জাতপাতের ঊর্ধ্বে প্রচার চান রাহুল
প্রয়োজনে জাতপাতের ভিত্তিতে প্রার্থী বাছাই তিনিও করেছেন। উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে এখন সেটাই দস্তুর। কিন্তু হিন্দি বলয়ের সব থেকে বড় রাজ্যে ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই নিজেকে সর্বস্তরের নেতা হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন রাহুল গাঁধী। ভোটের পক্ষকাল আগে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরের কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে সম্প্রতি এই মর্মেই দাওয়াই দিয়েছেন তিনি।
দিন পাঁচেক আগে দিল্লিতে দলের কেন্দ্রীয় ও উত্তরপ্রদেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাহুল। দিগ্বিজয় সিংহ, সলমন খুরশিদ, শাকিল আহমেদ, ইমরান কিদোয়াই, রশিদ আলভি, গুলাম নবি আজাদ প্রমুখ নেতারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনী প্রচারের কৌশল নিয়ে আলোচনাই ছিল বৈঠকের প্রধান অ্যাজেন্ডা। রাহুলের ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, সংখ্যালঘুদের মধ্যে উচ্চবর্ণের ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও পিছিয়ে পড়া অংশের (উত্তরপ্রদেশে যাঁরা পসমিন্দা বলে পরিচিত) বেশিরভাগ ভোটই মুলায়ম সিংহ পেতে পারেন। তাঁদের অনেকে এমনও আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, কংগ্রেস সংখ্যালঘু সংরক্ষণের প্রস্তাব দেওয়ায় অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) ভোটও বিশেষ পাবে না। একমাত্র কিছু কুর্মী ভোট মিলতে পারে।
কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, এমন ‘নেতিবাচক’ কথা শুনেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাহুল। পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, আত্মবিশ্বাসে এমন ঘাটতি কেন হচ্ছে, তাতেই তিনি অবাক! কেন না, তাঁর মতে, উত্তরপ্রদেশে জাতপাতের রাজনীতি দস্তুর ঠিকই। তবে এটাও ঠিক যে, কোনও একটি রাজনৈতিক দল কিন্তু কোনও নির্দিষ্ট জাতের সব ভোট পায় না। তা কখনও সম্ভব নয়। কারণ, তাই যদি হত, তা হলে গত বিধানসভা ভোটে মায়াবতী ব্রাহ্মণদের ভোট পেতেন না। বিজেপি-ই পেত। আবার সব যাদব মুলায়ম সিংহকেই ভোট দিত। কিন্তু আখেরে তা হয়নি। বরং মুলায়মের জমানায় অপশাসন ও গুন্ডারাজে অতিষ্ঠ মানুষ মায়াবতীকে বিকল্প হিসাবে বেছে নিয়েছিল।
তাই এ বার রাহুলের দাওয়াই, এলাকা ভিত্তিতে জাতপাতের সমীকরণ মেনে কংগ্রেস এমনিতেই প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু এ বার প্রচারে জোর দেওয়া হোক মায়াবতী ও মুলায়ম জমানার অপশাসন ও দুর্নীতি নিয়ে। যাতে মায়ার বিকল্প হিসেবে মুলায়মকে না বেছে বরং সব জাতি ও সম্প্রদায়ের মানুষ কংগ্রেসকে ভোট দেন। মোদ্দা কথায়, মায়ার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোট কংগ্রেসকে টানতে হবে। জাতপাত-ধর্মের সংকীর্ণ রাজনীতি নিয়ে আলোচনা ও হিসেবনিকেশ এখনও চালিয়ে গেলে যা সম্ভব নয়।
কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, আসলে দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়ে চলতে চাইছেন রাহুল। অতীতে উত্তরপ্রদেশে সব সম্প্রদায়ের ভোট পেত কংগ্রেস। কিন্তু পরে আঞ্চলিক আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের জনভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। দলিতদের আস্থা অর্জন করে শক্তিশালী হয়ে ওঠে বিএসপি। যাদব ও মুসলিমদের প্রতিনিধি হয়ে ওঠেন মুলায়ম সিংহ। কিন্তু মায়াবতী ও মুলায়মের উপর মানুষের আস্থার ঘাটতি হচ্ছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসকে সব জাতি ও বর্গের আস্থাভাজন করে তুলতে চান রাহুল। তিনি মনে করেন, এ ভাবেই এ রাজ্যে কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবন হবে।
কংগ্রেসের তরফে বলা হচ্ছে, রাহুলের এই সূত্র মেনেই এ বার উত্তরপ্রদেশে প্রচার শুরু করছে কংগ্রেস। ১ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশে দু’টি জনসভা করবেন সনিয়া গাঁধী। রাহুল তো প্রচারে আছেনই। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে অমেঠি-রায়বরেলীতে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রচার শুরু করতে চলেছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধীও।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.