দেবদূত ঘোষ ঠাকুর • কলকাতা |
অ্যাডিলেডে ভারতীয় ইনিংসের মতো হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল না শীতের ইনিংস।
মাঝে মাঝে ‘স্লো রান রেট’ হলেও শীত যে এ বার লম্বা ইনিংস গড়বে, তা আবহবিদদের কাছে
আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রান রেটে গতি তুললেও পশ্চিমী ঝঞ্ঝা কিংবা বিপরীত ঘূর্ণাবর্তের মতো আবহাওয়াজনিত ‘গুগলি’তে মাঝেমধ্যেই থমকে গিয়েছে শীত। গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা বলছে, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহের পর কলকাতায় আর শীত থাকে না। সেই সময়টা মধ্য মাঘ হলেও। তবে এ বার জানুয়ারি গড়িয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেও ব্যাটিং করবে শীত, তার ইঙ্গিত পেয়ে গিয়েছেন আবহবিদেরা। দিল্লির মৌসম ভবন জানাচ্ছে, গোটা উত্তর এবং মধ্য ভারতে এ বার শীত থাকবে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত। তাই, দেশের ওই অঞ্চলে (উত্তর এবং মধ্য ভারত) শীত দীর্ঘস্থায়ী হবে। তার প্রভাব দক্ষিণ এবং পূর্ব ভারতের উপর পড়বে। |
গত তিন দিন ধরে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাসে ঘোরাফেরা করছে। যা এ সময়ের স্বাভাবিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রার থেকে ১ ডিগ্রি কম। তা হলে, শীত-শীত ভাবটা নেই কেন? আবহবিদেরা বলছেন, ওড়িশা উপকূলে একটি বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত থাকার ফলে বাতাসে জলীয় বাষ্প ঢুকছে। আর্দ্রতা বেশি হওয়ার ফলে উত্তুরে হাওয়ার দাপট কমে গিয়েছে। তাই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কম হলেও শীত-শীত ভাবটা মালুুম হচ্ছে না। বেলা পড়তেই গরম জামা গায়ে রাখা যাচ্ছে না। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “এর পাশাপাশি উত্তর ভারত থেকে আসা একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঝাড়খণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। ওই রাজ্যে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে সেই ঝঞ্ঝার কোনও কুপ্রভাব দক্ষিণবঙ্গে পড়বে না।”
গোকুলবাবুর পূর্বাভাস, আগামী কাল, সোমবারের পর বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত এবং পশ্চিমী ঝঞ্ঝা, দু’টোই দুর্বল হয়ে পড়বে। তার ফলে ফের উত্তুরে হাওয়ার দাপট বাড়বে।
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমবে গোটা দক্ষিণবঙ্গে। পাশাপাশি আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, শীতের চতুর্থ ইনিংস কতটা স্থায়ী হবে এবং তাতে শীত ‘স্লগ ওভারে’র মতো ব্যাট করবে কি না, সেটা নির্ভর করছে মধ্য এবং উত্তর ভারতের আবহাওয়া কেমন থাকে, তার উপর। অর্থাৎ, বঙ্গোপসাগরে কোনও ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ ভিলেনরূপে হাজির না হলে, শীতের চতুর্থ ইনিংসটাই সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে আশা আবহবিদদের। |