সাত জঙ্গি সংগঠনের হুমকি, মাওবাদীদের ভোট বয়কটের ডাক ও নাগা জঙ্গিদের দাপট সত্ত্বেও আজ মণিপুরে বিধানসভা নির্বাচনে ভোট পড়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ। তবে বুথ দখলের চেষ্টা, হাঙ্গামা ও রক্তপাত এড়ানো যায়নি। ভয় দেখানো হয় ভোটারদের। বুথে ঢুকে গুলি চালিয়েছে জঙ্গিরা। চান্দেল জেলায় এক সিআরপি জওয়ান ও এক নাবালিকা-সহ সাতজনের মৃত্যু ঘটেছে হিংসাত্মক কাণ্ডে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুই ভোটকর্মীও। মণিপুরের বাকি জেলাগুলিতে ভোটপর্ব অবশ্য মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবেই মিটেছে।
আজ সকাল ৭টা থেকে ভোটপর্ব শুরু হয়। বেলা ১১টার মধ্যেই, ২৩৫৭টি বুথে, ১৭,৪১,৫৮১ জন ভোটারের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট দিয়ে দেন। মোট ২৭৯ জন প্রার্থী দশম বিধানসভা নির্বাচনে লড়ছেন। থৌবালের খাংগাবক কেন্দ্রে, আথোকপাম প্রাথমিক স্কুলে প্রথম ভোটার ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহ ও তাঁর স্ত্রী তথা বিধায়ক লালধনী দেবী। ইবোবি নিয়ে, পাশের থৌবাল কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছেন। তবে সেখানকার ভোটার তালিকায় তাঁর নাম নেই।
কংগ্রেসই একমাত্র দল যারা ৬০ টি কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস ৪৭টি, পাঁচ বিরোধী দলের জোট পিডিএফ ৪৩টি, মণিপুর স্টেট কংগ্রেস পার্টি ৩৪টি, বিজেপি ১৯টি ও নাগা পিপল্স ফ্রন্ট ১২টি কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ইবোবির আশা, অন্তত ৪০ থেকে ৪৫ আসনে জিতবেন তাঁরা। তবে, গত এক দশকের শাসনের পরে, অনুন্নয়ন ও কংগ্রেস-বিরোধী মনোভাবই কংগ্রেসের সব থেকে বড় গাঁট।সকালে, পশ্চিম ইম্ফলের সাগোলবাঁধ এলাকায়, কংগ্রেস প্রার্থীর আত্মীয়ের বাড়ি থেকে না ফাটা আইইডি উদ্ধার হয়। এ ছাড়া, ইম্ফলে তেমন কিছু ঘটেনি। আজকের ভোটপর্বে সব থেকে উত্তপ্ত ছিল চান্দেল জেলা। এই প্রথম নাগাল্যান্ডের শাসকদল নাগা পিপল্স ফ্রন্ট পার্বত্য মণিপুরে ভোটে লড়ছে। আশঙ্কা ছিল, তাদের হয়ে নাগা জঙ্গিরা মাঠে নামবে। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও নাগা জঙ্গিরা, সকাল থেকেই, চান্দেলের নানা বুথে ঘুরে ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছিল বলে অভিযোগ আসে। বুথ দখলের চেষ্টা হয় চাকপিকারং-এ। প্রথমেই জঙ্গিরা বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক সিআরপিএফ জওয়ান ইউ ত্রিপাঠীকে গুলি
করে মারে।
এরপর বুথে ঢুকে এক জঙ্গি এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই, মৃত্যু ঘটে ১৪ বছরের বালিকা নানলিউ, প্রিসাইডিং অফিসার খ ইবোতোম্বি, পোলিং অফিসার প্রেমজিৎ, আদোন লোংমেই, থংনাম রাকেশের। প্রহরার দায়িত্বে থাকা অন্য জওয়ানরা বন্দুকধারীকে বুথের মধ্যেই গুলি করে হত্যা করেন।
পুলিশ জানায়, নিহত জঙ্গির নাম বেনুসন নুল্লা। তার কাছে থাকা পরিচয়পত্র থেকে জানা গিয়েছে, সে ডিমাপুরের একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক। গুলিতে জখম, অন্য এক পোলিং অফিসারকে হেলিকপ্টারে ইম্ফল নিয়ে আসা হয়। |