন্ডার বিনিময় করতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা সম্ভব নয় বলে অসম বন দফতর জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রককে চিঠি দিয়ে সাহায্য চেয়ে আর্জি জানানো হয়।” বনমন্ত্রী জানান, কাজিরাঙায় অনুপাতজনিত একই সমস্যার জন্য ওঁরা প্রস্তাবে রাজি হতে পারেনি বলে শুনেছি। দেশের অন্য রাজ্যের সঙ্গে গন্ডার বিনিময় করা যায় তা দেখা হচ্ছে। বন দফতর সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের গরুমারা ও জলদাপাড়ায় গন্ডারের আবাসস্থল রয়েছে। গরুমারায় ৩৫টি (১৭টি পুরুষ, ৮টি স্ত্রী ও ১২টি শাবক), জলদাপাড়ায় ১৫৫ টি গন্ডার (পুরুষ প্রায় ৪০% স্ত্রী প্রায় ৬০%) রয়েছে। আনুপাতিক হারের বিচারে একটি পুরুষ গন্ডারের জন্য তিনটি স্ত্রী গন্ডার আদর্শ হলেও ওই দুই বনাঞ্চলেই তা যথেষ্ট কম। এতে পছন্দের সঙ্গিনী দখল নিয়ে পুরুষ গন্ডারদের মধ্যে লড়াই হচ্ছে। গরুমারার ২ পুরুষ গন্ডার বৈকুন্ঠপুর জঙ্গলে চলে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, পুরুষ গন্ডারের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বনদফতরের কয়েক জন আধিকারিক বলেন, “আনুপাতিক হারের সমস্যায় অপ্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী গন্ডারদের ওপরেও প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ গন্ডারেরা আক্রমণ করছে। এতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এ ছাড়া ইনব্রিডিং সমস্যার জন্য ভবিষ্যতে জিনগত সংক্রামক রোগে গন্ডারকুলের অস্তিত্ব বিপন্ন হবার আশঙ্কা রয়েছে। সমস্যা এড়াতেও উত্তরবঙ্গে গন্ডারের নতুন প্রজন্মের বংশবিস্তার জরুরি।” পশ্চিমবঙ্গ, অসম ছাড়া গন্ডার রয়েছে মূলত উত্তরপ্রদেশের দুধিয়ায়। উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল রাজকুমার মাহাতোলিয়া বলেন, “উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে পুরুষ এবং মহিলা গন্ডারের অনুপাত যথেষ্ট নয়। পরিস্থিতি আপাতত সামলাতে বনাঞ্চলের এলাকা বাড়িয়ে প্রাপ্তবয়স্ক কিছু সংখ্যক স্ত্রী-পুরুষ গন্ডার স্থানান্তরের বিষয়টি ভাবা হচ্ছে।” তিনি জানান, এটা করা গেলে অপ্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী গন্ডারের ওপরে পুরুষ গন্ডারের হামলার আশঙ্কা কমানো যাবে।” |