শেয়ার বাজারের উপর থেকে কি কালো মেঘ কাটতে শুরু করেছে? রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তার ঋণনীতিতে নগদ জমার অনুপাত কমানোর পর বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকে কিন্তু সেই রকমটাই ভাবতে শুরু করেছেন। তবে যাঁরা হাতে ফল না-পেয়ে কিছু মন্তব্য করতে রাজি নন তাঁদের মত হল, এখনও সেটা হলফ করে বলা যাচ্ছে না। কারণ, বাজারের মৌলিক উপাদানগুলি আগের অবস্থাতেই রয়েছে। তাই আগামী দিনে পরিস্থিতি বদলায় কি না, তা না-দেখে বাজার ঘুরতে শুরু করেছে বলে মানতে রাজি নন তাঁরা।
তবে যে কথা সকলেই মেনে নিয়েছেন তা হল, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঋণনীতির পর্যালোচনায় নগদ জমার অনুপাত কমানোর পর বাজারের মানসিকতার পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। লগ্নিকারীরা অন্তত মনে করতে শুরু করেছেন, এর পর শীর্ষ ব্যঙ্ক সুদ কমাবে। এবং সে ক্ষেত্রে চিত্রটি যে বদলাতে শুরু করবে, সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা প্রায় সকলেই একমত। তাঁদের আশা, শিল্পোৎপাদন ক্ষেত্রের পরিবর্তনের হাত ধরে ঘুরতে শুরু করবে বাজার।
বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যাঁরা মনে করছেন বাজার ঘুরতে শুরু করেছে, তাঁদের অন্যতম এলবি সিকিউরিটিজের ডিরেক্টর মণীষ অগ্রবাল। মণীষবাবু বলেন, “বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি আগে থেকেই বাজারের হাল কিছুটা আঁচ করতে পারে। বেশ কিছু দিন হাত গুটিয়ে থাকার পর ওই সব সংস্থা ফের ভারতের বাজারে লগ্নি করতে শুরু করেছে। মনে হয়, পিছনে তাকানোর দিন শেষ হতে চলেছে।” মণীষবাবুর বক্তব্যের সমর্থনে যে তথ্য আপাতত মিলেছে তা হল, চলতি মাসেই ওই সব বিদেশি বিনিয়োগকারী সংস্থা ভারতের বাজারে ৫ হাজার কোটি টাকা লগ্নি করেছে।
তবে বাজার যে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে, তা এখনই মানতে রাজি নন সুমেধা ফিসকালের ডিরেক্টর বিজয় মুর্মুরিয়া। তিনি বলেন, “এটা ঠিক, বাজারে এখন দুটি ইতিবাচক বিষয় লক্ষ করা যাচ্ছে। এক, হতাশা অনেকটা কেটেছে। দুই, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ফের লগ্নি করছে। তবে এর বেশি কোনও ভাল খবর আছে বলে মনে করি না। আগামী দিনে দেখতে হবে, মূল্যবৃদ্ধির হার, টাকার দাম-সহ শেয়ার বাজারের মৌলিক উপাদানগুলির উন্নতি হয় কি না।”
বুধবার সেনসেক্স তেমন না বাড়লেও দীর্ঘ দু’মাস পরে ফের ১৭ হাজারের ঘরে ঢুকেছে। এই দিন ৮১ পয়েন্ট বেড়ে তা থামে ১৭,০৭৭.১৮ অঙ্কে। তবে টানা ১৩ বার সুদ বাড়ানোর পর এ বার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে উল্টো পথে হাঁটতে পারে, সেটা অবশ্য বাজার আগেই কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিল। এ জন্যই বাজারের হাওয়া বদল শুরু হয়েছে প্রায় এক সপ্তাহ আগেই। |