পর্যটন স্থল হিসেবে রাজ্যে বিষ্ণুপুরের নাম প্রথম সারিতে। কিন্তু পর্যটকের ন্যূনতম স্বাচ্ছন্দ্যের প্রশ্নে এই মন্দিরনগরীর সুনামের চেয়ে দুর্নামই বেশি আজও। কারণ, টেরাকোটা মন্দিরের কাছাকাছি কোনও শৌচাগার নেই। বাসে, ট্রেনে বা গাড়ি ভাড়া করে অনেকেই এক দিনের জন্য ঘুরতে আসেন বিষ্ণুপুরে। মহিলারাও আসেন। তাঁদের অভিযোগ, “অনেক পথ পার হয়ে আমরা বিষ্ণুপুরে ঢুকে দেখি পর্যটনস্থলের কাছাকাছি কোনও সুলভ শৌচাগার নেই। ফলে চূড়ান্ত অসুবিধায় পড়তে হয়। শহরের ট্যুরিস্ট গাইড অচিন্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা একটা মারাত্মক সমস্যা। বিশেষ করে মহিলাদের। বাধ্য হয়ে আমাদের কিছু কিছু পরিচিত বাড়িতে নিয়ে যেতে হয় পর্যটকদের।”
সব চেয়ে সমস্যায় পড়েন স্বল্প দূরত্বের পর্যটনে ব্যবস্থাপকেরা। তেমনই একজন দুর্গাপুরের প্রদীপ্ত রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘এত জনকে নিয়ে তো এক বেলার জন্য হোটেল ভাড়া করা যায় না। কিন্তু শৌচাগারের প্রয়োজন হয়। বিশেষত মহিলাদের নিয়ে খুব অসুবিধায় পড়ি।” লেকটাউনের মাধবী সাহা, চন্দননগরের অরুণকুমার চক্রবর্তী বলেন, “একদিনের জন্য বিষ্ণুপুর ঘুরতে এসেছি। খুব ভাল লাগছে। এখানকার প্রাচীন স্থাপত্যকীর্তি দেখে। দেখলাম কামান, খুব সুন্দর লালবাঁধ, লালগড়। কিন্তু কাছাকাছি কোথাও শৌচাগার পেলাম না। এ ব্যাপারে স্থানীয় পুরসভার নজর নেই কেন বুঝতে পারছি না।”
বিষ্ণুপুরের সাধারণ মানুষের বক্তব্য, শৌচাগার না থাকায় দুর্গন্ধে এলাকাবাসীর প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়। এ নিয়ে সরকারের নজরদারি জরুরি। সমস্যাটির গুরুত্ব স্বীকার করে বিষ্ণুপুর চেম্বার অব কমার্স-এর এক প্রতিনিধি বলেন, “বিষ্ণুপুরে আসা মানে এখানকার অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়া। কাজেই পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের দিকটি নিয়ে সরকারের ভাবা উচিত।” সমস্যাটি নিয়ে পুরপ্রধান তথা রাজ্যের আবাসনমন্ত্রী শ্যাম মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “শহরের ভিতরে দু’টি সুলভ শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। একটি পোকাবাঁধ বাসস্ট্যান্ডে। অপরটি রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে।” তিনি বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম পর্যটক আকর্ষণকারী মন্দিরগুলি সংলগ্ন অঞ্চলে শৌচাগার গড়ুক পর্যটন দফতর। এ ব্যাপারে পর্যটন মন্ত্রী রচপাল সিংহের সঙ্গে কথা বলব। আশা করি শীঘ্রই এই সমস্যার সুরাহা হবে।”
|