অসময়ের বৃষ্টি এ বারের সরস্বতী পুজোর আগে ফুলের দাম অনেকটাই বাড়িয়ে দিল।
এ বছর সরস্বতী পুজোর আগে গাঁদা, দোপাটি বা চেরি ফুলের দাম অন্যান্য বারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। তাই মল্লিকঘাট ফুলবাজারে টাটকা গাঁদা-দোপাটি কিনতে গিয়ে যথেষ্টই নাকাল হতে হচ্ছে ক্রেতাদের। চাহিদা অনুযায়ী ভাল ফুলের জোগান নেই। এর কারণ হিসেবে মল্লিকঘাট ফুলবাজারের ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এ বছর শীতের কয়েক দফা বৃষ্টিতে ফুলের পাপড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। ফলে কিছু দিনের মধ্যেই পাপড়িতে কালো দাগ চলে আসছে। অনেক ফুল ফেলে দিতে হচ্ছে। কাজেই ফুলের জোগান কম আর দামও আকাশ-ছোঁয়া। |
সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বললেন, ‘‘পৌষ মাসে গাঁদার যা দাম ছিল, মাঘে বেড়েছে কয়েক গুণ। সরস্বতী পুজোর জন্য ফুলের চাহিদা বেশি, তার উপরে বিয়ের মরসুম। একশোটা ফুলের মধ্যে দশটার পাপড়ি খারাপ হওয়ায় ভাল ফুল মিলছেই না। গাঁদা, দোপাটি, রজনীগন্ধা ও চেরি, যেগুলো সরস্বতী পুজোয় লাগে, সেগুলোরই মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।’’ ফুলচাষিরা জানাচ্ছেন, পৌষে যেখানে গাঁদার দাম ছিল ৫ থেকে ৮ টাকার মধ্যে, এখন তা হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। চন্দ্রমল্লিকার ডজন যেখানে ছিল ১০ টাকা, এখন তা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এক কেজি রজনীগন্ধার দাম ২০০ থেকে ২২০ টাকা। সরস্বতী পুজোয় ফুলের দাম একটু বেশি থাকে তবে এতটা চড়া থাকে না, জানাচ্ছেন ফুল ব্যবসায়ীরা।
পূর্ব মেদিনীপুরের ফুলচাষি অঞ্জন মাইতি মল্লিকঘাট বাজারে ফুল বেচতে আসেন। তাঁর কথায়, ‘‘শীতের বৃষ্টিতে গাঁদার পাপড়িতে দাগ ধরায় অনেক ফুল ফেলে দিতে হয়েছে। সরস্বতী পুজোর সকালে বা আগের দিন বিকেলে দাম আরও বাড়তে পারে।’’ আর এক চাষি গৌরীশঙ্কর ঘাঁটা বলেন, ‘‘এ রাজ্যে রজনীগন্ধার এতই ক্ষতি হয়েছে যে মল্লিকঘাটে বেঙ্গালুরুর রজনীগন্ধা বিকোচ্ছে, যার স্থায়িত্ব কম।’’
গৌরীশঙ্করবাবুদের সঙ্গে একমত পশ্চিমবঙ্গ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন নিগমের এক্সপোর্ট এগ্জিকিউটিভ শিবাজি রায়। তিনি বলেন, ‘‘অসময়ের বৃষ্টিতে এক বিশেষ ধরনের ছত্রাক ফুলের পাপড়িকে নষ্ট করছে। ফলে ফুলের পাপড়ি কালো হয়ে যাচ্ছে। অন্য দিকে, নিচু জমিতে রজনীগন্ধার গোড়ায় জল জমে ফুল পচে যাচ্ছে। তাই এই সরস্বতী পুজো ও বিয়ের মরসুমে চাহিদা অনুযায়ী ভাল ফুল পেতে গেলে আমাদের ভিন রাজ্যের ফুলের উপরেও কিছুটা নির্ভর করতে হবে।’’ |