ফ্লোরাইড মুক্ত জল দেব, আশ্বাস রমেশের
পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাঁকুড়া জেলার বাসিন্দাদের ফ্লোরাইডমুক্ত জল সরবরাহে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র সরকার। এ জন্য ২০০০ কোটি টাকার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ মঙ্গলবার বাঁকুড়ায় সাংবাদিকদের এ কথা জানান। সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকেও তিনি এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার মাওবাদী উপদ্রুত এলাকায় পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য কেন্দ্র এ বার থেকে বছরে ৩০ কোটি টাকা করে দেবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “জলে ফ্লোরাইডের উপস্থিতি এই জেলার একটা সমস্যা। ২২টির মধ্যে ১০টি ব্লক ফ্লোরাইড প্রবণ। তাই ফ্লোরাইড মুক্ত জল সরবরাহ করার জন্য আমরা একটি বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছি। কেন্দ্র সরকার ২০০০ কোটি টাকা দেবে। তার মধ্যে ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার পরে দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় ১৪টি ব্লকে জল সরবরাহের কাজ শুরু করা হবে। তার মধ্যে সাতটি ফ্লোরাইড প্রবণ ব্লক রয়েছে। জেলাশাসক মহম্মদ গুলাম আলি আনসারি বলেন, “দামোদর নদ থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল তোলা হবে। সেই জল শোধন করার পরে গ্রামে গ্রামে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে।”
শুশুনিয়ায় শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। — নিজস্ব চিত্র।
সার্কিট হাউসে মন্ত্রী জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমাশাসক ও বিডিওদের সঙ্গে ঘণ্টা দেড়েক বৈঠক করেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে মন্ত্রী জেলায় জলে ফ্লোরাউডের অস্তিত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জানতে চান কোন কোন ব্লকে জলে ফ্লোরাইড বিপজ্জনক মাত্রায় রয়েছে। বাসিন্দারা কী ভাবে পানীয় জল সংগ্রহ করেন তাও খোঁজ নিয়ে দেখেন। এরপর মন্ত্রী ওই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। মন্ত্রী একই সঙ্গে জেলায় ১০০ দিনের কাজ নিয়েও খোঁজ নেন। প্রশাসন তাঁর হাতে কাজের রিপোর্ট জমা দেন। এক আধিকারিক জানান, এই জেলায় ১০০ দিনের প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত গড়ে ২৮ দিন কাজ হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচন, অতি বৃষ্টি ও চাষাবাদের জন্য ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ কম হয়েছে। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী ১০০ দিনের কাজে আরও গতি আনার জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেন। ১০০ দিনের কাজের নিয়ম হল কাজ করার ১৫ দিনের মধ্যে মজুরি দিতে হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগ, “১০০ দিনের কাজ করে পাঁচ মাস পরেও অনেকে মজুরি পান না।”
দুপুরে তিনি শুশুনিয়ায় যান। সেখানে পাহাড়ের আদূরে ১০০দিনের প্রকল্পে শ্রমিকরা পুকুর সংস্কারের কাজ করছিলেন। মন্ত্রী সেখানে যান। তিনি শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। জানতে চান, মজুরি ঠিক মতো তাঁরা পাচ্ছেন কি না। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা রয়েছে কি না তা জানতে চান। শ্রমিক দূর্গাদাস মাহালি মন্ত্রীকে জানান, ঠিক সময়েই বেতন পাচ্ছেন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও তাঁর রয়েছে। মন্ত্রীর কাছে তাঁর আর্জি, “কাজ করে ১৩০ টাকা পাওয়া যায়। বাজার মূল্য বেড়ে গিয়েছে। মজুরি আরও বাড়ালে ভাল হয়।”
মাওবাদী উপদ্রুত এলাকা বলে চিহ্নিত এই জেলায় এ বার থেকে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য আরও অর্থ কেন্দ্র সরকার দেবে বলে জয়রাম রমেশ জানান। তিনি বলেন, “পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জঙ্গলমহলে গত বছর ৩০ কোটি টাকা রাস্তা, সেচ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র প্রভৃতি গড়ে তোলার জন্য দেওয়া হয়েছিল। এ বার থেকে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলাকেও বছরে ৩০ কোটি টাকা করে দেওয়া হবে।” জেলার অনেক বিডিও’র বয়েস কম। তাঁদের দেখে উল্লসিত জয়রাম বলেন, “আপনারা অনেকেই কম বয়েসি। এরকম সচরাচর দেখা যায় না। আপনারা ভাল করে কাজ করুন।” পঞ্চায়েতের উন্নয়ন মূলক কাজেও গতি আনার জন্য মন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ওই জেলার ১৯০টি পঞ্চায়েতে এক জন করে ডেভালপমেন্ট অফিসার ও জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করতে হবে। তাহলে উন্নয়নের কাজ আরও ভাল হবে।” মন্ত্রী জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে এই জেলায় বিপিএল-সমীক্ষার কাজ শুরু করা হবে।
পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শুশুনিয়া পাহাড় ও বিষ্ণুপুর রাসমঞ্চ ঘুরে দেখেন। তারপরে পুরুলিয়ায় রওনা দেন। রাতে তিনি জেলা পরিষদের সভাকক্ষে প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ বুধবার তাঁর বলরামপুরে যাওয়ার কথা রয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.