পাথরপ্রতিমা আনন্দলাল আদর্শ বিদ্যালয় |
প্রতিষ্ঠা-১৯৬১।
ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা -২০১৭ জন।
শিক্ষক-শিক্ষিকা ২৯ জন।
পার্শ্বশিক্ষক-শিক্ষিকা ৪ জন।
লাইব্রেরিয়ান ১ জন। শিক্ষাকর্মী ৫ জন।
২০১১ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৪৬ জন।
উত্তীর্ণ হয়েছেন ১৩০ জন।
৬০ শতাংশের উপরে নম্বর পয়েছেন ৩৫ জন।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন ২৮২ জন।
উত্তীর্ণ হন ২৩২ জন। ৬০ শতাংশে উপরে নম্বর পয়েছেন ৬৭ জন।
|
|
|
লক্ষণচন্দ্র মাইতি
(প্রধান শিক্ষক) |
|
চাই প্রশাসনের একটু সহযোগিতা |
সুন্দরবন অঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকায় নদী-জঙ্গল বেষ্টিত এই এলাকায় আমাদের স্কুল। ৫০ বছর আগে যখন স্কুলের প্রতিষ্ঠা হয় তখন গুটিকয় ছাত্রছাত্রী নিয়ে এই স্কুল যে ৫০ বছর পেরিয়ে যাবে তা কেউ ভাবতে পারেননি। কিন্তু আজ তা বাস্তব। সুন্দরবন এলাকার দু’হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রী নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা আনন্দলাল আদর্শ বিদ্যালয় এখন সুবর্ণজয়ন্তী পালনের দোরগোড়ায়। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য সকলের কাছেই তার আমন্ত্রণ রইল। বহু মানুষের শ্রমে, সম্পদে, শিক্ষার প্রতি অনুরাগে প্রয়াত আনন্দলাল মাইতির পরিবারবর্গের দান করা জমিতে গড়ে উঠেছে এই বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের চারপাশের পরিবেশ এখানকার ছাত্রছাত্রীদের মৌলিক চিন্তাধারার বিকাশে নিঃসন্দেহে একটা বড় ভূমিকা পালন করে। নিজেকে গড়ে তুলতে পুথিগত পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের সৃজনশীল ভাবনা-চিন্তার বিকাশের জন্য রয়েছে বিদ্যালয়ের সাহিত্য পত্রিকা ‘ভোরের আলো’। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক বিকাশের জন্য নৃত্য, সঙ্গীত, আলোচনাচক্র, বিতর্কসভা ক্যুইজ প্রভৃতির নিয়মিত আয়োজন করা হয়। দূরদর্শনে ক্যুইজ প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন সেমিনার ও খেলাধুলায় স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা তাদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছে। পেয়েছে বিজয়ীর সম্মান। |
স্কুলের প্রাক্তন বহু কৃতী ছাত্রছাত্রী আজ দেশে-বিদেশে প্রতিষ্ঠিত। তবে স্কুল আজ ৫০ বছর অতিক্রম করার মুহূর্তে ছাত্রচাত্রীদের স্বার্থে কিছু বিষয় তুলে ধরা প্রয়োজন। স্কুলের অন্যতম প্রধান সমস্যা অনুন্নত পরিকাঠামো। জেলার প্রত্যন্ত এলাকার এই স্কুলে প্রতিনিয়ত পড়ুয়াকর সংখ্যা বেড়ে চললেও সেই অনুপাতে ক্লাসঘরের সংখ্যা বাড়েনি। আজও বহু ছাত্রছাত্রীকে ক্লাসের বাইরে দাঁড়িয়ে ক্লাস করতে হয়। নেই বিজ্ঞানসম্মত শৌচালয়, পানীয় জলের উপযুক্ত সরবরাহ। ছাত্রছাত্রীর তুলনায় প্রয়োজনীয় শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব রয়েছে। অভাব রয়েছে শিক্ষাকর্মীর। কম্পিউটার শিক্ষার জন্য নেই প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো। এ ছাড়া দীর্ঘদিনের আর একটি সমস্যা হল বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথের সামনে বেশ কিছু দোকনঘর। যা স্কুলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা তৈরি করছে। প্রশাসনের সর্বস্তরে জানিয়েও কোনও সুফল পাওয়া যায়নি। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে সব সমস্যার বিষয়ে প্রশাসন তৎপর হলে উপকৃত হবে ছাত্রছাত্রীরাই।
|
আমার চোখে |
|
সৌমেন মাইতি
(ক্লাস টেন-এর ফার্স্ট বয়) |
|
৬ বছর আগে এই স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম। ভর্তির দিন কয়েক আগে থেকে প্রচণ্ড উত্তেজনা ছিল। নতুন স্কুল কেমন হবে? কেমন সহপাঠী পাব? শিক্ষক-শিক্ষিকারা কি কুব রাগী ইত্যাদি নানা প্রশ্ন জেগেছিল মনে। এখন সে সব ভেবে খুব লজ্জা পাই। কারণ স্কুলের প্রথম দিন থেকেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রচুর সাহায্য পেয়েছি। পড়াশোনার পাশাপাশি সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা, খেলাধুলা, বিভিন্ন সেমিমারে অংশ নেওয়া ইত্যাদিতে স্কুল কর্তৃপক্ষের উৎসাহ আমাদেরও উৎসাহিত করে। তবে বিদ্যালয়ে পড়াশানার মান আরও উন্নত করার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। যা আমরা প্রতিপদে অনুভব করি। পড়ুয়াদের তুলনায় কম সংখ্যক ক্লাসঘর, শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাবে মাঝেমধ্যে বড়ই অসুবিধায় পড়তে হয়। বর্তমানে শিক্ষার অন্যতম প্রধান সঙ্গী কম্পিউটার। কিন্তু বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হন তাহলে ছাত্রছাত্রীদের প্রভূত উপকার হয়। তবে এখন স্কুলের সুবর্ণজয়ন্তীর কথা ভেবে খুব আনন্দ হচ্ছে। উৎসবে প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে জেনে ভাল লাগছে।
|