সচিন তেন্ডুলকর তাঁর সবথেকে প্রিয় প্রাক্তন ওপেনিং পার্টনার হতে পারেন। ক্রিকেট ইতিহাসের সবথেকে সফল ব্যাটসম্যান হতে পারেন। কিন্তু কার্যকারিতার দিক থেকে দেখতে গেলে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সবার আগে রাখবেন যে ব্যাটসম্যানকে তাঁর নাম সচিন তেন্ডুলকর নয়। তিনি জাক কালিস। অ্যাডিলেড টেস্টের প্রথম দিন ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে সৌরভ এমন কথাই বলেছেন।
বিশ্বের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে রিকি পন্টিং যখন তেরো হাজার টেস্ট রান পূর্ণ করেন, তখন কমেন্ট্রি বক্সে সৌরভকে সেরা ব্যাটসম্যানদের নিয়ে আলোচনায় টেনে আনেন ইয়ান চ্যাপেল। সৌরভ বলেন, “কালিস অসাধারণ প্লেয়ার। টেস্টে ওর ১২,০০০ রান, ২৫০ উইকেট। ওয়ান ডে-তে ১০,০০০ রান, ২০০ উইকেট। ওকে সেরা না বলে উপায় নেই।” প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক দ্রুত যোগ করেন, “আমি এ ভাবে বলতে চাই যে, কার্যকারিতার দিক থেকে দেখতে গেলে কালিস এক নম্বরে। যেমন ব্যাটিং করে, তেমন বোলিং। আর ও এখনও সেরা ফর্মে চালিয়ে যাচ্ছে।” ইয়ান চ্যাপেল এ বার আরও সরাসরি জিজ্ঞেস করলেন সচিন, দ্রাবিড়, পন্টিং এবং কালিস। চার জনের মধ্যে তুমি সবার সেরা কাকে বাছবে? সৌরভ বলে দেন, “জাক কালিসকে এক নম্বর বাছব। দ্বিতীয় বার ভাবার ব্যাপারই নেই। তার পর সচিন। তার পর দ্রাবিড়। চার নম্বরে পন্টিং।”
টেস্ট ক্রিকেটে রানের দিক থেকে প্রথম চার ব্যাটসম্যান এঁরা। এবং আশ্চর্যের হচ্ছে, এর মধ্যে শুধু কালিসেরই তেরো হাজার রান হয়নি এখনও। টেস্টে তাঁর এখন পর্যন্ত সংগ্রহ ১২,২৬০ রান। কিন্তু সৌরভ বার বার জোর দিলেন কালিসের অলরাউন্ড দক্ষতার ওপর। এ-ও বললেন যে, কালিস এত রান করেছেন কারণ ওপরের দিকে ব্যাট করেন। “পাঁচ বা ছ’নম্বরে ব্যাট করলে অত রান করা সম্ভব নয়। পাঁচে খেললে তা-ও পারতে পারেন। ছ’নম্বরে কোনও সম্ভাবনা নেই। ছ’নম্বরে ব্যাট করা মানে আপনাকে টেল-এন্ডারদের নিয়ে ব্যাট করতে হবে।” তবে কালিসকে সেরা বাছলেও সৌরভ বলেন, চার জনেই অসাধারণ প্লেয়ার। এমনও বলেন যে, সচিনের রেকর্ড ভাঙা খুবই কঠিন হবে।
এ দিকে, তেরো হাজার টেস্ট রান পূর্ণ করে রিকি পন্টিং জানিয়ে দিয়েছেন, অবসরের কোনও ভাবনাই তাঁর মধ্যে নেই। এ দিন টেস্টে তাঁর ৪১তম সেঞ্চুরি পাওয়ার পর তাঁর সেলিব্রেশনের ভঙ্গিমা দেখে কারও কারও মনে হয়েছিল, হয়তো আজই অবসরের কথা জানিয়ে দেবেন তিনি। যার জন্য দিনের খেলা শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে আসতে প্রথমেই তাঁকে এ নিয়ে জিজ্ঞেস করা হয়। পন্টিং হেসে ওঠেন, “আমি কী করে বুঝব যে, আজ এখানে এসে প্রথম প্রশ্নটা অবসর নিয়ে শুনতে হবে!” এর পর তিনি যোগ করেন, “ওটা সেঞ্চুরির সেলিব্রেশন ছিল, যেটা আমি সেঞ্চুরি পেলে প্রায়ই করে থাকি। আমি এই টেস্টের শেষে অন্তত অবসর নিচ্ছি না।” তেরো হাজার রানের মাইলস্টোন নিয়ে পন্টিং বলেন, “ব্যাপারটা কখনওই তেরো হাজার বা চোদ্দো হাজার রান করা ছিল না। আসল হচ্ছে, দলের দরকারের সময় আমি কাজে আসতে পারলাম কি না। টেস্ট ম্যাচ জেতা, অস্ট্রেলিয়াকে জেতানোটাই আমাকে এখনও সবচেয়ে বেশি তাতায়।” |