তৃণমূলে অন্তর্দ্বন্দ্ব, বোমায় দু’জন জখম আওগ্রামে
তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে শনিবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মঙ্গলকোটের আওগ্রাম। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রাতে ওই গ্রামে দফায় দফায় বোমাবাজি হয়েছে। বোমার স্প্লিন্টার লেগে আহত ২ জন তৃণমূল কর্মীকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদের নাম শেখ লালু ও শেখ ইসলাম। উভয়েই গ্রামের দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা। রবিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এসডিপিও (কাটোয়া) ধ্রুবজ্যোতি দাস বলেন, “গ্রামে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।” তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আওগ্রামের ‘আদি’ তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী আশাদুল্লা শেখের গোষ্ঠীর সঙ্গে ‘নব’ তৃণমূল কর্মী সাহাবুদ্দিন শেখের গোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের বিবাদ। বেশ কিছু দিন ধরে ‘তোলা আদায়’কে কেন্দ্র করে ওই দুই গোষ্ঠীর বিবাদ চরমে ওঠে। তারই জেরেই শনিবার রাতে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি হয়।
শেখ লালু। নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমানে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে শুয়ে রবিবার শেখ লালু বলেন, “আমি ভোরে গরুকে খাবার দিতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ বোমাবাজি শুরু হয়ে যায়। আমার মাথায় বোমা এসে পড়ে। তার পরেই জ্ঞান হারাই।” ওই গ্রামেরই বাসিন্দা হিরা শেখ শেখ লালুর আত্মীয়। তাঁর দাবি, “গ্রামে কয়েক দিন ধরেই চাপা উত্তেজনা ছিল। ১০০ দিনের কাজের জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কাজের নিয়ন্ত্রণ কাদের হাতে থাকবে, তা নিয়েই দক্ষিণপাড়া আর উত্তরপাড়ার তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে বচসা চলছিল। এর জেরে গত কয়েক দিন গ্রামে বোমাবাজিও হয়েছে।”
দু’টি গোষ্ঠীই একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। সাহাবুদ্দিন গোষ্ঠীর অভিযোগ, বাইরে থেকে লোকজন এনে এ দিন রাতে তাঁদের উপরে চড়াও হয় আশাদুল্লার লোকেরা। ব্যাপক বোমাবাজি করে তারা। এতে তাঁদের দুই সমর্থক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। আহতদের মধ্যে শেখ ইসলাম নামে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিজেকে ‘তৃণমূল নেতা’ দাবি করে সাহাবুদ্দিন এ দিন বলেন, “গ্রামের গরিব মানুষকে জমি থেকে উৎখাত করার হুমকি দিয়ে তোলা আদায় করছে আশাদুল্লা ও জাহিরুল শেখের লোকজন। এর প্রতিবাদ করাতেই ওরা আমার বাড়িতে চড়াও হয়। বোমাবাজি করে। আমাদের এক সমর্থকের খড়ের পালুইতে আগুনও লাগিয়েছে ওরা।”
অন্য দিকে, সাহাবুদ্দিনের লোকজনের বিরুদ্ধেই তোলাবাজির অভিযোগ এনেছে আশাদুল্লারা। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামের বেনিফিশিয়ারি কমিটির কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা তোলা চেয়েছে সাহাবুদ্দিনেরা। ওই টাকা দিতে বাধা দেওয়ার জন্যই শনিবার রাত ৮টা নাগাদ তাদের লক্ষ করে বোমাবাজি করেছে তারা। আশাদুল্লার অভিযোগ, “গ্রামে সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য মেহের আলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সাহাবুদ্দিন আমাদের উপরে চড়াও হয়। কারণ, সাহাবুদ্দিন আগে তৃণমূল করলেও কয়েক মাস ধরে ও সিপিএম করছে।”
মঙ্গলকোটের সিপিএম বিধায়ক শাহজাহান চৌধুরী অবশ্য বলেন, “সাহাবুদ্দিন তৃণমূল কংগ্রেসেরই কর্মী। দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঢাকতে এখন মিথ্যা অভিযোগ করছে ওরা।” মঙ্গলকোট ব্লকের তৃণমূল কোর কমিটির নেতা অপূর্ব চৌধুরীর কথায়, “পুলিশকে বলেছি, কোনও দল না দেখেই দোষীদের গ্রেফতার করুন। কঠোর হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.