মমতাকে চিঠি
কংগ্রেস ও তৃণমূলে বিরোধ, গোলাগুলি ক্যানিংয়ে
ক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে কংগ্রেসকর্মীদের উপরে গুলিচালনার ঘটনায় টানাপোড়েন বাড়ল শাসক জোটে। কংগ্রেসের অভিযোগের তির শরিক তৃণমূলের দিকে। তৃণমূল ‘জোটধর্ম পালন করছে না’ বলে অভিযোগ তুলেছে তারা। তৃণমূল পাল্টা বলেছে, ‘দরজা খোলা আছে, চলে যেতে পারেন’!
বুধবার রাতে প্যান্ডেলের টাকা নিয়ে এক কংগ্রেসকর্মীর সঙ্গে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিবাদ বাধে ক্যানিংয়ের আন্ধারিয়া গ্রামে। বিবাদের পরিণতিতে কংগ্রেসকর্মীদের উপরে তৃণমূলের লোকেরা গুলি চালানোয় তাঁদের চার কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে বলে কংগ্রেস নেতৃত্ব শুক্রবার অভিযোগ করেছেন। অবিলম্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। রাতে ক্যানিংয়ের কুমড়োখালি গ্রামে পুলিশ দুরন্ত মণ্ডল নামে এক তৃণমূলকর্মীকে গ্রেফতার করে। দুরন্ত-সহ ছ’জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল থানায়। এ দিকে, তাঁদের দলীয় কর্মীকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ফাঁসানো হয়েছে’ বলে দাবি করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা কিশলয় মণ্ডল।
ক্যানিংয়ের ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়ে প্রদীপবাবুর অভিযোগ, “তৃণমূল-আশ্রিত সমাজবিরোধীরা কংগ্রেসকর্মীদের উপরে হামলা করেছে।” তাঁর হুঁশিয়ারি, “জোটধর্ম পালন করার মানে এটা নয় যে, সিপিএম যে কায়দায় আমাদের মারত, সেই কায়দায় এখনও আমাদের মার খেতে হবে! এই ধরনের ঘটনা বন্ধ না-হলে রাস্তায় নেমে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।” ক্যানিংয়ের ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা ২ ফেব্রুয়ারি তালদিতে সভাও করবেন। তবে এর আগে কংগ্রেসকর্মীদের উপরে হামলার বিষয়ে প্রদীপবাবু তিন বার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিলেও প্রাপ্তি স্বীকার পর্যন্ত করা হয়নি বলে প্রদেশ সভাপতিই জানিয়েছেন।
প্রদীপবাবুর বক্তব্য জানার পরেই তৃণমূল আসরে নামায় দলের মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমকে। মনোজ চক্রবর্তী মন্ত্রিত্বে ইস্তফা দেওয়ার সময়েও ববি ছেড়ে কথা বলেননি কংগ্রেসকে। তিনি বলেন, “দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দেওয়ার দরকার তৃণমূলের হয় না। মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে আছে। মমতাদিকে বিশ্বাস করে মানুষ। সিপিএমের দুষ্কৃতীরা কোথায় যাচ্ছে, মানুষ তা জানে। মোক্তার-সহ সিপিএম ছেড়ে আসা দুষ্কৃতীদের প্রদীপবাবুরাই আইএনটিইউসি-কংগ্রেসে আশ্রয় দিয়েছেন!” ববির আরও অভিযোগ, “প্রদীপবাবুরা তাঁদের পুরনো প্রভুদের (সিপিএম) খুশি করার জন্য যদি তৃণমূলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করেন, তা হলে বলব, দরজা খোলা আছে চলে যেতে পারেন!” মনোজ-কাণ্ডে তাঁর নেত্রী মমতাও কংগ্রেসকে ‘দরজা’ দেখিয়ে দিয়েছিলেন। দলীয় সূত্রের খবর, এ দিনও দলনেত্রীর নির্দেশেই প্রদীপবাবুকে উপলক্ষ করে কংগ্রেসকে ‘কড়া বার্তা’ দেন ববি।
বস্তুত, ক্যানিং নিয়ে কংগ্রেসের অভিযোগকে ‘গুরুত্ব’ই দেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি তথা কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ক্যানিংয়ের ঘটনা রাজনীতিবিচ্ছিন্ন। ওই ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক দর কষাকষি, মন কষাকষির খবর জানা নেই।” ক্যানিং-১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি নারায়ণ ঘোষেরও দাবি, “রাজনৈতিক কারণে ওই ঘটনা ঘটেনি। পাওনা টাকা নিয়ে গোলমাল হয়েছে। অহেতুক এ নিয়ে জলঘোলা করা হচ্ছে।” পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ক্যানিংয়ের আন্ধারিয়ার কংগ্রেসকর্মী বাবলু সর্দারের ডেকরেটরের ব্যবসা রয়েছে। গত রবিবার কুমড়োখালি গ্রামে তৃণমূলের একটি সভার জন্য প্যান্ডেল তৈরি করে দেওয়ার জন্য বাবলু বকেয়া এক হাজার টাকা চাইলে তৃণমূলের লোকজন তাঁকে মারধর করে বলে তাঁর অভিযোগ। তাঁর দুই ভাই কংগ্রেস কর্মী নবীন ও পলাশ সর্দারও তাঁকে বাঁচাতে এসে প্রহৃত হন। এর পরে আরও গ্রামবাসীরা বেরিয়ে এলে তৃণমূলের লোকেরা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। গুলিতে জখম চার জনকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.