অভিন্ন কার পাস নিয়ে ট্রাকচালকদের একাংশের আপত্তিতে পেট্রাপোলে ব্যাহত সীমান্ত বাণিজ্য মঙ্গলবারেও স্বাভাবিক হয়নি।
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যে গতি আনতে গত শনিবার বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে সঙ্গে নিয়ে পেট্রাপোলে এক অনুষ্ঠানে অভিন্ন ‘কার পাস’ ব্যবস্থার সূচনা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। তবে পরদিনই তা নিয়ে আপত্তি তোলেন ট্রাকচালকদের একাংশ। এর ফলে কাযর্ত বন্ধ ছিল সীমান্ত বাণিজ্য। সমস্যা মেটাতে পেট্রাপোল শুল্ক দফতরের সহকারী কমিশনার (কার্গো) পদ্মশীল জুমলে বাংলাদেশ শুল্ক দফতরের আধিকারিক এবং ক্লিয়ারিং-ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট ও ট্রাকচালকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনায় বসেন। তার পরে ওইদিনই বিকেলের পর মাত্র চারটি ট্রাক পণ্য নিয়ে বেনাপোলে যায়। তবে বাংলাদেশ থেকে কোনও ট্রাক আসেনি। কারপাস নিয়ে আপত্তিতে ট্রাকচালকদের বক্তব্য ছিল, তাঁরা নিরক্ষর। তাই কার পাস সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র তাঁদের পক্ষে করা সম্ভব নয়। এর পরে ওই সমস্যা মিটলেও সোমবার মাত্র ৪৬টি ট্রাক ওপারে যায়। বাংলাদেশ থেকে আসে মাত্র ৮০টি ট্রাক। কিন্তু তারপরেও দেখা দিয়েছে সমস্যা। শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেনাপোলে ঢোকার মুখে বাংলাদেশ শুল্ক দফতরের অফিসাররা ভারতীয় ট্রাক পরীক্ষা করছেন। এক জন্য সময় অনেক বেশি লাগছে। তা ছাড়া শুল্ক দফতরের অপরাধ দমন শাখায় (প্রিভেন্টিভ) পর্যাপ্ত সংখ্যক ইনস্পেক্টর নেই। তার জেরেই সমস্যা হচ্ছে। জুমলে বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে বাংলাদেশের বেনাপোলের শুল্ক দফতরের এসি-র সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ঠিক হয়েছে তাঁরা গেটে ট্রাক পরীক্ষা করবেন না। পরীক্ষা করার প্রয়োজন হলে বেনাপোলে গোডাউনে গিয়ে ট্রাক পরীক্ষা করবেন।”
পেট্রাপোলে শুল্ক দফতরের পক্ষ থেকে নতুন কার পাস ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যার কথা কমিশনারকে জানানো হয়েছে। নতুন কার পাস ব্যবস্থা নিয়ে আর একটি সমস্যা হল এই ব্যবস্থায় আগের থেকে ছাপানো সিরিয়াল নম্বর রয়েছে। এর ফলে ট্রাকের গতি কমছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “নতুন ব্যবস্থায় কিছু জিনিস সংশোধন বা সংযোজন না করলে পণ্য রফতানি কমে যাবে।” শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্লিয়ারিং এজেন্টদের দাবি মেনে নতুন ব্যবস্থায় কিছু সংশোধন করা হচ্ছে। প্রি-প্রিন্টেড সিরিয়াল নম্বরের বদলে যে ট্রাক আগে আসবে, তার সিরিয়াল লিখে দেবেন শুল্ক অফিসাররা।
জুমলে বলেন, “এখন পেট্রাপোলে যে ছ’জন ইনস্পেক্টর রয়েছেন তাঁরা রোটেশন পদ্ধতিতে ডিউটি করেন। যা পর্যাপ্ত নয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আরও ইনস্পেক্টর চাওয়া হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।” |