ওসামা বিন লাদেন যে অ্যাবটাবাদেই লুকিয়ে আছেন, সেই খবর মার্কিন গোয়েন্দারা এক পাক চিকিৎসকের কাছ থেকে পেয়েছিলেন বলে এই প্রথম বার প্রকাশ্যে জানালেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লিওন পানেত্তা। একটি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শনিবার পানেত্তা জানান, শাকিল আফ্রিদি নামে ওই পাক চিকিৎসকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই গোটা অভিযানটি সফল হয়েছিল।
একটি সূত্রের দাবি, টিকাকরণের কাজে নানা জায়গায় ঘুরতেন আফ্রিদি। কিন্তু আসলে তাঁর কাজ ছিল এই টিকাকরণ কর্মসূচির আড়ালে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র জন্য ডিএনএ-র নমুনা সংগ্রহ করা। সেই ডিএনএ-র নমুনা মিলিয়ে মিলিয়ে বিন লাদেনকে খুঁজতেন গোয়েন্দারা। এ ভাবেই এক সময়ে অ্যাবটাবাদের উঁচু পাঁচিলঘেরা বাড়িটিতে বিন লাদেনের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হন আফ্রিদি। কিন্তু মার্কিন বাহিনী বিন লাদেনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পর পরই পাক কর্তৃপক্ষ গ্রেফতার করেন শাকিল আফ্রিদিকে। তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ এনেছে সরকার। পানেত্তা জানিয়েছেন, আফ্রিদিকে নিয়ে তিনি যথেষ্ট চিন্তায়। তিনি বলেন, “দেশদ্রোহের অভিযোগ আনার যুক্তি বুঝতে পারছি না। আমেরিকা এবং পাকিস্তান, দু’টি দেশই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ছে। সেই লড়াইয়ে সাহায্যকারী কাউকে দেশদ্রোহী আখ্যা দেওয়াটা ভুল।”
মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিবের সাফ কথা, অ্যাবটাবাদে বিন লাদেনের লুকিয়ে থাকার খবর কেউ ঘুণাক্ষরে জানতেন না বলে তিনি বিশ্বাস করেন না। পানেত্তার কথায়, “ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, কেউ না কেউ নিশ্চয়ই জানতেন, ওই পাঁচিলঘেরা চত্বরে কী হচ্ছে। ভুলে গেলে চলবে না, বাড়িটি ১৮ ফুট উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা ছিল। কারও মনে কি এক বারের জন্যও প্রশ্ন জাগেনি, ‘এখানে কী হয়? কে থাকে?’ এটা কি সত্যিই সম্ভব!” গত বছর মে মাসে পাক সরকারকে কার্যত অন্ধকারে রেখে বিন লাদেনের গোপন ডেরায় অভিযান চালায় মার্কিন বাহিনী। এই ঘটনাকে দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ বলে অভিযোগ করে পাকিস্তান। পাশাপাশি দাবি করা হয়, অ্যাবটাবাদে বিন লাদেনের লুকিয়ে থাকার খবর পাক সরকার বা আইএসআই, কেউই জানত না। এই দাবি কতটা বিশ্বাসযোগ্য, প্রশ্ন করা হলে পানেত্তা বলেন, “যেহেতু আমার কাছে কোনও প্রমাণ নেই, তাই জোর দিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, কেউ না কেউ নিশ্চয়ই জানতেন।” |