নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
বকেয়া বিল না মেটানোয় রামপুরহাট পুরসভার ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিল রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি। শনিবার সকালে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির রামপুরহাট গ্রুপ সাপ্লাইয়ের সহকারী বাস্তুকার সূর্যপ্রকাশ সিংহ বলেন, “রামপুরহাট পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডে পথবাতি, প্রশাসনিক ভবন-সহ পানীয় জল সরবরাহের জন্য অপারেটিং বাবদ মোট ৬৭ লক্ষ টাকার বিদ্যুৎ বিল এক বছরের বেশি সময় ধরে বাকি পড়ে আছে। এ ব্যাপারে একাধিক বার সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু বিল শোধ করার চেষ্টা করছে না পুরসভা। সে জন্য প্রাথমিক ভাবে পুরসভার প্রশাসনিক ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এর পর যদি পুরসভা বকেয়া বিল পরিশোধ না করে, তা হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
পুরপ্রধান, তৃণমূলের নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “পুরসভায় ক্ষমতায় আসার আগে থেকে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছিল। বর্তমানে পুরসভায় মাসিক চার লক্ষ টাকার বেশি বিল আসে। সরকার থেকে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য তিন মাস অন্তর চার লক্ষ টাকা পাওয়া যায়। সেই মতো আমরা বিল পরিশোধ করে থাকি। এ ক্ষেত্রে পুরসভার তরফ থেকে কী করা যায় দেখছি।”
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশাসনিক ভবনের এক লক্ষের কিছু বিল এক বছর ধরে বকেয়া পড়ে আছে। আর ১৭টি ওয়ার্ডে পথবাতি বাবদ পঞ্চান্ন লক্ষের কিছু বেশি, জল সরবরাহের জন্য আপারেটিং এবং পুরসভার অন্যান্য অফিস বাবদ ১০ লক্ষ টাকার বিল বাকি আছে। এ দিকে, বিদ্যুৎ বিল না মেটানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রামপুরহাট পুরসভার দু’টি রাজনৈতিক দলের কাউন্সিলর। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সুপর্ণা চৌধুরীর ক্ষোভ, “তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা ১৯ মাস ধরে ক্ষমতায় আছে। নিজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য পুরসভা ইতিমধ্যে ট্রেড লাইসেন্স ফি দ্বিগুণ করেছে। নতুন, পুরনো বাড়ির নকশা তৈরি জন্য ডেভালপমেন্ট ফি বাড়ানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, জায়গা পরিমাপ করার জন্য ২২০ থেকে ৪০০ টাকা করা হয়েছে এবং বাড়ি বাড়ি শৌচাগার পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে ১২০০ টাকার বদলে ২০০০ হাজার টাকা করা হয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, “এত করেও পুরবাসীকে ঠকাচ্ছে পুরসভা।”
তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, সিপিএমের অসীম মজুমদারের অভিযোগ, “১৯ মাস ধরে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা পরিকল্পনাহীন ভাবে বোর্ড চালাচ্ছে। এর ফলে ভবিষ্যতে পুরবাসী বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য রাস্তায় আলো পাবে না।” পুরপ্রধান অবশ্য বলেন, “কাউন্সিলরেরা কী করে এ সব কথা বলছেন, বুঝতে পারছি না। পুরসভা যে সব ক্ষেত্রে কর বাড়িয়েছে, তা উন্নয়নের স্বার্থে। তবে যে হারে বিদ্যুৎ বিল আসছে, কর আদায় তার তুলনায় অনেক কম। কী ভাবে বিল মেটানো যায়, তা সচিবের কাছে কাছে জানতে চেয়েছি।” |