একাধিক খুন ও নাশকতার মামলায় অভিযুক্ত এক ‘প্রাক্তন’ মাওবাদীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার ভোরে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার খোকরা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম মহম্মদ খালেক ওরফে ছোটা খোকন। তিনি মাওবাদী নেতা বিকাশের ঘনিষ্ঠ বলে পুলিশের দাবি। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “বীরভূমের দুবরাজপুর থানা দু’টি খুনে অভিযুক্ত মহম্মদ খালেককে গ্রেফতারের নথি পাঠিয়েছিল। সেই অনুযায়ী তল্লাশি চালিয়ে মহম্মদ খালেককে গ্রেফতার করে বীরভূম পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অনেকদিন আগে মহম্মদ খালেক মাওবাদীদের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ইদানীং মাওবাদীদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না।” বীরভূমের পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “রাজনগরের দুই সিপিএম নেতা খুনে অভিযুক্তদের তালিকায় মহম্মদ খালেকের নাম ছিল। সম্প্রতি আমরা জানতে পারি, সে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় আত্মগোপন করে আছে। এর পর ওকে ধরতে মালদহ পুলিশের সাহায্য নেওয়া হয়। জেরার জন্য তাকে নিজেদের হেফাজতে নিতে আদালতে আবেদন জানাব।” ২০০৮-এর ২২ এপ্রিল খুন হন সিপিএমের তাঁতিপাড়া লোকাল কমিটির সদস্য শ্রীদামচন্দ্র দাস। ওই বছর ২২ সেপ্টেম্বর খুন হন সিপিএমের রাজনগর-খয়রাশোল জোনাল কমিটির সদস্য তথা রাজনগর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নন্দলাল মিস্ত্রী। মহিষমদ্দিনী জঙ্গলে তাঁকে খুন করা হয়। দু’জনেই স্কুল শিক্ষক ছিলেন। মহম্মদ খালেক ওরফে ছোটা খোকন বীরভূমের কাঁকরতলা, দুবরাজপুর, খয়রাশোল, রাজনগর এবং বধর্মানের কাঁকসা, পানাগড় এলাকায় ১২ জনের একটি স্কোয়াডে যুক্ত ছিলেন।
মাসখানেক আগে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন ওই স্কোয়াডের এরিয়া কমান্ডান্ট বরুণ দাস। স্কোয়াডের আরও তিন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি সদস্যদের নাম জানতে পারে। এক মহিলা-সহ বাকি ৮ জনের খোঁজে ব্যাপক তল্লাশি শুরু হয়। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে মহম্মদ খালেক বীরভূম থেকে পালিয়ে নিজের বাড়ি মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের খোকরা গ্রামে আত্মগোপন করে। পুলিশের দাবি, ৩-৪ দিন আগেই সে বাড়িতে এসেছিল। মঙ্গলবার ধৃতকে মালদহ আদালতে তোলা হয়। আদালত বীরভূম পুলিশকে ২ দিনের ট্রানজিট পারমিটে ধৃত মাওবাদী নেতাকে মালদহ থেকে বীরভূমে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।
|