শব্দের তাণ্ডবে সুর কাটল পুজোর
ক-একটি মণ্ডপের সামনে ৩০টিরও বেশি স্পিকার। কোথাও আরও বেশি। কে কত জোরে সাউন্ড বক্স বাজাতে পারে, ‘লড়াই’ যেন সেখানেই! ফলে, এত আয়োজন সত্ত্বেও বিকট আওয়াজে কেটে গেল পুজোর সুর। কলেজ মোড়ে এসেও শব্দদানবের দাপটে পুজো না দেখেই ফিরে গেলেন অনেকে।
কলেজ মোড়ের কিছু দূরে কোতোয়ালি থানা। গভীর রাত পর্যন্ত এত জোরে সাউন্ড বক্স বাজলেও পুলিশ-প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করেনি। ক্ষুব্ধ শহরবাসী তাই শব্দদূষণ রোধে পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন। মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক সুরজিৎ রায় বলেন, “বারবার উদ্যোক্তাদের অনুরোধ করা হয়েছে বিকট শব্দে সাউন্ড বক্স না-বাজাতে। কিন্তু, কেউ কথা শোনেনি। পুজো উদ্যোক্তাদের আরও সচেতন হতে হবে।”
গভীর রাত পর্যন্ত বক্স বাজা সত্ত্বেও কেন তা বাজেয়াপ্ত করা হল না?
উত্তর এড়িয়ে কোতোয়ালি থানার আইসি জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রবিবার সকাল থেকেই কলেজ মোড়ে নজরদারি চলেছে। বেশ কয়েকটি পুজো কমিটিকে সতর্ক করা হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় স্পিকার খোলা হয়েছে।”
পুজোর মণ্ডপে শব্দদূষণের প্রতিবাদ। ছবি: কিংশুক আইচ।
কলেজ মোড়ের পুজোয় শব্দদূষণের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। প্রতি বছরই পুলিশ-প্রশাসন ‘দেখছি-দেখব’ বলে দায় এড়িয়ে যায়। আস্কারা পেয়ে গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চগ্রামে সাউন্ড বক্স বাজায় পুজোকমিটিগুলি। সপরিবারে পুজো দেখতে এসেও কানে হাত চাপা দিয়ে ফিরে যেতে হয় লোকজনদের। শহরের শরৎপল্লি এলাকার বাসিন্দা কৌস্তভ রায় বলেন, “এ ভাবে পুজো করার থেকে না-করাই ভাল। এত আওয়াজের মধ্যে পুজো দেখা অসম্ভব।”
এরই মধ্যে কলেজ মোড়ের একাংশ পুজো কমিটি এ বার মন্ডপে সাউন্ড বক্স ব্যবহার না-করে শব্দদূষণের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। সেই তালিকায় রয়েছে রেড ক্যাসেল, বিদ্রোহী গোষ্ঠী, ব্যতিক্রম, প্রগতি, অগ্নিকন্যা ক্লাব। রেড ক্যাসেল ক্লাবের এক সদস্য বলেন, “এত জোরে সাউন্ড বক্স বাজলে দর্শকেরা পুজো দেখবেন কী করে? আমরা শব্দদূষণের বিরুদ্ধে। তাই সাউন্ড বক্স ব্যবহার করিনি।” অগ্নিকন্যা ক্লাবের এক সদস্য বলেন, “কলেজ মোড়ের পুজো সত্যিই অন্য রকম। শহর ও তার আশপাশের এলাকা থেকে বহু মানুষ এখানে আসেন। কিন্তু, শব্দের তাণ্ডবে অনেকে পুজো দেখতে পারেন না। তাই আমরা সাউন্ড বক্স না-ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এ বার।”
কলেজ মোড়ের পুজোর এই ‘পরিবর্তন’কে স্বাগত জানিয়েছেন শহরবাসী। ‘পরিবর্তন’ আসছে মডেল প্রদর্শনেও। কলেজ মোড়ের সরস্বতী পুজোর মঞ্চে রাজনৈতিক চাপানউতোরে বীতশ্রদ্ধ শহরবাসী। তা বুঝেই সম্ভবত ‘দ্য সুপিরিয়র ক্লাবে’র পুজোয় এ বার মাদকদ্রব্যের ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরা হয়েছে। আগামী দিনে অন্য পুজোর উদ্যোক্তারাও রাজনৈতিক আকচা-আকচির বদলে সমাজ সচেতনতামূলক বিষয় মণ্ডপে ফুটিয়ে তুলবেএমনটাই আশা শহরবাসীর।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.