|
|
|
|
শর্ত: প্রশাসন, পরিকাঠামোর উন্নতি ও স্বচ্ছতা |
ভারতেই নজর আন্তর্জাতিক লগ্নিকারীদের, দাবি সমীক্ষায় |
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
বিনিয়োগের ঠিকানা হিসেবে আন্তর্জাতিক লগ্নিকারীদের কাছে এখনও আকর্ষণ তীব্র। তবে সেই টান আরও বাড়াতে চাই সরকার পরিচালনার দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও পরিকাঠামোর উন্নতি। লগ্নির ক্ষেত্র হিসেবে ভারতের বাজারের চাহিদা সম্পর্কে তাদের সমীক্ষায় এমনই এক ছবি উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা সংস্থা আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং।
সমীক্ষায় স্পষ্ট ধরা পড়েছে, এই মুহূর্তে ভারতে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি টানার মূল মন্ত্রই হল, ওই তিন শর্ত পূরণ। তা হলেই ইউরোপ ও আমেরিকা-সহ বিশ্ব বাজারের আর্থিক অনিশ্চয়তা ভবিষ্যতে এ দেশে লগ্নির নতুন সুযোগ তৈরি করে দেবে।
৫০০-রও বেশি বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাকে নিয়ে করা এই সমীক্ষাটিতে ৬০ শতাংশই জোর দিয়েছে দেশে সরকার পরিচালনার দক্ষতা এবং কাজের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বাড়ানোর উপর। আর প্রায় ৭৫% সংস্থা চায় বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত ‘তৈরি’ পরিকাঠামো। |
|
এমনকী দেশে আর্থিক বৃদ্ধি কমলেও বেশির ভাগ বিদেশি সংস্থাই যে ভারতে ভবিষ্যতে লগ্নিতে উৎসাহী, তার প্রমাণ মিলেছে ২০১১-র নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির পরিসংখ্যানেও। এই সময়ে বিদেশি প্রকল্পের সংখ্যা ২০১০-এর ৬৯১ থেকে ২৫% বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬৪। আর মোট লগ্নিও ৪,৪৮৭ কোটি ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৫,০৮১ কোটি। আগামী দিনেও এই ধারা বজায় থাকবে, মনে করছে আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং।
বস্তুত, দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং আর্থিক বৃদ্ধি যে ভবিষ্যতে বাড়বে, তা নিয়ে এক প্রকার নিশ্চিত বেশির ভাগ সংস্থাই। বর্তমানে কিছুটা থমকালেও বৃদ্ধির হার বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় পদক্ষেপের উপর আস্থা রাখছে সংস্থাগুলি। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া এক তৃতীয়াংশ সংস্থাই মনে করছে চলতি দশকের শেষে আর্থিক বৃদ্ধি দুই অঙ্ক ছোঁবে। আর সে ক্ষেত্রে উৎপাদন শিল্প মুখ্য ভূমিকা নিতে চলেছে বলে ধারণা ২৫% সংস্থার। সে ক্ষেত্রে বিশ্বে এই শিল্পে প্রথম তিনের মধ্যে জায়গা করে নিতে পারে ভারত, ধারণা তাদের। ২০১১-এর জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে লগ্নির অঙ্কে প্রায় ৭৮ শতাংশই দখল করেছে উৎপাদন শিল্প। অভ্যন্তরীণ পরিবহণ ও সরবরাহে উন্নতি হলে তা আরও বাড়বে বলেই মনে করছে ৬৫% সংস্থা। তবে এর জন্য শিল্পের জন্য বিদ্যুতের খরচ কমানো, বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে উন্নতি এবং নিয়ন্ত্রণের রাশ আলগা করতে হবে বলে জানিয়েছে তারা।
সমীক্ষা অনুসারে, এশিয়ার মধ্যে নিজেদের দেশে বিদেশি লগ্নি টানার ব্যাপারে চিনকে ভারতের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করছে ৫৫% সংস্থা। গত বছরের ৬০ শতাংশের তুলনায় অনেকটাই কম। আর আমেরিকার ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ৮%। গত বছরে ছিল ১৭%। মূলত সেখানকার আর্থিক অবস্থাই ভারতকে এতটা এগিয়ে রাখছে বলে জানিয়েছে আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং। তবে ভারতে লগ্নির ক্ষেত্রে সিংহভাগ সংস্থাই এশিয়ার মধ্যে চিন ও দক্ষিণ কোরিয়া এবং বিশ্বে আমেরিকার। সব মিলিয়ে এ দেশকে পাখির চোখ করেই এগোচ্ছে বিদেশি সংস্থাগুলি, দাবি সমীক্ষায়। এমনকী সে জন্য নিজেদের পরিকল্পনা ছকে ফেলতে এখন থেকেই কোমর বাঁধছে তারা। |
|
|
|
|
|