বাগুইআটি-কাণ্ড
‘বেপাত্তা’ সেই যুবককে সন্দেহে রেখেই তদন্ত
মোবাইলের নথি ও ‘সন্দেহভাজন’ এক যুবকের নাম। বাগুইআটির ফ্ল্যাটে মা-মেয়ে খুনের ঘটনায় আপাতত এই সূত্র ধরেই রহস্যভেদের চেষ্টা করছে পুলিশ। নিহত বধূ সঙ্গীতা লোহারুকা ও তাঁর স্বামী অরুণের ‘ঘনিষ্ঠ’ রাজেশ ভরতিয়া নামে ওই যুবক বৃহস্পতিবার রাতে ‘নাইট ডিউটি’ আছে বলে বাড়ি থেকে বেরোন। পুলিশের অনুমান, সঙ্গীতাদেবী ও তাঁর ১১ বছরের মেয়ে ঈশাকে কুপিয়ে খুনের ঘটনাটি এর কয়েক ঘণ্টা বাদে ঘটে। পুলিশ জানায়, সঙ্গীতাদেবীর বাবা সত্যনারায়ণ অগ্রবাল রাজেশের নামে পুলিশে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তদন্তকারী এক অফিসারের কথায়, “রাজেশের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, তিনি মাঝেমধ্যেই ‘নাইট ডিউটি’ আছে বলে রাতে বাইরে থাকতেন। বৃহস্পতিবার রাত থেকে তাঁর হদিস নেই। রাজেশের মোবাইলের রেকর্ড ঘেঁটেও বোঝার চেষ্টা করছি ওই রাতে তিনি কোথায় ছিলেন।” বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার রবিবার বলেন, “এক সঙ্গে মা ও মেয়ে খুন হলেন, আর তার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে তাঁদের পরিচিত এক যুবক বেপাত্তা এই দু’টি বিষয়ের মধ্যে যোগ থাকতে পারে। এই সূত্র ধরেই তদন্ত চলছে।” পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, “খুনের পরে ফ্ল্যাটে তালা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে যে তালাটি আততায়ী ব্যবহার করেছিল, লোহারুকা পরিবারের ঘনিষ্ঠেরাই তা ব্যবহার করেন।” পুলিশের সন্দেহ, শুক্রবার কাকভোরে সঙ্গীতাদেবীকে কুপিয়ে খুন করে সরে পড়ার মতলব ছিল আততায়ীর। কিন্তু সম্ভবত মায়ের চিৎকারে ঈশার ঘুম ভেঙে যায়। এক পুলিশকর্তার কথায়, “আততায়ীকে চিনে ফেলেছিল বলেই ঈশাকে খুন করা হয়।” প্রতিবেশীদের থেকেও পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই সকালেই ফ্ল্যাটের ভিতরে ঈশার চিৎকার শুনে কয়েক জন দরজার বাইরে ভিড় করেন। তখনও ফ্ল্যাট ভিতর থেকে বন্ধ। কিন্তু দ্রুত ঈশা ‘শান্ত’ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা সেখান থেকে চলে যান।
এ দিন দুপুরে হাতিয়াড়ার বাসিন্দা রাজেশের স্ত্রী রাধাদেবী ও শ্যালক শ্যামসুন্দর অগ্রবালকে নিউ টাউন থানায় ডেকে দীর্ঘক্ষণ কথা বলে পুলিশ। বিধাননগরের কমিশনার রাজীব কুমারও তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, তপসিয়ায় এক বস্ত্র বিপণন সংস্থায় প্যাকেজিং-এর কাজ করেন রাজেশ। রাজেশের ‘পরিচিত’দের কয়েকটি সূত্র ধরে পুলিশ তাঁর খোঁজ করছে। এখন রাজেশের দু’টি মোবাইল বন্ধ থাকলেও বৃহস্পতিবার রাত বা শুক্রবার সকালে মোবাইলের অবস্থান জরিপ করে তাঁর গতিবিধি জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। রাজেশ শুক্রবারও বাড়ি না-ফেরায় শনিবার সকালে নিউ টাউন থানায় ‘মিসিং ডায়েরি’ করেন তাঁর স্ত্রী। এর কয়েক ঘণ্টা বাদেই সঙ্গীতাদেবীর স্বামী অরুণ রাজস্থান থেকে কলকাতায় ফেরার পরে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে বাগুইআটির ফ্ল্যাটের তালা খোলে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, সঙ্গীতা-অরুণ ও রাজেশরা আগে লেকটাউনে এক পাড়ায় থাকতেন। ১১ মাস আগে বাগুইআটির অশ্বিনীনগরের ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিতে যাওয়ার সময়ে রাজেশকে সঙ্গে নেন অরুণবাবু। তখন রাজেশকে ‘ভাইয়া’ বলে পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি। ওই সময়েই রাজেশও সপরিবার হাতিয়াড়ার হেলাবটতলায় যান। পুলিশের দাবি, ইদানীং ব্যবসা ততটা ভাল যাচ্ছিল না অরুণের। মাঝেমধ্যেই রাজস্থানে যেতেন তিনি। অরুণের ‘অনুপস্থিতি’তে দীর্ঘক্ষণ সঙ্গীতাদেবীর সঙ্গে এক ফ্ল্যাটে থাকতেন রাজেশ। সঙ্গীতা-অরুণরা নতুন ফ্ল্যাট কেনার কথাও ভাবছিলেন। রাজেশকে নিয়ে সঙ্গীতা সম্প্রতি কয়েকটি ফ্ল্যাট দেখেন বলে পুলিশ জেনেছে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.