তাড়া নেই বই কেনার, তবুও জমজমাট বইমেলা
কেই সরস্বতী পুজো, তায় শনিবার। নরম রোদ আর একটু ঠান্ডা। বেরিয়ে পড়ার এই তো সময়! বইমেলাও তো রয়েছে নাগালের মধ্যেই। শীতের বিকেলে আহ্লাদের আর আমোদের ভিড়ে যেন উপচে পড়েছিল বইমেলা।
পাঁচমিশেলি ভিড়ে বই কেনার তাড়াহুড়ো ছিল না। মিলনমেলা চত্বরের প্রায় কেন্দ্রে এক প্রকাশক স্টলগুলোর দিকে আঙুল দেখিয়ে নাম করে করে বলছিলেন, “দেখুন সিরিয়াস বইয়ের স্টলগুলোতে একেবারেই লোক ঢুকছে না।” কেবল সিরিয়াস বই নয়, এমন ভিড়ের দিনে জনপ্রিয় যে সব প্রকাশকদের স্টলের সামনে লাইনের যে দৈর্ঘ্য হওয়ার কথা, তা-ও ছিল না এ দিন। তবে বইমেলার উদ্যোক্তা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের কর্তারা খুশি প্রথম দিনের ভিড়ে। ভিড়টা এ দিন শুরু হয় পড়ন্ত বেলায়। সরস্বতী পুজোর অঞ্জলি সেরে, খিচুড়ি প্রসাদ খেয়ে তবে সবাই মেলামুখো হয়েছেন। গিল্ডের যুগ্ম সম্পাদক সুধাংশু দেও বললেন, “শুরুর দিকে মেলা প্রায় খালিই ছিল। বিকেলের দিকে ভিড়টা হঠাৎ বেড়ে গেল।”
তবে এ দিনের ভিড়ে শাড়ি পরা কিশোরী ছিল চোখে পড়ার মতো। কিশোরেরাও ছিল। তাই বলে সরস্বতী পুজোর দিনে বইমেলার বিকেলটাকে বাঙালির ‘ভালেনটাইন্স ডে’-এর মতো ক্লিশে তকমা দেওয়া যাচ্ছে না। ওই ভিড়ে চোখে পড়েছে মায়ের হাত ধরে বাসন্তী শাড়ি পরা বালিকার বিষ্ময়ে মেলা দেখা।
তুলনায় বই কম বিকোলেও, কফি, আইসক্রিম, বিরিয়ানি আর পিঠে পুলিতে মজেছিল এ দিনের তুমুল ভিড়। মিলনমেলার খাদ্য-অঙ্গন ‘ফুড প্লাজা’ ছাড়াও মেলার নানা জায়গায় খাদ্যের বিস্তর ব্যবস্থা। তার সদ্ব্যবহারও হয়েছে যথেষ্ট। রয়েছে বিনিপয়সার সরকারি জল। প্লাস্টিকের প্যাকেটে খাওয়ার জল পাঠিয়েছে রাজ্য জনস্বাস্থ্য করিগরি দফতর। বিলি করছে কলকাতা পুলিশ। জল দেওয়ার জন্য মেলার মধ্যে ছ’টা কিয়স্ক বানানো হয়েছে। দু’প্যাকেট জল তুলে নেওয়ার ফাঁকে এক রসিক জনের মন্তব্য, “পাপ ধুয়ে পুণ্য কামানোর এত বড় সুযোগ পুলিশ বোধহয় এর আগে পায়নি।” এ-হেন ভিড়েও কিন্তু এ বারের মেলায় কাউকে তেমন অসুবিধায় পড়তে হয়নি। ঠেলাঠেলি তেমন ছিল না। কারণ স্টলের সামনের পথগুলো এ বার অনেক প্রশস্থ এবং পরিচ্ছন্ন। মেলার ভিতরে অনেক বেশি জায়গা ছাড়া রয়েছে। ফলে স্টল খুঁজে বার করার বিড়ম্বনা নেই। ছড়িয়ে বসে আড্ডা দেওয়ার বিস্তর জায়গা। সবুজ ঘাস এবং কংক্রিটের চত্বর মিলিয়ে। এরই মধ্যে কবি-সাংবাদিক সমর সেনের স্মৃতিতে তাঁর প্রতিষ্ঠিত সাপ্তাহিক ফ্রন্টিয়ারের উদ্যোগে আড্ডা বসেছিল বইমেলার প্রেস কর্নারে। ‘সমসাময়িক ভারতীয় রাজনীতি’ নিয়ে ওই আড্ডায় সুইডেনের সাংবাদিক-সাহিত্যিক জান মিরডালের সঙ্গে ছিলেন মহাশ্বেতা দেবী, সুমন্ত্র বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। মেলায় প্রকাশিত হয়েছে উৎপল ভট্টাচার্য সম্পাদিত জাঁ পল সার্ত্রের সাক্ষাৎকারের নির্বাচিত সংকলন।
অরুপ গুছাইতের ‘বিস্মৃত বিজ্ঞানী’ বইয়ের প্রথম পর্ব প্রকাশিত হল। যে বিজ্ঞানীদের আবিষ্কারের কথা মানুষ প্রায় বিস্মৃত হতে চলেছে তাঁদেরই সংক্ষিপ্ত অথচ তথ্যনিষ্ঠ জীবনী কিশোরদের জন্য। বেরোলো সিরাজুল ইসলাম সম্পাদিত ‘বুলবুল’ পত্রিকার বইমেলা সংখ্যা। দীপান্বিতা রায়ের রঙিন ছবিতে ভরা গল্পের বই ‘ইচ্ছেডানা’ আর ছোটগল্পের সংকলন ‘কর্পূর কাঠের বাক্স’ প্রকাশিত হল বইমেলায়। নিহারুল ইসলাম সম্পাদিত সাহিত্যপত্র ‘খোঁজ’ এ বারও বেরিয়েছে। তাঁর উপন্যাস ‘মজনু হবার রূপকথা’ও বেরোলো বইমেলায়।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.