মাধ্যমিকের নম্বরের ভিত্তিতে পলিটেকনিক কলেজে সরাসরি ভর্তির দিন শেষ।
সরাসরি ভর্তির নিয়ম ‘পলি-৪০’ তুলে দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিক্যালের মতো পলিটেকনিকেও কেবল প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মেধাকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্যই এই ব্যবস্থা। এতে সরাসরি ভর্তি আর প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে ভর্তির মধ্যে ফারাক রোখা যাবে বলে মনে করেন রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে পলিটেকনিক কলেজগুলিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমাও উঠে যাচ্ছে। নতুন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে এ বছর থেকেই।
কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জনবাবু মঙ্গলবার জানিয়ে দেন, এ বছর থেকে যে-কোনও বয়সের প্রার্থীই পলিটেকনিকের প্রবেশিকা পরীক্ষা ‘জেক্সপো’ বা ‘ভোকলেট’-এ বসতে পারবেন। আরও বেশি ছাত্রছাত্রীকে পলিটেকনিকে পড়াশোনা করার সুযোগ দেওয়ার জন্যই এই ব্যবস্থা চালু করছে রাজ্যের নতুন সরকার। এত দিন সর্বাধিক ২২ বছর বয়স পর্যন্ত জেক্সপো এবং ভোকলেট দেওয়া যেত বলে কারিগরি শিক্ষা সংসদের তরফে জানানো হয়েছে।
পলিটেকনিকে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন রাজ্য কারিগরি শিক্ষা সংসদের সচিব শুভদীপ চৌধুরী। তিনি এ দিন জানান, ৪০ বছর পর্যন্ত বৃত্তিমূলক শিক্ষায় ভর্তি হওয়া যায়। যিনি ৪০ বছরে বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রমে ভর্তি হয়ে দু’বছর পরে ডিগ্রি নিয়ে বেরোবেন, বয়সের ঊর্ধ্বসীমার নিয়ম বজায় থাকলে তিনি তো পলিটেকনিকে ভর্তি হওয়ার সুযোগই পাবেন না। এই ধরনের বিভিন্ন দিক বিবেচনা করেই বয়ঃসীমা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেক্সপো ও ভোকলেট পরীক্ষার আবেদনপত্র বিলি শুরু হয়েছে মঙ্গলবারেই। ভোকলেট পরীক্ষা হবে ২২ এপ্রিল আর জেক্সপো হবে ৬ মে। পলিটেকনিকে ভর্তির কাউন্সেলিং হবে অনলাইনে। বৃত্তিমূলক শাখায় পড়াশোনা করে যে-সব ছাত্রছাত্রী ভোকলেট দিয়ে সরাসরি পলিটেকনিকের দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তি হবেন, তাঁদের জন্য দু’সপ্তাহের ব্রিজ কোর্সের ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান কারিগরি শিক্ষা সংসদের সচিব। আগের নিয়ম অনুযায়ী প্রবেশিকা পরীক্ষা ছাড়াই মাধ্যমিকের নম্বরের ভিত্তিতে সরাসরি পলিটেকনিকে ভর্তির ব্যবস্থা (পলি-৪০) তুলে দেওয়া হচ্ছে কেন, সেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন মন্ত্রী রবিরঞ্জনবাবু নিজেই। তিনি জানান, এ বছর থেকে শুধু জেক্সপো ও ভোকলেট দিয়েই পলিটেকনিকে ভর্তি হওয়া যাবে। মন্ত্রী বলেন, “আমরা মেধাকে গুরুত্ব দিতে চাই। তাই জেক্সপো বা ভোকলেট যে-কোনও একটি পদ্ধতিতে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা জরুরি। কারণ, এক দল পড়ুয়া প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হবে আর অন্য দল সরাসরি মাধ্যমিক দিয়ে আসবে, এটা ঠিক নয়।”
সরকারি প্রকল্পে জমি দিলে পলিটেকনিকে ভর্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাওয়ার পদ্ধতি চালু আছে রাজ্যের পাঁচ জেলায়। এ বছর থেকে তা গোটা রাজ্যেই ওই পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে বলে জানান সংসদ-সচিব। শুভদীপবাবু বলেন, “কোনও পরিবার সরকারি প্রকল্পে জমি দিলে সেই পরিবারের ছেলে বা মেয়ে পলিটেকনিক কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। এই ধরনের পড়ুয়াদের জন্য সব পলিটেকনিকে চার শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে।” |