শেখ হাসিনার নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সেনা অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রে তাদের ‘গুরুত্বপূর্ণ নেতা’ তারেক রহমান কোনও ভাবেই জড়িত নয় বলে দাবি করেছে বাংলাদেশের বিরোধী দল বিএনপি।
বিএনপি-র যুগ্ম মহাসচিব মহম্মদ রুহুল কবির রিজভী একটি চিঠিতে এই দাবি করেছেন। বাংলাদেশের ‘সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠন’ হিসাবে নিজেদের দাবি করে বিএনপি জানিয়েছে, ‘হিজবুত তাহরির নামে নিষিদ্ধ ঘোষিত ধর্মভিত্তিক দলটির সঙ্গে’ তাদের কোনও যোগাযোগ থাকার প্রশ্ন অবান্তর।
জানুয়ারির ২১ তারিখে আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবরে জানানো হয়েছিল, অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাতের চক্রান্তে অন্যতম মাথা হিসাবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান রয়েছেন বলে মনে করছেন ভারত ও বাংলাদেশের গোয়েন্দারা।
বাংলাদেশ সরকারকে দেওয়া গোয়েন্দা রিপোর্টেও এই আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। চিঠিতে বিএনপি জানিয়েছে, তারেক রহমান কোনও ‘সশস্ত্র কিংবা গোপন রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না’। বিএনপি-র দাবি, তারেকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি ‘অসত্য, কল্পিত এবং চরিত্র হননের অপপ্রয়াস’। তবে, বিএনপি-র এই চিঠি পাওয়ার পরে ঢাকায় খোঁজ নেওয়া হলে বাংলাদেশ সিআইডি-র এক শীর্ষ সূত্র জানিয়েছে, গোয়েন্দা-রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে নিষিদ্ধ হিজবুত তাহরিরের সঙ্গে বিএনপি ও তারেক রহমানের যোগাযোগের বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে।
অসমের জঙ্গি সংগঠন আলফা-কে অস্ত্র সরবরাহের ঘটনায় তারেক রহমানের নাম উঠে আসার খবরও ‘মিথ্যা’ বলে অভিহিত করে বিএনপি চিঠিতে দাবি করেছে, ‘বৈরি সরকারও অস্ত্র মামলায় তারেক রহমানকে জড়িত করতে পারেনি।
নির্যাতনের মুখে এক আসামির জোর করে নেওয়া জবানবন্দির ভিত্তিতে তারেককে গ্রেনেড মামলায় জড়ানো হয়েছিল, সেই জবানবন্দিও ওই ব্যক্তি প্রত্যাহার করে নিয়েছে।’ তবে, এ ক্ষেত্রেও বিএনপি-র বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে জানা গিয়েছে, চট্টগ্রামে ধরা পড়া আলফার জন্য পাঠানো ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সিআইডি-র অভিযোগপত্র ও আসামিদের জবানবন্দিতে বার বার চক্রান্তকারী হিসাবে তারেকের নাম উঠে এসেছে। ট্রাকগুলি ধরা পড়ে যাওয়ার পরে মামলাটি ভিন্ন খাতে বইয়ে বিষয়টি আড়াল করার কাজেও তাঁর ভূমিকা ছিল বলে তদন্তকারীরা আদালতকে জানিয়েছে। মামলাটি এখনও চলছে।
আর হাসিনার উপরে গ্রেনেড হামলার মামলায় জাল সই করে জবানবন্দি প্রত্যাহারের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু আদালত তা গ্রহণ করেনি। বিএনপি চিঠিতে দাবি করেছে, তারেক ‘বর্তমানে বিদেশে চিকিৎসাধীন’। ঢাকার আদালত সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, গ্রেনেড হামলার মামলায় তারেক এক জন ‘পলাতক আসামি’। তাঁর নামে ইতিমধ্যে চার্জশিটও দেওয়া হয়েছে।
|
শিকাগোর জেলে অনশনে মৃত ভারতীয় বংশোদ্ভূত
সংবাদসংস্থা • শিকাগো |
পনেরো দিন ধরে লাগাতার অনশন করে মারা গেলেন শিকাগোর জেলে বন্দি ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক মহিলা। নাম লাইভিতা গোমস (৫২)। ৩ জানুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়। গত বছর একাধিক বার আদালতের সমন উপেক্ষা করার অপরাধে ডিসেম্বর থেকে বন্দি ছিলেন তিনি। যদিও লাইভিতা আমেরিকার নাগরিক না হওয়ায়, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ করার অধিকার নেই মার্কিন আদালতের।মুম্বইয়ে বেড়ে ওঠা লাইভিতা এক বেসরকারি বিমানসংস্থায় প্রশিক্ষকের কাজ করতেন। তাঁর বন্ধুরা জানান, ২০০৪-এ ওই বিমানসংস্থায় চাকরি করতে লাইভিতা আটলান্টা শহরে আসেন। সেখানে কাজ করার সময় তাঁর মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা যাচ্ছিল বলে জানান তাঁর এক প্রাক্তন সহকর্মী। গ্রেফতারের পর লাইভিতা জেলেই অনশন শুরু করেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মারা যান তিনি।এক মার্কিন দৈনিক সূত্রে খবর, লাইভিতার মৃত্যুর প্রতিবাদে সরব হয়েছে তাঁর ভাই ও এক সামাজিক সংস্থা। তাঁদের অভিযোগ, লাইভিতার চিকিৎসায় গাফিলতি হয়েছে। লাইভিতার চিকিৎসা, তাঁর গ্রেফতারের কারণ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশের দাবি করেছেন তাঁরা। |