আসানসোলের ডুবুরডি চেকপোস্ট থেকে পানাগড়। ২ নম্বর জাতীয় সড়কের এই বিস্তীর্ণ অংশে মাঝে মধ্যেই ঘুরতে দেখা যেত লাল-সাদা রঙের অ্যাম্বুল্যান্স দু’টিকে। হঠাৎ দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত জখম যাত্রীদের নিকটবর্তী হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়াই ছিল এদের কাজ। এছাড়া দুর্ঘটনায় জখমদের উদ্ধার করতে সহযোগিতার জন্য রয়েছে দু’টি পেট্রোল ভ্যান এবং দু’টি ক্রেন। কিন্তু নতুন বছরের শুরু থেকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বিশেষ এই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন বাসিন্দারা। যদিও দ্রুত পরিষেবা শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা হিসাবে পরিচিত জাতীয় সড়কের এই অংশ। বছর দু’য়েক আগে কেন্দ্রীয় ভূতল পরিবহণ মন্ত্রক দুর্ঘটনা রোধে জাতীয় সড়কের পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে বিশেষ এক কর্মসূচি নিয়েছিল। দুর্ঘটনা এড়াতে কী ভাবে জাতীয় সড়ক পারাপার করতে হবে, সিগন্যালের প্রয়োজনীয়তা-সহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে গ্রামবাসীদের অবহিত করেছিলেন দফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মী-আধিকারিকেরা। নতুন বছরের শুরু থেকে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় পৃথক ট্রাফিক পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে। |
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার মাঝ বরাবর চলে গিয়েছে জাতীয় সড়ক। বিশেষ করে জাতীয় সড়কের মোড়গুলির প্রায় প্রতিটিই বিপজ্জনক। তাই ওই এলাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজার উদ্যোগ হয়েছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ। কিন্তু দুর্ঘটনার পরে উদ্ধার কাজ চালানোর জাতীয় সড়কের বিশেষ পরিষেবাটিই বন্ধ হয়ে স্বভাবতই সমস্যা হচ্ছে।
সিটি সেন্টারের বাসিন্দা অনিকেত সাধু, অঞ্জনা ভৌমিকেরা বলেন, “আগে ডিভিসি মোড়ের কাছে একটি অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে থাকত। এখন তো আর দেখি না। অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, দুর্ঘটনা ঘটলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ওই পরিষেবা খুব কাজে আসে।” পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মী অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী বলেন, “দ্রুত পরিষেবা চালুর দাবি জানিয়ে আমরা ৩২ জন কর্মী ইতিমধ্যেই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করেছি।”
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, হঠাৎ কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তাঁদের এই পরিষেবাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। জাতীয় সড়ক থেকে থানার দূরত্ব বেশি হওয়ায় দুর্ঘটনাস্থলে পুলিশের পৌঁছতে দেরি হয়। তখন ওই অ্যাম্বুল্যান্স ও পেট্রোল ভ্যানগুলি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে। কিন্তু এই পরিষেবা গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাঁদের দাবি, একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে ওই পরিষেবা চালানো হয়। ওই সংস্থার সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছে। দ্রুত নতুন করে বরাত দেওয়া হবে।
পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত এক কর্মী জানান, জাতীয় সড়কের সঙ্গে চুক্তির তোয়াক্কা না করে ওই বেসরকারি সংস্থা মাঝে মধ্যেই একটি অ্যাম্বুল্যান্স তুলে নেয়। তাতে কাজের অসুবিধা হয়। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে এক আধিকারিক জানান, এমন যাতে আর না হয় তা দেখা হবে। |