পুলিশের চোখে ‘ধুলো’ দিয়ে ১৪৪ ধারা ভেঙে বিকাশভবনে ঢুকে পড়ল বিক্ষোভকারীদের একটি দল। মঙ্গলবার দুপুরে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি সংগঠনের কিছু সদস্য সরাসরি পৌঁছে যান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দফতরের সামনে। দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখানোর পরে বেরিয়ে এসে বিকাশভবনের সামনে স্বেচ্ছায় গ্রেফতার হন তাঁরা। নিজেদের সংগঠনের ব্যানার ও ফেস্টুন পুলিশের প্রিজন ভ্যানে ঝুলিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনায় ৮৮ জনকে গ্রেফতার করে পরে জামিনে মুক্তি দেয় পুলিশ।
দিন কয়েক আগেই সল্টলেকে কমিশনারেট চালু হয়েছে। কিন্তু পুলিশি পরিকাঠামোর যে এখনও উন্নতি হয়নি, কার্যত তা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এই ঘটনা। বিধাননগরের নতুন ডি সি (সদর) সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশি নজরদারি থাকা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা কী ভাবে ১৪৪ ধারা ভেঙে বিকাশভবনে ঢুকে পড়লেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে কমিশনারেট নতুন তৈরি হয়েছে। আমাদের নতুন ফোর্স নিয়োগ হচ্ছে। পুলিশের যে অভাব বিধাননগরে রয়েছে, ধীরে ধীরে তা কেটে যাবে।”
|
আগামী ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বিকাশভবন এবং আশপাশের এলাকায় পরীক্ষামূলক ভাবে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বিকাশভবনে লাগাতার বিভিন্ন সংগঠনের বিক্ষোভের জেরে কাজের পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানান বিধাননগরের বিভিন্ন সরকারি দফতরের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকেরা। সমস্যার সমাধানে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই বিকাশভবন চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ফলে বিকাশভবনের অনেক আগেই ময়ূখভবনের সামনে ড্রপ গেট ফেলে পুলিশ নজরদারি চালায়। যাতে দলবদ্ধ হয়ে কেউ ঢুকতে না পারে ওই চত্বরে।
প্রশাসনের নজর এড়িয়ে এ দিন ‘কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যেরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বিকাশভবনে ঢোকেন। অনেকে ময়ূখভবনের সামনে দিয়ে সাধারণ অফিসযাত্রীর মতো কোনও ব্যানার ফেস্টুন ছাড়াই আসেন বিকাশভবনে। পরে পাঁচতলায় শিক্ষামন্ত্রীর ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে তাঁরা স্লোগান দিতে শুরু করলে তা সামলাতে কার্যত ব্যর্থ হন কতর্ব্যরত পুলিশকর্মীরা। মন্ত্রী অবশ্য ঘরে ছিলেন না। পরে বিধাননগরের দু’টি থানা থেকে পুলিশবাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
ওই শিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ বলেন, “গত আট-দশ মাস ধরে আমরা বেতন পাচ্ছি না। কলেজ ফান্ড থেকে পাঁচশো-হাজার টাকা করে আমাদের দেওয়া হচ্ছে। ২০১০ সালে সরকার ঘোষণা করেছিল আমাদের সরকারি স্কেলে বেতন দেওয়া হবে। সেই দাবি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে এসেছিলাম। কিন্তু বিকাশভবনে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। এটি আমাদের ঘোষিত কর্মসূচি ছিল।” |