অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা নিষ্ক্রিয় রাখার অভিযোগ উঠল ই এম বাইপাস সংলগ্ন কালিকাপুরের একটি বহুতলের বিরুদ্ধে। শনিবার মাঝরাতে ওই আবাসনের বৈদ্যুতিক তারের বাক্সে আগুন লেগে আতঙ্ক ছড়ায়। পরে সেখানকার আবাসিকেরাই স্বীকার করেন, অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্রে কাজ চলছিল বলে ব্যবস্থাটি নিষ্ক্রিয় করা ছিল। তাই দুর্ঘটনার সময়ে তা কাজ করেনি। এই ঘটনায় ওই বহুতলের বিরুদ্ধে রবিবার গরফা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে দমকল।
দমকল জানায়, বহুতলের ন’তলায় একটি বৈদ্যুতিক তারের বাক্সে প্রথমে আগুন লাগে। ওই বাড়ির বৈদ্যুতিক তারগুলি একটি কংক্রিটের ‘ডাক্ট’ দিয়ে উঠে গিয়েছে। ফলে, খুব কম সময়ে ন’তলার আগুন ওই ‘ডাক্ট’-এর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ১৭তলা পর্যন্ত। ঘটনাস্থলে যায় দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন ও একটি মই। আবাসনের এক বাসিন্দা জানান, বৈদ্যুতিক তারের বাক্সের তিন দিক কংক্রিটের এবং সামনে একটি কাঠের দরজা। সেটির ফাঁক দিয়েই আগুন দেখতে পান তাঁরা। দরজা বন্ধ থাকায় ডাক্টে হাওয়া ঢুকতে পারেনি। না-হলে বড় ধরনের বিপদ ঘটতে পারত বলে মনে করেন তিনি। |
দমকল সূত্রের খবর, ওই বহুতলে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু শনিবার রাতে তা নিষ্ক্রিয় করে রাখা ছিল। ফলে দুর্ঘটনার সময়ে আগুন নেভানোর সেই ব্যবস্থা কোনও কাজই করেনি। সে কারণেই ওই বহুতলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়।
তবে, তাঁদের তরফে কোনও গাফিলতির অভিযোগ মানতে নারাজ ওই বহুতলের আবাসিক কমিটির সম্পাদক সুভাষ কুইল্যা। তিনি বলেন, “দমকল এটিকে বড় ঘটনা হিসেবে দেখাতে চাইছে। কিন্তু ঘটনাটি নেহাতই ছোট। বর্তমানে আমাদের হাইড্র্যান্টের দু’টি পাইপে মেরামতির কাজ চলছে বলে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা কাজ করেনি।” তবে, আগুন যে হেতু বৈদ্যুতিক তারের বাক্সে লেগেছিল, তাই ‘হাইড্র্যান্ট সিস্টেম’ সক্রিয় থাকলেও তা ব্যবহার করা যেত না বলে তাঁর দাবি। ওই আবাসনের অন্য বাসিন্দারা অবশ্য জানান, সম্প্রতি অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্রের আধুনিকীকরণের কাজ হচ্ছিল। সেই কারণে পুরো ব্যবস্থাটি বন্ধ রাখা ছিল। ব্যবস্থাটি অংশত চালু রাখলে এ অভিযোগ উঠত না বলে তাঁদের দাবি।
ওই বহুতলের বাসিন্দাদের দাবি, দমকল আসার আগেই তাঁরা আগুন নিভিয়ে ফেলেন। তাঁদের অভিযোগ, দমকলকর্মীরা এলেও তাঁদের কাজের সমন্বয় ছিল না। অভাব ছিল সরঞ্জামেরও। এই অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি দমকলকর্তারা। একই সঙ্গে ওই আবাসনের এক বাসিন্দার অভিযোগ, আগুন লাগার সময়ে ‘১০০’ ডায়ালে ফোন করলে যন্ত্র মারফত উত্তর মেলে। এ বিষয়ে পুলিশ জানায়, ‘১০০’ ডায়ালে কখনওই যন্ত্র মারফত উত্তর দেওয়া হয় না। সম্ভবত যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি পুলিশের। |