সঙ্ঘ ফের আন্দোলনে নামাতে চায় অণ্ণাকে
ণ্ণা হজারে কংগ্রেসের কৌশলে কোণঠাসা। কিন্তু এই পরিস্থিতির জন্য খোদ অণ্ণাই দায়ী বলে মনে করছেন আরএসএস নেতৃত্ব। খুশি নন স্বয়ং সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতও। সঙ্ঘ নেতৃত্ব চাইছেন, লোকসভা ভোটের আগে আরএসএসের প্রতি ছুতমার্গ ত্যাগ করে জয়প্রকাশ নারায়ণের মতো দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলুন অণ্ণা। যোগগুরু রামদেব-সহ বিভিন্ন শিবিরও তাতে একজোট হোক।
রামদেব কিংবা অণ্ণা যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছিলেন, তখন আরএসএস শুধু প্রকাশ্যে তার সমর্থনই করেনি, তাঁদের আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণও করেছিল। কিন্তু কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহের মতো নেতারা যখন অণ্ণার সঙ্গে আরএসএসের সম্পর্ক নিয়ে খোঁচা দেন, অণ্ণাও কিছুটা গুটিয়ে গিয়ে সঙ্ঘের বিরুদ্ধেই মন্তব্য করতে শুরু করেন। আরএসএস নেতৃত্ব মনে করছেন, অণ্ণার এই আচরণে আন্দোলনের মূল লক্ষ্য যে ‘দুর্নীতি প্রতিরোধ’, সেটাই হারিয়ে গিয়েছে। তার বদলে এই আন্দোলন ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ না ‘সাম্প্রদায়িক’, সেই বিতর্কই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। এতে আখেরে লাভ হয়েছে কংগ্রেসেরই। মুখ থুবড়ে পড়েছে অণ্ণার আন্দোলনও। মোহন ভাগবত তথা আরএসএস নেতৃত্ব এই পরিস্থিতির জন্য অণ্ণাকেই দায়ী করছেন। তাঁরা মনে করছেন, অণ্ণা যদি প্রকাশ্যেই আরএসএসের বিরুদ্ধে সরব হন, তবে তাঁর আন্দোলনে সঙ্ঘের সক্রিয় অংশগ্রহণ অসম্ভব। মুম্বইয়ে অণ্ণার অনশন ব্যর্থ হয়েছে এই কারণেই।
তবে এখানেই ‘সম্পর্কে’ ইতি টানতে চাইছে না সঙ্ঘ। আরএসএস সূত্রের খবর, সঙ্ঘ এখন বিভিন্ন দূতের মাধ্যমে অণ্ণার কাছে বার্তা পাঠাচ্ছে, যাতে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের আন্দোলনে ঝাঁপান এই সমাজকর্মী। আর তাতে সামিল হোক রামদেব-সহ বিভিন্ন শক্তি। রামদেবের জনভিত্তি রয়েছে, আর অণ্ণার ব্র্যান্ড। দু’জনে মিলে আন্দোলন ফের চাঙ্গা করলে ভোটের আগে কংগ্রেসকে দুর্বল করা সম্ভব হবে।
কংগ্রেসের কৌশলে রামদেবও এখন অনেকটা কোণঠাসা। তিনিও এখন পুরনো তিক্ততা ভুলে অণ্ণার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করছেন। সূত্রের খবর, তিন দিন আগেই অণ্ণাকে ফোন করেছিলেন রামদেব। অসুস্থ অণ্ণার জন্য আয়ুর্বেদের দাওয়াই দেওয়ারও প্রস্তাব দেন তিনি। যে সব রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে, সেখানেও এক সঙ্গে প্রচার করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে অণ্ণাকে।
সঙ্ঘের এক শীর্ষ নেতার কথায়, জয়প্রকাশ নারায়ণ (জেপি) যখন দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলন করেছিলেন, তখনও আরএসএস-জনসঙ্ঘ তাতে সমর্থন করেছিল। তা নিয়ে জেপি-র ছুতমার্গ ছিল না। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করাটাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য। তাতে সকলেই যোগ দিতে পারে। অণ্ণার আন্দোলনও দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তাই ছুতমার্গ রাখা উচিত নয় তাঁরও। কংগ্রেসের আক্রমণের মুখে উল্টো সুর গাইলে চলবে না। বরং বলা উচিত, তাঁর আন্দোলনের লক্ষ্য দুর্নীতি দূর করা। সেই আন্দোলনে যে কেউ সামিল হতে পারে। এমনকী কংগ্রেসও।
মুখে এ কথা বললেও অণ্ণাকে এই পরামর্শ দিয়ে কার্যত কংগ্রেস-বিরোধী মঞ্চকেই আরও শক্ত করতে চাইছে সঙ্ঘ। কিন্তু অণ্ণা শিবিরের পাল্টা প্রশ্ন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে গেলে শুধু কংগ্রেস নয়, বিজেপির দুর্নীতির বিরুদ্ধেও সরব হতে হবে। বিজেপি- শাসিত যে সব রাজ্যে দুর্নীতি হচ্ছে, সে ব্যাপারেও চুপ করে থাকা অসম্ভব অণ্ণার পক্ষে। সে ক্ষেত্রে সঙ্ঘের বক্তব্য, দলগত ভাবে বিজেপিও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। কর্নাটকে ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসার পর মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে ভোট-অঙ্কের বাধ্যবাধকতায় বাবুসিংহ কুশওয়াহাকে বিজেপিতে নেওয়া হলেও তাঁর সদস্যপদ স্থগিত রাখা হয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে দেশে কংগ্রেসের দুর্নীতিই সব চেয়ে আলোচিত বিষয়। ফলে আন্দোলনের অভিমুখ সে দিকেই থাকা উচিত। জেপি-র আন্দোলনে সকলে সামিল হলেও কার্যত তা কংগ্রেস-বিরোধিতাতেই পর্যবসিত হয়েছিল। অণ্ণাকেও এখন সেই রূপে দেখতে চায় আরএসএস।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.